বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

প্রতিদিন কোভিডের শিকার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ

  • আপলোড তারিখঃ ০৪-০৭-২০২১ ইং
প্রতিদিন কোভিডের শিকার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ
চুয়াডাঙ্গায় আরও ৮, মেহেরপুরে ১ ও ঝিনাইদহে ৩ জনের প্রাণহানি টানা ৭ দিন করোনায় শতাধিক মৃত্যু দেখল দেশ, নতুন শনাক্ত ৬২১৪ নিজস্ব প্রতিবেদক: পর পর সাতদিন করোনায় শতাধিক মৃত্যু দেখল দেশ। দেশব্যাপী করোনাভাইরাস মোকাবেলায় চলমান লকডাউনের তৃতীয় দিনেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ১৩৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ৬ হাজার ২১৪ জনের শরীরে। এদিকে, গতকাল চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্র্গ নিয়ে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ১৪০ জনের শরীরে। ২৪ ঘণ্টায় মেহেরপুরে মৃত্যু হয়েছে আরও একজনের ও নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ জন। অন্যদিকে গতকাল ঝিনাইদহে করোনা মৃত্যু হয়েছে আরও ৩ জনের। নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ জন। চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে নতুন করে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল জেলায় নতুন করে আরও ১৪০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষিত চুয়াডাঙ্গার ৪১৫টি নমুনার ফলাফল প্রকাশ করে। এর মধ্যে ১৪০টি নমুনার ফলাফল পজিটিভ ও ২৭৫টি নমুনার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। জেলায় নতুন আক্রান্ত ১৪০ জনের মধ্যে সদর উপজেলার ৩০ জন, আলমডাঙ্গার ২৮ জন, দামুড়হুদা উপজেলার ৩৬ জন ও জীবননগর উপজেলার ৪৬ জন রয়েছেন। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের ৩৩.৭৩ শতাংশ। এনিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৬৫৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলার ১ হাজার ৫৭৭ জন, আলমডাঙ্গার ৫৮৮ জন, দামুড়হুদায় ৮৪০ জন ও জীবননগরে ৬৪৭ জন। গতকাল জেলা থেকে আরও ৩৬ জন সুস্থ হয়েছে। এনিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হয়েছে ২ হাজার ৩৪২ জন। চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলায় তিনজন, জেলার বাইরে দুজন ও উপসর্গ নিয়ে দুজনসহ আটজনের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১১৫ জনের। গতকাল সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটের রেড জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা আক্রান্ত হয়ে দুইজন, হোম আইসোলেশনে একজন ও জেলায় আক্রান্ত হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলার বাইরে মৃত্যু হয়েছে আরও দুজনের। গতকাল হাসপাতালের রেড জোনে মৃত্যু হয়েছে পৌর শহরের কলেজ পাড়ার কাজী আশফাকের স্ত্রী রোকেয়া পারভিন (৬৪)। গত ২৬ জুন র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে তাঁর নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়। গত ২৯ জুন তাঁকে সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করে পরিবারের সদস্যরা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার বেলা ৩টা ৫৫ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়। এবং দামুড়হুদা উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের মৃত মোল্লার ছেলে রমজান আলী (৭৫)। গত ১ জুলাই তাঁকে সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করে পরিবারের সদস্যরা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়। এনিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ১১৫ জনের। গতকাল সদর হাসপাতালের ইয়োলো জোনে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হওয়া দুজন হলেন- চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সুমিরদিয়াপাড়ার বাবর আলীর স্ত্রী বলেহার বেগম (৫৫) ও জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া গ্রামের মীর জবেদ আলীর ছেলে মীর আব্দুল জলিল (৫৫)। এছাড়াও গতকাল করোনা উপসর্গ নিয়ে পৌর এলাকার কোর্টপাড়ার আবুল হোসেন জোয়ার্দ্দারের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. এ এস এম ফাতেহ্ আকরাম জানান, গতকাল শনিবার সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা আক্রান্ত দুজন, হোম আইসোলেশনে ও জেলায় আক্রান্ত হয়ে জেলার বাইরে মৃত্যু হয়েছে আরও দুজনের। এছাড়া করোনা উপসর্গ নিয়ে ইয়োলো জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে দুজনের। করেনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হওয়া প্রত্যেকের শরীর থেকে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। মৃত্যুর পর করোনা প্রটোকলে নিহতের লাশ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হওয়া নতুন দুজনসহ জেলায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে মৃত্যু হয়েছে মোট ৯৮ জনের। জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ করোনা পরীক্ষার জন্য গত মঙ্গলবার ১৩৫টি, বুধবার ১৯৬টি, বৃহস্পতিবার ২৫৯টি ও শুক্রবার ২৭টি নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করে। গতকাল উক্ত নমুনা ও পূর্বের পেন্ডিং নমুনার মধ্যে ৪১৪টি নমুনার ফলাফল প্রকাশ করে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ। গতকাল জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ আরও ২৮২টি নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করেছে। চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ১৪ হাজার ৪৪০টি, প্রাপ্ত ফলাফল ১৩ হাজার ৭৬৯টি, পজিটিভ ৩ হাজার ৬৫৩ জন। জেলায় বর্তমানে ১ হাজার ১৯৪ জন হোম আইসোলেশন ও হাসপাতাল আইসোলেশনে রয়েছে। এর মধ্যে হোম আইসোলেশনে আছে ১ হাজার ১২৫ জন ও হাসপাতাল আইসোলেশনে ৭৩ জন। গতকাল শনিবার করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম আইসোলেশনে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ১১৫ জনের। এর মধ্যে জেলায় আক্রান্ত হয়ে জেলার হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে মৃত্যু হয়েছে ৯৯ জনের। এছাড়া চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্ত অন্য ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলার বাইরে। মেহেরপুর: মেহেরপুরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। গতকাল মেহেরপুরে নতুন করে আরও ৪৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছেন। এছাড়া গতকাল মেহেরপুরে করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় গতকাল নতুন শনাক্তদের ৪৮ জনের মধ্যে সদর উপজেলায় ১০ জন ও গাংনী উপজেলার ৩৮ জন রয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, গতকাল মেহেরপুরে কষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষিত ৯৮টি নমুনার ফলাফল আসে। এর মধ্যে ৪৮টি নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৪৯.৪৮ শতাংশ। এনিয়ে বর্তমানে মেহেরপুর জেলায় করোনা পজেটিভ রোগীর এর সংখ্যা ৫৬৩ জন। তার মধ্যে সদর উপজেলার ১৮৩ জন, গাংনীতে ২৭১ জন এবং মুজিবনগরে ১৯ জন। মেহেরপুরে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের। এর মধ্যে সদর উপজেলার ২০ জন, গাংনী ২২ জন ও মুজিবনগরে ১৪ জন রয়েছেন। ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহে একের পর এক মৃত্যুর বিভিষিকাময় খবরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে জেলাবাসী । ঘরে ঘরে অসুস্থ মানুষের ভীড় বাড়ছে। গ্রাম শহর সর্বত্রই ভুগছে মৌসুমি ঠান্ডা কাশি ও জ্বর নিয়ে। সামান্যতেই মানুষ আতংকিত হয়ে ছুটছে চিকিৎসকের কাছে। ফলে সরকারী হাসপাতালের পাশাপাশি ভিড় বাড়ছে প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে। গত ২৪ ঘন্টায় ঝিনাইদহে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ৩ জনের। এ নিয়ে জেলায় করোনা শুরুর পর থেকে এক’শ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ১৭ জন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঝিনাইদহ করোনা ইউনিটে ভর্তি আছেন ৫৭ জন। ঝিনাইদহ ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ পর্যন্ত ১১১ জনের লাশ দাফন করেছে। এর মধ্যে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণকারীরাও আছেন। সারাদেশ: সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা দেশে একদিনে করোনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) দেশে সর্বোচ্চ ১৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এনিয়ে দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৪ হাজার ৯১২ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৩৪ জনের মৃত্যু হওয়ায় টানা এক সপ্তাহ ধরে শতাধিক মৃত্যু দেখছে দেশ। গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ২১৪ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯ লাখ ৩৬ হাজার ২৫৬ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২২ হাজার ৭০৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হলেও পরীক্ষা করা হয়েছে ২২ হাজার ৬৮৭টি নমুনা। যেখানে শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট হার ১৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ। একদিনে নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৭৭৭ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা ৮ লাখ ২৯ হাজার ১৯৯ জন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের বিবেচনায় মারা যাওয়ার হার ১ দশমিক ৫৯ আর সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, মারা যাওয়া ১৩৪ জনের মধ্যে ষাটোর্ধ ৬৫ জন। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৩০ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২৪ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১০ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ৮৪ জন ও মহিলা ৫০ জন। যাদের মধ্যে বাসায় ৭ জন ছাড়া বাকিরা হাসপাতালে মারা গেছেন। একই সময়ে বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৩৪ জনের মধ্যে খুলনা বিভাগে সর্বোচ্চ ৩৯ জন, ঢাকায় ৩৮ জন, রাজশাহীতে ২৩ জন, রংপুরে ১৫ জন, চট্টগ্রামে ১১ জন, ময়মনসিংহে ৪ জন, সিলেটে ১ জন, বরিশালে ৩ জন মারা গেছেন।


কমেন্ট বক্স
notebook

ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত: সেনাপ্রধান