ঝিনাইদহের হাট-বাজারের ইজারা নিয়ে বিপাকে পড়েছে সদর উপজেলা প্রশাসন। সরকারি মূল্য বেশি থাকায় বড় বড় হাটের ইজারা প্রদান সম্ভব হচ্ছে না। এতে প্রায় আড়াই কোটি মূল্যমানের ১৬টি হাট বাজার থেকে দিনে পর দিন প্রশাসন খাস আদায় করতে বাধ্য হচ্ছে।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তর থেকে জানা গেছে, পহেলা বৈশাখ জেলার ১৮টি হাট-বাজার ইজারা প্রদানের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে পেশাদার ইজারাদার টেন্ডারে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। ফলে ইজারা প্রদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ৬ষ্ঠ বারের মতো টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে।

এদিকে দরপত্রে হাটের প্রকৃত মূল্য থেকে অনেক কমমূল্যে দরপত্র জমা পড়ায় সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ইজারা প্রদান সম্ভব হচ্ছে না। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সদর উপজেলার ১৮টি হাটের মধ্যে মাত্র দুটি হাটের ইজারা দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

জেলার সবচেয়ে বড় গরুর হাট সদরের গান্না বাজার ছাড়াও, বয়রাতলা, বাগুটিয়া, কলমনখালী, গোয়ালপাড়া, কাশিমপুর, হাটগোপালপুর, তেঁতুলতলা, বিষয়খালী, বৈডাঙ্গা, চোরকোল, বাজারগোপালপুর, ডুগডুগি, হাজীডাঙ্গা ও ডাকবাংলা হাটে খাস আদায় করা হচ্ছে।

এদিকে ইজারাবিহীন হাট-বাজারে খাস আদায় করতে গিয়ে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের আসল কাজ করতে পারছেন না। ফলে ভূমি উন্নয়ন কর ও নামজারির প্রক্রিয়া চরমভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, প্রতি বৃহস্পতি, রোববার ও বুধবার তাদের খাস আদায়ের জন্য ব্যস্ত থাকতে হয়। ফলে ভূমি অফিসের অন্যান্য কাজ ব্যহত হচ্ছে।

সদরের গান্না বাজারের ইজারাদার মশিউর রহমান জানান, তিনি গান্না বাজারের ইজারা নিয়ে তিন বছর ধরে লোকসান গুনেছেন। প্রতি বছর তার ১৫ লাখ টাকা লস হয়েছে। এ জন্য তিনি এবার ইজারায় অংশগ্রহণ করেননি। সরকারি মূল্য কমানো হলে তিনি টেন্ডারে অংশ নিতেন বরেও তিনি জানান।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাজিয়া আক্তার চৌধুরী জানান, হাটগুলো সরকারি মূল্যে টেন্ডার সম্পন্ন করার জন্য তারা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন ইজারা দেওয়ার জন্য। ৬ষ্ঠ বারের টেন্ডারে দুটি আবেদন পড়েছে বলেও তিনি জানান। ঝিনাইদহ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রথীন্দ্র নাথ রায় জানান, বর্তমান সরকারি মূল্যে হাটগুলো ইজারা প্রদানের জন্য প্রশাসন চেষ্টা চালাচ্ছে। যতদিন ইজারা না হয়, ততদিন হাটের খাস আদায় করে হাটের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা রাখা হবে।