বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে করোনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে

  • আপলোড তারিখঃ ১০-০৪-২০২১ ইং
আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে করোনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে
চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে ৩ জনসহ সারা দেশে আরও ৬৩ জনের মৃত্যু সমীকরণ প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে করোনা আক্রান্ত হয়ে একজন করে সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় সারা দেশে ৭ হাজার ৪৬২ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষাও হয়েছে ৩১ হাজার ৬৫৪ জনের। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত দেশে মোট ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৫৯৪ জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ৯ হাজার ৫৮৪ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৬৮ হাজার ৫৪১ জন। গত বৃহস্পতিবার দেশে করোনায় আক্রান্ত ৭৪ জনের মৃত্যু ও ৬ হাজার ৮৫৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের কথা জানায় সরকার। গত বছরের মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এরপর থেকে শনাক্তের হার কমতে শুরু করে। গত জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাস করোনার সংক্রমণ ছিল তীব্র। মাঝে নভেম্বর-ডিসেম্বরে কিছুটা বাড়লেও বাকি সময় সংক্রমণ নিম্নমুখী ছিল। এ বছর মার্চে শুরু হয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে এবার সংক্রমণ বেশি তীব্র। মধ্যে কয়েক মাস ধরে শনাক্তের চেয়ে সুস্থ বেশি হওয়ায় দেশে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা কমে আসছিল। কিন্তু মার্চ থেকে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যাও আবার বাড়তে শুরু করেছে। কোনো দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঠিক করা কিছু নির্দেশক থেকে বোঝা যায়। তার একটি হলো রোগী শনাক্তের হার। টানা দুই সপ্তাহের বেশি রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। এ বছর ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে ছিল। দুই মাস পর গত ১০ মার্চ দৈনিক শনাক্ত আবার হাজার ছাড়ায়। এরপর দৈনিক শনাক্ত বাড়ছেই। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২৯ মার্চ বেশ কিছু বিধিনিষেধসহ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। এর মধ্যে ঘরের বাইরে গেলে মাস্কের ব্যবহার অন্যতম। কিন্তু সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকলেও জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে এখনো উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই। চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় করেনা আক্রান্ত হয়ে রবিউল ইসলাম (৮০) নামের এক বৃদ্ধর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টায় খুলনা ১শ শয্যা বিশিষ্ঠ ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এনিয়ে চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংথ্যা দাড়ালো ৫৪ জনে। রবিউল ইসলামসহ জেলার বাইরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। গতকাল জেলায় নতুন করে আরও ৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৮৯ জনে। গতকাল জেলায় নতুন আক্রান্তদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৪জন, আলমডাঙ্গার ১জন ও দামুড়হুদার ১জন রয়েছে। জানা যায়, গত ৬ এপ্রিল ১শ শয্যা বিশিষ্ঠ খুলনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে ভর্তি হন রবিউল ইসলাম। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত ১০টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত রবিউল ইসলাম চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মৃত সদর আলীর ছেলে। এদিকে, গত বৃহস্পতিবার করোনা পরীক্ষার জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ৩৭টি নমুনা পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করে। গতকাল উক্ত নমুনা ও পূর্বের পেন্ডিং নমুনারসহ ৪৪টি নমুনার ফলাফল সিভিল সার্জন অফিসে এসে পৌঁঁছায়। এর মধ্যে ছয় জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে বাকি ৩১টি নমুনার ফলাফল নেগেটিভ আসে। গতকাল জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ করোনা পরীক্ষার জন্য কোন নমুনা সংগ্রহ বা প্রেরণ করেনি। চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ৮ হাজার ৮৩৭টি, প্রাপ্ত ফলাফল ৮হাজার ৬৩০টি, পজিটিভ ১ হাজার ৭৮৯টি, নেগেটিভ ৬ হাজার ৩৯৯টি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১০৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিল। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলায় অবস্থানকালে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১০৪ জন ও জেলার বাইরে থেকে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা করোনা ইউনিটে ভর্তি হয়েছে ১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৯০জন হোম আইসোলেশন ও অন্য ১৫জন প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে আছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গার বাইরে রয়েছেন ১ জন। চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের। এর মধ্যে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলার বাইরে। মেহেরপুর: মেহেরপুরে করোনা আক্রান্ত হয়ে খায়রুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালের দিকে ঢাকা কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। জানা যায়, কয়েকদিন পূর্বে করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি হন খায়রুল ইসলাম। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহি রেখে গেছেন। ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহে আনসার আলী মন্ডল (৭০) নামে আরও একজন করোনা আক্রান্ত মৃত্যু বরণ করেছেন। তিনি হরিণাকুন্ডু উপজেলার হামিরহাটি চাঁদপুর গ্রামের তোয়াজ উদ্দীন মন্ডলের ছেলে। এর আগে কালীগঞ্জের আইনজীবী আশরাফুজ্জামান, কালীগঞ্জের বেজপাড়া গ্রামের গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী রহিমা খাতুন ও তার মেয়ে সালমা আক্তার মুন্নি এবং শৈলকুপার ফুলহরি গ্রামের দরবার আলী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ঝিনাইদহ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদ জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে আনসার আলী গত ৫ এপ্রিল ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। ৮ এপ্রিল করোনা পরীক্ষায় তার ফলাফল পজিটিভ আসে। গতকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনসার আলীর মৃত্যু হয়। গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলার নগরবাথান গোরস্থানে ঝিনাইদহ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের লাশ দাফন কমিটির সদস্য মাওলান শাহিনুর আলমের নেতৃত্বে আনসার আলীর লাশ দাফন করা হয়। করোনা শুরুর পর থেকে ঝিনাইদহ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের লাশ দাফন কমিটি করোনা আক্রান্ত ও করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত মোট ৬৯ জনের লাশ দাফন করেছে।


কমেন্ট বক্স
notebook

আইজিপির সঙ্গে সাক্ষাৎ করল রবার্ট এফ কেনেডি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধিদল