প্রতিবেদক, তিতুদহ:
এক সময় সার্কাস আর রাজকীয় শোভাযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল হাতি। মেলায় বা জমিদার বাড়ির আঙিনায় দেখা যেত এসব বিশালদেহী প্রাণী। সময় পাল্টেছে, বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী দৃশ্য। এখন হাতি ব্যবহৃত হচ্ছে ভিন্ন উদ্দেশ্যে-চুয়াডাঙ্গায় দেখা গেল এমনই এক চিত্র। গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গার আসমানখালী বাজার এলাকায় একটি হাতি নিয়ে মাহুত ও তার চার সহযোগী সড়কের পাশে ও চলন্ত যানবাহনের সামনে গিয়ে জোরপূর্বক টাকা আদায় করছিল বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি স্থানীয় বন কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন জানতে পেরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘মানবতার জন্য’-এর সহায়তা নেন। পরে বন বিভাগ ও সংগঠনের সদস্যরা হাতিটির অবস্থান নিশ্চিত করতে তৎপরতা শুরু করেন।
একপর্যায়ে গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হাতিটিকে গড়াইটুপি এলাকার আমব্রবতি মেলার মাঠে খুঁজে পান। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি চুয়াডাঙ্গা বন বিভাগকে জানানো হলে স্বল্প সময়ের মধ্যে জীবননগর উপজেলার বন কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম কাজল ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
‘মানবতার জন্য’-এর সভাপতি ও বড় সলুয়া নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক বলেন, ‘হাতিটিকে খুবই রুগ্ন অবস্থায় পাওয়া গেছে। এত অসুস্থ প্রাণী দিয়ে শত শত পথ পাড়ি দিয়ে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করানো হচ্ছে। অনেক সময় এটি চলন্ত গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে, যাত্রীরা ভয়ে অস্থির হয়ে পড়েন-বিশেষ করে শিশুরা আতঙ্কে কাঁদতে থাকে। এমন নৃশংসতা মানবিকতার পরিপন্থী।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাহিন সরকার জানান, মাহুতকে আটক করা হয়েছে এবং হাতিটিকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর ও জীবননগর বন কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করা হয়। হাতিটির প্রকৃত মালিক নারায়ণগঞ্জ জেলার বাসিন্দা লাল চান। অনলাইনে তার দেওয়া লাইসেন্স ও কাগজপত্র যাচাই করে পরে মালিকের অনুপস্থিতিতে মৌখিক মুচলেকার ভিত্তিতে হাতিটিকে ঝিনাইদহ বন বিভাগের অধীনে রাখা হয়। অভিযানকালে বন বিভাগের কর্মচারী, সংগঠনের সদস্য ও গড়াইটুপি গ্রামের স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।