টান টান উত্তেজনা ও প্রার্থীদের হৃদস্পন্দনের মধ্যদিয়ে ঝিনাইদহের শৈলকুপা ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ২০টি ইউনিয়নে আজ বুধবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা গড়ে তোলা হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে শৈলকুপা ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ২০টি ইউনিয়ন। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মুজিবর রহমান এক পরিপত্রে নির্বাচন কমিশনের স্টিকার ব্যতীত রাস্তা-ঘাটে মোটরসাইকেল, পিকআপ ও ট্রাক চলাচল নিষিদ্ধ করে সার্কুলার জারি করেছেন।

বিশেষ করে পঞ্চম ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শৈলকুপায় একাধিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত, ভাঙচুর, নৌকায় আগুন ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। হরিণাকুণ্ডুর চাঁদপুর ও রঘুনাথপুর ইউনিয়নেও হামলার ঘটনা ঘটে। এসব দিক বিবেচনা করে দুটি উপজেলায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে থেকেই নিরাপত্তা কর্মীরা ভোট কেন্দ্রের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। ব্যালট বাক্স ব্যতীত সকল প্রকার নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে গেছে। আজ সকালে ব্যালট ও বাক্স কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হবে। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর সঙ্গে থাকবে স্ট্রাইকিং ফোর্স। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃতো ভ্রাম্যমাণ আদালত টহল প্রদান করবেন।

ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আ. ছালেক জানান, ইউনিয়ন পরিষদ ভোটে হরিণাকুণ্ডুর ৮টি ইউনিয়নে ৮২টি ও শৈলকুপার ১২টি ইউনিয়নে ১১২টি ভোট কেন্দ্রে রয়েছে। শৈলকুপা উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থী বিনা ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ৯টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া ১২ ইউনিয়নে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১২৩ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩২৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। শৈলকুপায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৩২ হাজার ৩৮ জন। এর মধ্যে পুরষ ভোটার ১ লাখ ১৬ হাজার ২৬৭ ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৭১।

ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন অফিস থেকে জানানো হয়েছে, শৈলকুপার উমেদপুর, হাকিমপুর ও ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের ২৭টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। এদিকে, হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে কেন্দ্রে রয়েছে ৮২টি। সেখানে চেয়ারম্যানের ৮টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩৭ জন প্রার্থী। এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৮৫ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ২৬৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৮টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪১০। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭০ হাজার ২১১ ও মহিলা ভোটার ৬৯ হাজার ১৯৯। সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও সর্বশেষ বেসরকারি জনমত জরিপের তথ্যমতে, প্রতিটি ইউনিয়নে নৌকা, বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। কোনো কোনো ইউনিয়নে নৌকা প্রার্থী তৃতীয় স্থানে রয়েছে। সব মিলিয়ে এবারের নির্বাচনী মাঠ ভোট যুদ্ধের উত্তাপ ছড়াবে এমনটি মনে করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।