ঘূর্ণিঝড় মোখার সংকেত নজর বঙ্গোপসাগরে
- আপলোড তারিখঃ ০৬-০৫-২০২৩ ইং
সমীকরণ প্রতিবেদন:
রোববার থেকে সাগরে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় 'মোখা'র সংকেতের পর আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের নজর এখন বঙ্গোপসাগরে। ঘূর্ণিঝড়টি কোথায় আছড়ে পড়তে পারে তা নিয়ে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না তারা। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অফিস মনে করছে, ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে তেমন পড়বে না। এটি বাংলাদেশ হয়ে মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় মোখা কতটা শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে এবং এর গতিপথ কোনদিকে, তা এখনো ধোঁয়াশা আবৃত। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু না জানালেও, আগামী সপ্তাহের ঘূর্ণিঝড়ের এই আগাম সংকেত থেকে তারা সরে আসছেন না। তারা বলছেন, নিম্নচাপ হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রদূত। নিম্নচাপ তৈরি হলেই তারা ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য গতি ও শক্তি সম্পর্কে পূর্বাভাস দিতে পারবেন। ঝড়ের সতর্কবার্তা অনুযায়ী, ৬ মে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে। এটি ৭ মে পরিণত হবে নিম্নচাপে। এরপর ৮ মে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে এমই উত্তর দিকে সরে যাবে আর শক্তি সঞ্চয় করে রূপ নেবে ঘূর্ণিঝড়ে। এটির অভিমুখ উত্তর দিকেই থাকবে। ঝড়টির নাম আগেই ঠিক করা হয়েছে 'মোখা'। ঝড়ের বিষয়ে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তা দেওয়ার পর আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ভারতের আবহাওয়া অফিস কয়েকটি বিদেশি মডেলের সূত্রে জানিয়েছে, মোখা মিয়ানমার বা মিয়ানমার সংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের ওয়েবসাইটে ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত পাতায় এ মডেলগুলোর পূর্বাভাস বিস্তারিত উলেস্নখ করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত এমনটি হলে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে খুব একটা পড়বে না বলে ধারণা তাদের। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে শনিবার লঘুচাপ ও রোববার নিম্নচাপ তৈরি হবে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঘূর্ণিঝড় অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত যে কোনো জায়গায় আছড়ে পড়তে পারে। আপাতত বঙ্গোপসাগরের পরিস্থিতির ওপর সারাক্ষণ বিশেষ নজর রাখছে আবহাওয়া অফিস। ভারতের আবহাওয়ার পূর্বাভাস মডেলে অনুযায়ী মোখা অত্যন্ত তীব্র ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। অধিকাংশ মডেল অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পর বুধবার পর্যন্ত এটি উত্তর-পশ্চিম অভিমুখে এগোবে। তারপর তা বাঁক নেবে উত্তর-পূর্ব দিকে। একটি মডেলে জানানো হয়েছে, মোখা দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর থেকে তামিলনাড়ু উপকূলের দিকে এগিয়ে শেষ পর্যন্ত আরব সাগরে যেতে পারে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়টি কোনদিকে যাবে সেটা বায়ুমন্ডলের একাধিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। সেই পরিস্থিতিগুলোর পরিবর্তনও হয়। তাই গতিপথ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে সময় লাগে। এদিকে কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, আবহাওয়ার ইউরোপিয়ান মডেল অনুসারে ১২ মে দুপুর ১২টার পর কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। তবে আবহাওয়ার আমেরিকা মডেল বলছে, ১৩ মে দুপুর ১২টার পর উত্তর চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও ভোলা জেলার উপকূল দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়ার পূর্বাভাস মডেলের পূর্বাভাসের মধ্যে পার্থক্য কমে এসেছে। এ সময় সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় 'মোখা'র স্থলভাগে আঘাতের সময় প্রায় ১ দিন এগিয়েছে। তবে দুটি মডেলের মধ্যে স্থলভাগে আঘাতের সময়ের পার্থক্য ১৮ ঘণ্টা রয়েছে, এখন যা প্রতিদিন কমতে থাকবে।
কমেন্ট বক্স