ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে নির্যাতন, হামলাসহ মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এসব তথ্য-উপাত্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযোগের তালিকায় বিটিভির ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পিণ্টু লাল দত্তের নামও রয়েছে। তার বিরুদ্ধে সরকারি দুটি খাত থেকে কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি প্রতিনিধি দল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তদন্ত শুরু করেছেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে পাঠানো তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ আসকারী, অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, সাবেক উপ-উাপচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন, অধ্যাপক ড. শাহীনুর রহমান, ড. মাহবুবুর রহমান, ড. সেলিম তোহা, ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, ড. জাহাঙ্গীর হোসেন, ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ, ড. আনোয়ার হোসেন, ড. মামুনুর রহমান, ড. মাহবুবুল আরফিন, ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, ড. রবিউল হোসেন, শিক্ষক তপন কুমার রায়, এ এইচ এম আক্তারুল ইসলাম, মিয়া মো. রাসিদুজ্জামান, আফরোজা বানু, প্রদীপ কুমার অধিকারী, লিটন বরণ সিকদার, দেবাশীষ শর্মা, হাফিজুল ইসলাম, শাহাজাহান মন্ডল, খন্দকার তৌহিদুল আনাম, সাজ্জাদুর রহমান টিটু, আমজাদ হোসেন, মেহেদী হাসান, কাজী আখতার হোসেন, অরবিন্দ সাহা, শেলীনা নাসরীন, শাহাবুব আলম, মহব্বত হোসেন, ধনঞ্জয় কুমার, মুর্শিদ আলম, কে এম শরফুদ্দিন, নাসিমুজ্জামান, রুহুল আমিন, সঞ্জয় কুমার সরকার, মাজেদুল হক, শহিদুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন, আহসান-উল-আম্বিয়া, জয়শ্রী সেন, তপন কুমার জোদ্দার, শফিকুল ইসলাম, আনোয়ারুল হক, রেজওয়ানুল ইসলাম ও তানিয়া আফরোজ।
এছাড়াও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে দেওয়ান টিপু সুলতান, ওয়ালিদ হাসান মুকুট, মীর জিল্লুর রহমান, মীর মোর্শেদুর রহমান, শেখ মো. জাকির হোসেন, আলমগীর হোসেন খান, শামসুল ইসলাম জোহা, নওয়াব আলী খান, আব্দুস সালাম সেলিম, ইব্রাহীম হোসেন সোনা, মনিরুজ্জামান মোল্লা, আইয়ুব আলী, সোহেল রানা, তবারক হোসেন, চন্দন কুমার দাস, আব্দুল হান্নান, লুবনা শাহনাজ, নাজিম উদ্দিন, ওলিউর রহমান, মনোয়ার হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন, সোহরাওয়ার্দী হোসেন, মিন্টু কুমার বিষ্ণু, আব্দুল আজিজ সরদার, জাহাঙ্গীর আলম, আরিফুল ইসলাম, জে এম ইলিয়াস, শরিফুল ইসলাম, রঞ্জন, সাইফুল ইসলাম, বিপুল আহমেদ, জুবের আল মাসুদ, রবিউল ইসলাম, তারেক মাহমুদ হোসেন, মাসুদ পারভেজ, কবির হোসেন, আহসানুল হক হাসান, রশিদুজ্জামান খান টুটুল, রেজাউল করিম, আসাদুজ্জামান, রবীন্দ্রনাথ, পিন্টু লাল দত্ত, জাহাঙ্গীর আলম, আমানুর রহমান, আবু সিদ্দিক রোকন, আব্দুর রাজ্জাক, সুদেব কুমার বিশ্বাস, জাহিদুল ইসলাম, উকিল উদ্দিন, মোহব্বত হোসেন, আব্দুল জব্বার, হারুন উর রশিদ, সুজল কুমার অধিকারী, গাউছুল আজম, বকুল জোয়ার্দার, শ্রী নারায়ণ চন্দ্র কর্মকার, বদিউজ্জামান, প্রহ্লাদ, মোফাজ্জেল হোসেন, নিখিল কুমার বিশ্বাস, ফরিদ উদ্দিন, বকুল হোসেন, আবু মুসা মোহাম্মদ, আব্রাহাম লিংকন, রুহুল আমিন, আতিয়ার রহমান।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ কেউ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলেও তারা মূলত একটি বিশেষ বাহিনীর চর হিসেবে কাজ করেছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নুরুন নাহার বলেন, ‘আমরা গণবিজ্ঞপ্তিসহ বিভিন্ন দপ্তর ও হলে চিঠি দিয়েছিলাম। সেখানে বেশ কিছু তথ্য, ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে। এতে শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং তৎকালীন সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের অনেকের নাম এসেছে। এসব তথ্য ও ডকুমেন্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে।’