ভিক্ষার টাকা মসজিদ-মাদ্রাসায় দান করেন তিনি!
- আপলোড তারিখঃ ২১-১২-২০২০ ইং
আকিমুল ইসলাম:
‘ডাক্তারে বলেছে ছোট ছোট কুকড়োর (মুরগি) বাচ্ছা রান্না করে খেতে, শরীরে জোর পাইনা, বাড়িওয়ালার (স্ত্রী) ডায়াবেটিস, তারপর আবার কানে শোনে না। আর বঁাঁচবই বা ক’দিন, এক পা কবরেই আমার।’ খাড়াগোদা বাজারে সোহানের চায়ের দোকানে বসে এসব কথা বলছিলেন ৯১ বছর বয়সী একজন বৃদ্ধ ভিক্ষুক। কাছে গেলে জানা যায় তাঁর নাম আব্দুল করিম। বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানার দোড়া ইউনিয়নের চুয়াডাঙ্গা গ্রামে। আব্দুল করিমের বয়সের ভারে চলতে অসুবিধা হলেও মাঝে মধ্যে ভিক্ষাবৃত্তি করে বেড়ান আশপাশের বিভিন্ন বাজারগুলোতে। আর এই টাকা দিয়ে বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসাতে কিনে দেন কোরআন শরীফ ও হাসিদের বই।
বয়স্ক আব্দুল করিম বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে অনেক দিনই দুনিয়াতে বেঁচে আছি, আর হয়ত বেশি দিন বাঁচব না। ভিক্ষা করে দুজনের সংসারে খরচ শেষে বেচে যাওয়া অবশিষ্ট টাকা ইসলামি বই ও কোরআন শরীফ মসজিদ-মাদ্রাসায় দিই পরকালে শান্তির আশায়।’ আব্দুল করিমের কোনো পুত্রসন্তান নেই, আছে পাঁচ কন্যা। অভাবের মধ্যেও অতিকষ্টে সব মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন কয়েক বছর পূর্বে। ব্রিটিশ আমল থেকে শতবিঘা জমির মালিক হওয়া সত্বেও এখন কিছুই নেই তাঁর বসবাসের বাড়ি ছাড়া।
গতকাল খাড়াগোদা বাজার জামে মসজিদের ইমাম সাগর হোসেনের হাতে পবিত্র কোরআন কেনার টাকা দেওয়ার সময় আশপাশের মানুষের দৃষ্টি কাড়েন তিনি। জানতে চাইলে তিনি বলেন, গোপনে দান করলে আল্লাহ্ খুশি হন, তাই গোপনীয়ভাবেই দান করি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অনেক আগে থেকেই ভিক্ষাবৃত্তির টাকা দিয়ে আব্দুল করিম মসজিদ-মাদ্রাসার কাজে অর্থ দান করার ফলে বর্তমানে তা তাঁর নেশায় পরিণত হয়েছে। সমাজে অনেক বিত্তবান ব্যক্তি আছেন, যারা সমাজের কোনো কাজেই আসেন না। সেক্ষেত্রে আব্দুল করিমের কর্মকাণ্ডকে সাধুবাদ জানায় স্থানীয় সুধীমহল।
কমেন্ট বক্স