বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

হাউলী ইউপি অফিসে ‘ওয়ারিশ বাণিজ্য’, জাল সনদে হয়রানির অভিযোগ

চেয়ারম্যান-মেম্বারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ
  • আপলোড তারিখঃ ২১-০৫-২০২৫ ইং
হাউলী ইউপি অফিসে ‘ওয়ারিশ বাণিজ্য’, জাল সনদে হয়রানির অভিযোগ


চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়ন পরিষদে জাল ওয়ারিশ সনদ প্রদান করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে ইউপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও এক সদস্যের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, প্রকৃত ওয়ারিশদের বঞ্চিত করে অন্য একজনকে সুবিধা দিতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ওয়ারিশ সনদ তৈরি করা হয়েছে। এতে হয়রানির শিকার হচ্ছে নিরীহ একটি পরিবার। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার তারিনীপুর গ্রামের মৃত এনাতুল্লাহ’র ছেলে নুর ইসলাম (৬৫) দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর জয়রামপুর (মল্লিকপাড়া) গ্রামের মৃত নুর বক্সের ছেলে রাহেল আলীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে একটি জাল ওয়ারিশ সনদ ইস্যু করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নান পটু। সেই সনদে প্রকৃত ওয়ারিশ মৃত ডুবই মণ্ডলের ছেলে এনাতুল্লাহ’র নাম বাদ দিয়ে মৃত ফকির মণ্ডলের নামে একজন পালিত ছেলেকে ‘ওয়ারিশ’ দেখানো হয়। পরবর্তীতে এই জাল সনদের ভিত্তিতে রাহেল আলীর সন্তানরা চুয়াডাঙ্গা আদালতে একাধিক মিথ্যা মামলা করে। ছয় বছর ধরে নুর ইসলামের পরিবার এসব মামলার জালে পড়ে চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, যদি যথাযথ তদন্ত ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ না হয়, তবে জাল ওয়ারিশ সনদের ভিত্তিতে সাড়ে সাত বিঘা জমি প্রকৃত উত্তরাধিকারী হারিয়ে ফেলবেন। এখনো পর্যন্ত হাউলী ইউনিয়ন পরিষদ প্রকৃত ওয়ারিশদের কোনো সনদ দেয়নি।

প্রতিবাদ জানালে অভিযুক্তরা মারমুখী আচরণ করেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। নুর ইসলাম দাবি করেন, ‘আব্দুল হান্নানের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমার ক্ষমতা আছে, ইচ্ছা হয়েছে তাই করেছি, ভবিষ্যতেও করব। পারলে কিছু করে নিস। বেশি বাড়াবাড়ি করলে ফল ভালো হবে না।’ এতে করে ভুক্তভোগী পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বার যা খুশি তাই করেছেন। কে কার সন্তান, কে কাকে ওয়ারিশ বানিয়েছে তার সঠিক হিসাব নেই। এমনকি এখনো সেসব অনিয়ম ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

তাদের দাবি, বিষয়টি তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ জাল সনদ দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার সাহস না পায়।

এ বিষয়ে ৪ নম্বর ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নান পটু বলেন, ‘আমি কোনো জাল ওয়ারিশ সনদের সুপারিশ করিনি। কেউ আমার স্বাক্ষর দেখাতে পারবে না। আমি এতে জড়িত নই।’ অন্যদিকে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘কিভাবে সনদ দেওয়া হয়েছে না দেখে বলতে পারবো না। কাগজপত্র দেখে জানাতে পারবো।’ এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তিথি মিত্র বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’



কমেন্ট বক্স