আল্টিমেটাম : ভাইটাল আসামি গ্রেপ্তার না হলে রোববার হরতাল
- আপলোড তারিখঃ ২৬-০৩-২০২১ ইং
চুয়াডাঙ্গায় আ.লীগ নেতা জাহাঙ্গীরের লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলে এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর মল্লিককে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের পর নিহত জাহাঙ্গীরের লাশ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে অংশ নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষমতাসীন দলের একটি অঙ্গসংগঠনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান তোলেন। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কবরী রোডে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের বীর মুক্তিযোদ্ধা সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান মানিক, জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরেফিন আলম রঞ্জু, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক প্রমুখ।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন বলেন, ‘আমরা যেটা আশা করিনি, সেই বিষয় নিয়েই আপনাদের সাথে কথা বলতে হচ্ছে। আমাদের একজন তৃণমূলের কর্মী জাহাঙ্গীর, যাকে গতকাল নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যা হতো না, যদি পুলিশ অ্যাক্টিভ থাকত। এর আগে থানায় মামলা করতে গিয়েছে, মামলা নেওয়া হয়নি। আমি মনে করি এটা পুলিশের গাফিলতি। তারপরে কোর্টে মামলা করা হয়েছে। কোর্ট থেকে নথিভুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ অ্যারেস্ট করেনি। আমি মনে করি, এটা পুলিশের ব্যর্থতা। আমরা জানতে চাই, কিসের জন্য, কার কথা শুনে এই আসামি ধরা হলো না।’
এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার আরও বলেন, ‘আপনারা এ খেলা খেলেন না, আমরা কিন্তু অনেক মিয়াদের দেখেছি। আমরা আয়ুব খান দেখেছি, জিয়াউর রহমান দেখেছি। ক্ষমতায় আছি, আপনাদের কাছে কিছু বললে মনে করেন পাওয়ার দেখাচ্ছি। আমরা যখন পাওয়ারে ছিলাম না, তখন পাওয়ার কার বলে, আমরা দেখিয়েছি। রাত্রীর অন্ধকারে আমাদের সাথে দেখা করেছেন আপনারা। আবার সেই জায়গায় আমার নিয়ে যাবেন না। এখনো আমরা বেঁচে আছি। আপনাদের ওই লাঠিবাজি দেখে আমরা ভয় করব না। আগামী শনিবারের মধ্যে ভাইটাল আসামি যারা, আপনারা যদি তাঁদেরকে গ্রেপ্তার না করেন, রোববারে অর্ধদিবস হরতাল ডেকে দিব। বিকেলে আমরা চৌরাস্তার মোড়ে প্রতিবাদ সভা করব। পরিষ্কার বলে দিচ্ছি, শনিবার পর্যন্ত আল্টিমেটাম।’ এ সময় তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা শুনে নিন, আর নতুন করে বলা হবে না। ওইদিন এসে হাজির হবেন।’
পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘পুলিশ ভাইরা আপনাদের যেমন একটা সোলজার তৈরি করতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। তেমনি আমাদের একটা কর্মী তৈরি করতে অনেক অনেক তেল পুড়াতে হয়। আমাদের কর্মী মেরে ফেলবে, আর আমরা চুপ করে বসে থাকব, এটা হতে পারে না। সে যত তৃণমূলেরই হোক (কর্মী)। সুতরাং যেটা বললাম, যদি আসামি অ্যারেস্ট না করেন, শনিবার পর্যন্ত আমরা আল্টিমেটাম দিচ্ছি। রোববারে অর্ধদিবস হরতাল আর বিকেলে প্রতিবাদ সভা হবে। এটিই আমাদের শেষ ডিসিশন।’
এদিকে, জাহাঙ্গীর মল্লিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারকে প্রধান আসামি করে ১১ নেতা-কর্মীর নামে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের পিতা রনজিত মল্লিক। উল্লেখ্য, গত বুধবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে তিতুদহ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর মল্লিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
কমেন্ট বক্স