সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিরাপত্তা ও সংস্কার উদ্যোগে নড়েচড়ে বসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন। দীর্ঘদিন ধরে উদ্যান ঘিরে চলা মাদক, গ্যাং ও অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার সিনেট ভবনে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিল। বৈঠকে উদ্যানকে রমনা পার্কের মতো সুপরিকল্পিত ও নিরাপদ নাগরিক পরিসরে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সাম্যের মৃত্যু নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘সাম্য প্রতিবাদী ছাত্র ছিল। তার মৃত্যু আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে কী ধরনের অপরাধ চলছে। মাদক, গ্যাং, অপরাধী চক্রসহ ৭০ শতাংশ অপরাধ সৃষ্টি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে।’
আসিফ জানান, আজকের সভায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ডিএমপি, গণপূর্ত, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিল এবং সবাই সম্মিলিতভাবে সমাধান খুঁজছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাজু ভাস্কর্যের বিপরীতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। অবৈধ দোকান উচ্ছেদ, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, সিসিটিভি স্থাপন এবং ডিএমপির একটি নতুন পুলিশ বক্স স্থাপন করা হবে। আগামীকাল থেকেই নিয়মিত রেইড পরিচালনা করবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। উদ্যানকে রমনা পার্কের আদলে উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা অব্যাহত থাকবে। শিক্ষার্থীদের দাবি সরকার গুরুত্বসহকারে দেখছে। তিনি শিক্ষার্থীদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানান এবং প্রশাসনকে অপরাধীদের আশ্রয় না দিতে নির্দেশ দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরাপত্তা জোরদারে কাজ করছে। যদিও উদ্যানটি সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় নয়, তবুও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অপরাধে জড়িত কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলেও তাঁকে ছাড় দেওয়া হবে না।
ভবিষ্যতের জন্য একটি তদারকি কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন ঢাবির উপাচার্য, যার নেতৃত্বে থাকবে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এই কমিটিতে থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়, ডিএমপি, সিটি করপোরেশন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, কালীমন্দির কর্তৃপক্ষ ও বাংলা একাডেমির প্রতিনিধিরা। উপাচার্য আরও জানান, আজ থেকেই গণপূর্ত মন্ত্রণালয় মাঠ পরিদর্শন শুরু করেছে।