শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

নির্বাচন বিচার ও সংস্কারে অন্তবর্তী সরকার ; অভ্যুত্থানের সব পক্ষের ঐক্য দরকার

  • আপলোড তারিখঃ ২৬-০৫-২০২৫ ইং
নির্বাচন বিচার ও সংস্কারে অন্তবর্তী সরকার ; অভ্যুত্থানের সব পক্ষের ঐক্য দরকার

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দেশবাসীর মনে সংস্কারের এক বিপুল আকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তোলে। তারা রাষ্ট্রের সত্যিকার একটি গণতান্ত্রিক রূপান্তর দেখতে চায়, যেখানে নতুন কোনো স্বৈারাচারের উত্থানের সুযোগ থাকবে না, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার বাধাগ্রস্ত হবে না, গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হবে না। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান বিকশিত হওয়ার সুযোগ পাবে। ফ্যাসিস্টরা এসব কিছুকে তছনছ করে দিয়ে রাষ্ট্রকে খোঁড়া-পঙ্গু করে ফেলেছিল; জনগণকে বন্দী করে ফেলেছিল। এই অবস্থার মধ্যে জন-আকাঙ্ক্ষার কারণে নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে রাষ্ট্রক্ষমতায় আনা হয়েছে। জনগণ চায় তিনি যেন রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করতে পারেন। দুঃখজনক হলেও সত্য, তাকে বিভিন্ন মহল থেকে নিরন্তর বাধা দেয়া হয়েছে। যে কারণে তিনি হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি সরে গেলে সংস্কারের যে বিপুল কর্ম চলমান রয়েছে সেটি মুখ থুবড়ে পড়ার পাশাপাশি দেশে চরম অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরির পথ উন্মুক্ত হতে পারত। বাংলাদেশের শত্রুরা এবং পতিত স্বৈরাচারের দোসররা ঠিক সেটিই চাচ্ছে। এ কারণে ড. ইউনূসের ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার খবর প্রকাশ হওয়ার পর সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। সব শ্রেণিপেশা ধর্মবর্ণের মানুষ এতে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। দেশের প্রত্যেকটি কর্নার থেকে ড. ইউনূসের প্রতি জোরালো সমর্থন প্রকাশ পেয়েছে। এ ধরনের অস্থির পরিস্থিতিতে শনিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকার পরিচালনায় বাধাগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন, বিচার ও সংস্কার সমান্তরালভাবে এগিয়ে নেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয় বৈঠকে। একই দিন উপদেষ্টা পরিষদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অন্তর্র্বতী সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের জনপ্রত্যাশা ধারণ করে। তাই তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন কোনো গোষ্ঠী অসম্ভব করে তুললে, সবকিছু জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে, জনগণকে সাথে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। ড. ইউনূস সরকার পরিচালনায় কঠোর হবেন বলে ইঙ্গিত দিচ্ছেন। জনসাধারণও এমনটি চায়, প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করতে তিনি যেন শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেন। শনিবার দেশের প্রধান দলগুলোর শীর্ষনেতারা ড. ইউনূসের সাথে দেখা করেছেন। তারা সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও আস্থার কথা জানিয়েছেন। রোববার সব দলের সাথে তিনি বৈঠকে বসছেন। সেখানেও সবাই ইউনূস সরকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। এ দিকে বাংলাদেশের বন্ধু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ড. ইউনূসের পাশে রয়েছে। তারা বাংলাদেশে চলমান বিচার ও সংস্কার কার্যক্রম সমর্থন করে। জাতিসঙ্গ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন কূটনৈতিক চ্যানেলে তাদের সমর্থনের কথা জানিয়েছে। দেশে-বিদেশে এতটা জোরালো সমর্থন বাংলাদেশের কোনো সরকারের প্রতি আগে কখনো দেখা যায়নি। এ অবস্থায় রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক দলগুলো যদি তাদের দায়িত্ব সঠিক পালন করে তাহলে দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর সহজ হবে। এতে করে শুধু একটি নির্বাচিত সরকার নয়, আশা করা যায় আমরা একটি টেকসই ব্যবস্থাপনাও পাবো। রাষ্ট্র যখন নাজুক অবস্থায়, তখন সরকারের ভেতরের প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়িত্ব পালনে অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে। সরকারকে আন্তরিকভাবে সহায়তা দিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোও জনপ্রত্যাশার মর্যাদা দেবে এটাই সময়ের দাবি।



কমেন্ট বক্স
notebook

বিচারপতির বাসভবন, সুপ্রিমকোর্ট এলাকায় সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা