শ্রমের গুরুত্ব
- আপলোড তারিখঃ ১০-১২-২০২০ ইং
ধর্ম প্রতিবেদন:
জীবিকা অর্জনের অন্যতম উপায় শ্রম। এ কারণেই শেষ নবী হজরত মুহম্মদ (সা.) শ্রম বিনিয়োগের ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘শ্রমজীবীর উপার্জনই উৎকৃষ্টতর, যদি সে হয় সৎ উপার্জনশীল’ -মুসনাদে আহমদ। কোরানে কারিমে ইসলামের অন্যতম প্রধান বিধান নামাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি উৎপাদনমুখী কর্মে নিয়োজিত হওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। তাই তো ঘোষণা এসেছে, ‘যখন তোমাদের নামাজ শেষ হয়ে যাবে, তবে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়। আর আল্লাহর অনুগ্রহ রিজিক) অনুসন্ধানে ব্যাপৃত হয়ে যাও’ -সূরা জুমা: ১০। যুগে যুগে প্রত্যেক নবীই নিজ নিজ শ্রমলব্ধ উপায়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ইসলামের দৃষ্টিতে হালাল পথে শ্রম বিনিয়োগ বিন্দুমাত্র লজ্জার বিষয় নয় বরং এটা হচ্ছে নবীদের সুন্নত। মুসতাদরাকে হাকিমে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, হজরত দাউদ (আ.) বর্ম তৈরি করতেন। হজরত আদম (আ.) কৃষি কাজ করতেন। হজরত নূহ (আ.) কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন। হজরত ইদরিস (আ.) সেলাইয়ের কাজ করতেন এবং হজরত মূসা (আ.) রাখালের কাজ করতেন -ফাতহুল বারি। সাহাবায়ে কেরাম নিজেরা যেমন শ্রমদানে অভ্যস্ত ছিলেন, তেমনি অন্যদেরও শ্রমদানের প্রতি উৎসাহিত করতেন। নবী কন্যা হজরত ফাতেমার (রা.) পানি টানতে গিয়ে বুকেপিঠে দাগ পড়ে যেত, জাঁতা ঘোরাতে ঘোরাতে হাতে ফোসকা পড়ে যেত, তবুও তিনি শ্রমবিমুখ হননি। এমনকি মানবসেবার মূর্ত প্রতীক মহানবী (সা.) খন্দক যুদ্ধের প্রাক্কালে নিজ হাতে পরিখা (দুর্গ) খনন কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখে বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের মহান পেশাকে সম্মানিত করেছেন। শ্রমের প্রতি এমন গুরুত্বের কারণে ইসলামে ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ। বর্তমানে ভিক্ষাবৃত্তি ব্যাধিতে রূপ নিয়ে চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। অগণিত মানুষের কর্ম ও শ্রমের প্রতি নিদারুণ অনীহা পেয়ে বসেছে। ফলে ভিক্ষার ঝুলি কাঁধে বাড়ি বাড়ি যাওয়া, ফুটপাত, ফুটওভার ব্রিজ, রাস্তায় চলমান গাড়ি কিংবা যানজটে আটকেপড়া গাড়ি থামলেই হুমড়ি খেয়ে পড়া তাদের স্বভাবে পরিণত হয়েছে। ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তিকে পছন্দ করে না। তাই তো মহানবী (সা.) ভিক্ষাবৃত্তির পরিবর্তে কাঠ কেটে জীবিকা নির্বাহের প্রতি জনৈক ভিক্ষুককে শিক্ষা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘যে কোনো দিন ভিক্ষা করবে না বলে আমার সঙ্গে ওয়াদাবদ্ধ হবে, তার জান্নাত লাভের দায়িত্ব আমি নিলাম’ -আবু দাউদ।
কমেন্ট বক্স