মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

হরিণাকুণ্ডুতে নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, আহত ৪৬

  • আপলোড তারিখঃ ১৩-১২-২০২১ ইং
হরিণাকুণ্ডুতে নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, আহত ৪৬
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার শ্রীফলতলা গ্রামের লস্কার পাড়ায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ৪৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ১৬ জনকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল ও ২৬ জনকে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যান। গতকাল রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, হরিণাকুণ্ডুর রঘুনাথপুর ইউনয়নে আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকার প্রার্থী আব্দুল কাদের মাস্টার ও বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বশির উদ্দীন সমর্থিত দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ও এলাকায় পুলিশ টহল জোরদার করে। নৌকার প্রার্থী আব্দুল কাদের মাস্টার ও রেজাউলের সমর্থকদের মধ্যে আহতরা হলেন- শ্রীফলতলা গ্রামের আইরণ নেছা, ফাহিমা খাতুন, খোদেজা বেগম, আইয়ূব হোসন, তাজুল ইসলাম, তারেক, মিল্টন, জালাল হোসেন, তক্কেল হোসেন, মনিরুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, রাকিবুল, জামাল মুন্তাজ, মেহেদী হাসান, দাদুল মিয়া, বিশারত আলী, আলামিন ও আব্দুল আজিজ। সাইদুল মেম্বার ও বশির গ্রুপের আহতরা হলেন- নজরুল ইসলাম, শিপুল, আব্দুল লতিফ, খায়রুল ইসলাম, আবু সাইদ, সেলিম (১), মসলেম উদ্দীন, দিদার হোসেন, সাগর, কামরুল, সেলিম, বেগম খাতুন, শাহিনুল ইসলাম, হাসেম আলীম, জমির উদ্দীন ও নুরুল ইসলাম। হরিণাকুণ্ডু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিম মোল্লা জানান, আগামী ৫ জানুয়ারি ৫ম ধাপের ইউপি নির্বাচনে রঘুনাথপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীফলতলা গ্রামে সাইদুল ইসলাম মেম্বার ও রেজাউল ইসলাম মেম্বার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই দুই মেম্বার আবার নৌকার প্রার্থী আব্দুল কাদের মাস্টার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বশির উদ্দীনের সমর্থক। গতকাল রোববার সকালে শ্রীফলতলা গ্রামের একটি চায়ের দোকানে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সাইদুলের সমর্থক জমির লস্করকে মারধর করে নৌকা প্রার্থীর সমর্থক রেজাউল ও আজিজ লস্কার। এ ঘটনার জের ধরে উভয় পক্ষের লোকজন রামদা, ঢাল, ভেলা, লাঠি সোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে গোটা গ্রাম রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৪৬ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শ্রীফলতলা গ্রামে সাইদুল ইসলাম মেম্বার অভিযোগ করেন, গত শনিবার সন্ধ্যার দিকে বর্তমান চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান রাসেল ও তাঁর চাচাতো ভাই রওশন আলী নির্বাচনী এক সমাবেশে স্বতন্ত্র প্রার্থী বশিরের লোকজনকে যেখানে পাওয়া যাবে, সেখানেই গণধোলাই দেওয়ার উস্কানি দিয়ে যান। এরপরই তাঁদের সমর্থক আজিজ লস্কার চায়ের দোকানে জামিরকে মারধর করেন। এদিকে, নৌকার প্রার্থী আব্দুল কাদের মাস্টারের ছেলে বর্তমান চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান রাসেল অভিযোগ করেন, বিনা উস্কানিতে বিদ্রোহী প্রার্থী বশিরের লোকজন তাঁর সমর্থকদের মারধর করেন। এ ঘটনার জন্য সাইদুল মেম্বার ও বশির দায়ী বলেও রাসেল জানান। এদিকে অভিযোগ প্রত্যাখান করে বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বশির উদ্দীন জানান, ২০১৬ সালে ৭ মে নৌকার প্রার্থী মুনছুর আলীর বিরুদ্ধে রাকিবুল হাসান রাসেল ভোট করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে মাদক ব্যবসাসহ এহেন কোনো কাজ নেই যা ইউনিয়নে করেননি। টিআর, কাবিটা, এলজিএসপি, এডিবি ও কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকা লুটপাট করেছে। বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড টাকা ছাড়া করেনি। নিজের আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত একাধিক ঘর নিয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। যার অভিযোগ হরিণাকুণ্ডুর ইউএনও তদন্ত করেছেন। গোটা ইউনিয়নে তিনি ত্রাসের রাজত্ব করে রেখেছেন। ২০১৬ সালে নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করা রাকিবুল হাসান রাসেল মনোনয়ন পাবেন না বলে গ্রুপিং লবিং করে তার আশিতিপর বৃদ্ধ পিতাকে নৌকার মনোনয়ন এনে দিয়েছেন। দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়া ওই পরিবারের হাতেই আবার নৌকা প্রতীক তুলে দিয়ে তৃণমূলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে বলে বশির অভিযোগ করেন। হরিণাকুণ্ডু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিম মোল্লা জানান, সংঘর্ষের বিষয়ে থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।  


কমেন্ট বক্স
notebook

চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গায় যৌথ সভায় জেলা বিএনপির সম্পাদক শরীফুজ্জামান