ঈমান বাড়ে যেসব আমলে
- আপলোড তারিখঃ ১৯-০৫-২০২১ ইং
ধর্ম প্রতিবেদন:
ঈমান শব্দের আভিধানিক অর্থ স্বীকার করা, স্বীকৃতি দেয়া, মতান্তরে দৃঢ় বিশ্বাস করা। ইসলাম ধর্মে ঈমানের অর্থ অত্যন্ত ব্যাপক। ঈমান বা বিশ্বাসের মূল্য আল্লাহ তালার নিকট সবচেয়ে দামি। তাইতো মুসলমানের কাছেও ঈমানের চেয়ে মহামূল্যবান আর কিছুই নেই। ঈমানের উপর ভিত্তি করে মানুষের দুনিয়া ও পরকালের সব হিসাব-নিকাষ চূড়ান্ত হবে। ঈমানের মাধ্যমেই আল্লাহ ও তাঁর বান্দার মাঝের সেতুবন্ধন তৈরি হয়। বিভিন্ন কারণে বান্দার ঈমানে প্রভাব পড়ে। ঈমান বৃদ্ধির বিভিন্ন আমল পবিত্র কোরআনে ও হাদিসে বলা হয়েছে। নিচে এমন কিছু আমল উল্লেখ করা হলো যা নিয়মিত আমল করলে বান্দার ঈমান বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশ জার্নালের পাঠকদের জন্য ঈমান বৃদ্ধির ন- হাদিসের আলোকে উল্লেখ করা হলো- কোরআন তেলাওয়াত করা: কোরআন তেলাওয়াত করলে ঈমান বাড়ে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যখন তাদের সামনে কোরআনের আয়াত তেলাওয়াত করা হয়, তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায়।’ (সুরা আনফাল : ২) সাহাবাদের জীবনী চর্চা করা: আল্লাহ তায়ালা সাহাবায়ে কেরামের ঈমানকে আমাদের ঈমানের জন্য আদর্শ বানিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘লোকেরা যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আন।’ (সুরা বাকারা : ১৩)। হজরত আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রা. বলেন, মুহাম্মদ (সা.) এর সাহাবারা যেভাবে ঈমান এনেছে, তোমরাও সেভাবে ঈমান আন।’ (তাফসিরে তাবারি, এই আয়াতের তাফসির) আল্লাহর জিকির করা: দুর্বল ঈমানের সুস্থতার জন্য যিকির খুবই উপকারী। আল্লাহর যিকির অন্তরে ঈমানের বীজ বপন করে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়।’ (সুরা রা’দ ২৮) আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা: আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয় আসমান ও জমিন সৃষ্টিতে এবং রাত্রি ও দিনের আবর্তনে চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।’ (সুরা আলে ইমরান : ১৯০) আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব ও শত্রুতা: মুমিনদের সঙ্গে সম্পর্ক ও বন্ধুত্ব রাখা আর কাফিরদের সঙ্গে শত্রুতা রাখা ও সম্পর্কচ্ছেদ করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিঃসন্দেহে তোমাদের বন্ধু হচ্ছেন কেবলমাত্র আল্লাহ, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈমানদারেরা নামাজ কায়েমকারী জাকাত আদায়কারী এবং রুকু আদায়কারী।’ (সুরা মায়িদা : ৫৫)। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে আল্লাহর জন্য ভালোবাসে, আল্লাহর জন্য ঘৃণা করে, আল্লাহর জন্য প্রদান করে এবং আল্লাহর জন্য প্রদান থেকে বিরত থাকে সে ঈমান পরিপূর্ণ করেছে। (আবুদাউদ : ৪৬৮১) বিনম্রতা ও লজ্জাশীলতা: হাদিসে লজ্জাকে ঈমানের অঙ্গ বলা হয়েছে। হজরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) এক আনসারী সাহাবির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সাহাবি তার ভাইকে লজ্জার ব্যাপারে উপদেশ দিচ্ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তাকে ছেড়ে দাও। কেননা, লজ্জা ঈমানের অঙ্গ।’ (বুখারি : ২৪; মুসলিম : ৩৬; তিরমিজি : ৬২১৫) সর্বোপরি বেশি বেশি নেক আমল করা এবং যাবতীয় গুনাহ বর্জন করা। কেননা যেকোনো নেক আমল ঈমানকে বৃদ্ধি করে। এ জন্য কোরআন মজিদে যত জায়গায় ঈমানের কথা এসেছে তত জায়গায় পাশাপাশি নেক আমল করার কথাও এসেছে। পরিশেষে আল্লাহর কাছে দোয়া করি, হে আল্লাহ! আপনি ঈমানকে আমাদের নিকট প্রিয় করে দিন এবং ঈমানকে আমাদের অন্তরে সুশোভিত করে দিন। কুফর, পাপাচার ও আপনার অবাধ্যতাকে আমাদের নিকট অপছন্দনীয় করে দিন এবং আমাদেরকে সুপথ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করে নিন।
কমেন্ট বক্স