করোনার দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ
- আপলোড তারিখঃ ২১-১২-২০২০ ইং
পর্যাপ্ত টিকা আমদানি নিশ্চিত করুন
প্রথম দফা সংক্রমণের ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই বিশ্বব্যাপী আরও প্রবলভাবে ফিরে এসেছে করোনার দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ। এরই মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা আট কোটির কাছাকাছি চলে গেছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৭ লাখ। অনেক দেশ আবার লকডাউন আরোপ করেছে। বাংলাদেশেও দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ শুরু হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত বা মৃতের সংখ্যাই শুধু বাড়ছে না, বিশ্ব অর্থনীতির মতো দেশের অর্থনীতিও পড়েছে মারাত্মক সংকটে। রাজস্ব আদায়ে রীতিমতো ধস নেমেছে। রপ্তানি আয় কমে গেছে। স্থানীয় বাজারেও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেচাকেনা কমে গেছে। অনেক শিল্প ক্রমাগত লোকসান দিচ্ছে। মানুষের আয়-উপার্জন কমে গেছে। এই অবস্থায় করোনা মহামারি দীর্ঘায়িত হলে রীতিমতো বিপর্যয় নেমে আসবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনায় বিপর্যস্ত বিশ্বে কিছুটা আশা জাগিয়েছে কয়েকটি টিকার উদ্ভাবন। ফাইজারের পর এবার মডার্নার টিকাও যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদন পেয়েছে। আশা করা যায়, শিগগিরই আরো অনেক দেশে মডার্নার টিকাও অনুমোদন পেয়ে যাবে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাও শিগগির অনুমোদন পেয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর এর সঙ্গেই জড়িয়ে আছে আমাদের ভাগ্য। অক্সফোর্ডের টিকার তিন কোটি ডোজ আমদানির ব্যাপারে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি হয়ে আছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু উন্নত দেশে টিকার প্রয়োগও শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশ এখনো কোনো টিকা হাতে পায়নি। ফাইজারের টিকা মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সংরক্ষণ ও পরিবহন করতে হয়। এটির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা গড়ে না ওঠা পর্যন্ত বড় পরিসরে আমদানি সম্ভব নয়। প্রকাশিত খবরে জানা যায়, মডার্নার টিকা মাইনাস ২ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে পরিবহন ও সংরক্ষণ করা যাবে। তাই মডার্নার টিকা আমদানির ব্যাপারেও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আশা করা হচ্ছে, আগামী মাসেই অক্সফোর্ডের টিকার প্রথম চালান এসে যাবে। এরই মধ্যে প্রথম দফায় কারা কারা টিকা পাবে তার তালিকা করা হচ্ছে। টিকা পরিবহন, সংরক্ষণ ও টিকা প্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। কোভ্যাক্স বা অন্যান্য উৎস থেকে টিকা প্রাপ্তির বিষয়েও জোর উদ্যোগ নিতে হবে। টিকার প্রয়োগ শুরু হলেই যে করোনার সংক্রমণ থেমে যাবে, এমনটা নয়। সবাইকে টিকার আওতায় আনতেই এক বছর কিংবা আরো বেশি সময় লেগে যেতে পারে। এ অবস্থায় ব্যক্তিগত সচেতনতা খুবই জরুরি। এর মধ্যে আছে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, মাস্ক পরা এবং বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। কিন্তু গণপরিবহন, মার্কেট, শিল্প বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও দেখা যায় এসব নিয়ম সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না। যেকোনো মূল্যে এসব নিয়ম-কানুন সঠিকভাবে মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। আশা করি, করোনার প্রথম দফা সংক্রমণের মতোই দ্বিতীয় দফা সংক্রমণও আমরা সফলভাবে মোকাবেলা করতে সক্ষম হব।
কমেন্ট বক্স