বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতার তিন ভাইয়ের দখলে ভৈরব নদী

ম্যুরালের আড়ালে ৫০ বিঘা নদী দখল, নীরব প্রশাসন
  • আপলোড তারিখঃ ২০-০৫-২০২৫ ইং
কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতার তিন ভাইয়ের দখলে ভৈরব নদী

 

ঝিনাইদহে ভৈরব নদীর পাড় দখল করে এক আওয়ামী লীগ নেতা গড়ে তুলেছেন আলিশান সাম্রাজ্য। নিজের নামে কলেজ প্রতিষ্ঠা করেই থেমে থাকেননি, গ্রামের নামও বদলে নিজের নামে করেছেন। নদী দখলকে বৈধতা দিতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ১২৩ ফুট উচ্চতার শেখ মুজিবের ম্যুরাল নির্মাণ করেছিলেন, যা ৫ আগস্টের পর ছাত্র-জনতা গুঁড়িয়ে দেয়। ঘটনাটি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নের ঘোপপাড়া ও সাদিকপুর এলাকায়।


গ্রামবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শমসের ও তার দুই ভাই শফিকুল শমসের এবং তরিকুল শমসের দীর্ঘদিন ধরে নদীর প্রায় ৫০ বিঘা জমি দখল করে রেখেছেন। নদী দখল এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, কৃষকরা নদীতে নামতে পর্যন্ত পারেন না। নদীর পাড় ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে পাকা প্রাচীর, যাতে সাধারণ মানুষ মাছ ধরা কিংবা পানি ব্যবহার করতে না পারে। আওয়ামী পরিবারের ছত্রচ্ছায়ায় বছরের পর বছর এই দখলবাজি চললেও কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বিকার।


সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ঘোপপাড়া ও সাদিকপুর এলাকার নদীর দুই পাড় জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে শস্যক্ষেত। তবে তা কোনো সাধারণ কৃষকের নয়, আওয়ামী পরিবারের দখলে। স্থানীয় কৃষক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘নদীর দুই পাড় পুরোপুরি দখল করা। আমরা নদীতে নামতেও পারি না। ব্রিজের পাশে দেয়াল তুলে দিয়েছে, যেন কৃষকরা একফোঁটা পানিও না পায়। এটা কি স্বাধীন দেশে সম্ভব? তাহলে ৫ আগস্ট কেন হলো?’


স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম সর্দার বলেন, ‘তারা শেখ মুজিবের ম্যুরাল বানিয়ে, কলেজের নাম ব্যবহার করে নদী ও সরকারি জমি দখল করেছে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আবারও দখল শুরু করেছে শফিকুল শমসের। এমনকি সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত জমিও রেহাই পাচ্ছে না। তাদের কবল থেকে।’


ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কেনা জমির নিচে নদীর জায়গা ছিল। সেটি দখল করে তাতে ছাউনিও স্থাপন করেছে শফিকুল। এখন সে আমার জমিতেও প্রাচীর তুলছে। আমি অভিযোগ করলে আদালত ১৪৪ ধারা জারি করেছে, তবু কাজ বন্ধ হয়নি। এটাই কি আইনের শাসন?’ এ বিষয়ে শফিকুল শমসের বলেন, ‘আমরা অস্থায়ী ছাউনি করেছি বসার জন্য, চাইলে ভেঙে দেব।’ তবে তিনি জমি দখলের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি।


কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দেদারুল ইসলাম বলেন, ‘যারা নদীর জমি দখল করে প্রাচীর তুলেছে, তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। ২-১ দিনের মধ্যেই প্রশাসন অ্যাকশনে যাবে।’ ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস বলেন, ‘নদীর জায়গা দখল করে চাষাবাদের সুযোগ নেই। দ্রুত তালিকা তৈরি করে উচ্ছেদের ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ 



কমেন্ট বক্স
notebook

আলমডাঙ্গা ও জীবননগরে গাংনীতে জামায়াতের দায়িত্বশীল সমাবেশ