নাম মাত্র কাজ করেই দুটি প্রকল্প শতভাগ সম্পন্ন দেখিয়ে বরাদ্দকৃত প্রকল্পের আড়াই লাখ টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নাসির উদ্দীনের বিরুদ্ধে। প্রকল্পের কাজে তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রশাসন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার যোগসাজশে কাজ না করে টাকা উত্তোলনসহ প্রকল্পের স্থান থেকে ২-৩ লাখ টাকার মাটি বিক্রির টাকা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা বাসিন্দারা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূতে জানা গেছে, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় প্রথম পর্যায়ে মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চুন্নিরআইট হোসেন আলীর জমি হতে নুরুজ্জামানের জমি পর্যন্ত খালের পূর্ব পাশে রাস্তা পুনঃনির্মাণে ১ লাখ ৫০ টাকা, এবং নুরুজ্জামানের জমি হতে শ্রীপুরগামী খালের পূর্ব পাশে রাস্তা সংস্কার সাধারণ উন্নয়ন (টিআর-নগদ ) ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। একই রাস্তা দুটি প্রকল্পে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিলেও দুটি প্রকল্পের নামমাত্র কাজ করে ও রাস্তার মাটি বিক্রি করেছেন ইউপি সদস্য নাসির উদ্দীন।
এলাকাবাসী জানান, খাল কাটার মাটি রাস্তায় ফেলার কারণে রাস্তাটি উচু-নিচু হয়ে যায়। আমরা মাটি নিতে চাইলে নাসির মেম্বার মাটি নিতে দেয়নি। পরে তার কাছ থেকে ১৭০০ টাকা দিয়ে ২ ট্রাক্টর মাটি নিয়েছি মসজিদের কাজের জন্য।
স্থানীয় আশরাফুল, আব্দুর জববার ও কুলসুম বেগম বলেন, আশপাশের লোকদের মাটি নিতে বাধা না দিলে রাস্তা এমনিতেই সমান হয়ে যেতো। কিন্তু মেম্বার কাউকে মাটি নিতে দেয়নি। তিনি মাটি বিক্রি করেছেন। ভেকু দিয়ে কেটে কয়েক শ’ গাড়ি মাটি বিক্রি করেছেন মেম্বার। এমনকি প্রকল্প দেখিয়ে বরাদ্দের টাকা ভাগাভাগি করে নিয়েছে তদারকির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্রকল্প দুটির সভাপতি নাসির উদ্দীন বলেন, কাজ না করলে তো আর পিআইও অফিস ও ইউএনও অফিস আমাকে টাকা দেয়নি? কাজ হয়েছে কিনা তাদের কাছে গিয়ে জানতে চান। বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা জিণ্টু বলেন, রাস্তায় থাকা খাল কাটার মাটি আমিও নাসির মেম্বারের কাছ থেকে কিনে বিভিন্ন স্থানে দিয়েছি। তবে রাস্তা পুনঃনির্মাণ বা রাস্তা সংস্কারের জন্য কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে কি না আমার জানা নাই।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বলেন, আগের পিআইও এবং ইউএনও কেউই নেই। সে কারণে এসব নিয়ে না ঘোটাই ভালো। উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপ দাশ জানান, গত অর্থবছরের প্রকল্পগুলোর বিষয়ে তেমন কিছু আমার জানা নেই। কীভাবে কী হয়েছে, আমার আগের ইউএনও আর আগের উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলতে পারবেন।