পাল্টা-পাল্টি হামলায় আহত ২, শহরজুড়ে আতঙ্ক!
- আপলোড তারিখঃ ১১-০৯-২০২০ ইং
চুয়াডাঙ্গায় আওয়ামী লীগ নেতা আলমের ওপর হামলার ঘটনায় বাড়ছে উত্তেজনা
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা আলমের ওপর হামলার ঘটনার জের ধরে ছাত্রলীগের দুই গ্রæপের মধ্যে দিনদিন বাড়ছে উত্তেজনা। একই দিনে দুজনের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এ ঘটনার পর দুই পক্ষের থেকে পাল্টাপাল্টি অভিযোগও করা হচ্ছে। এমনকি হামলার ভয়ে আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে পারছেন না। বাসায় নিচ্ছেন চিকিৎসাসেবা। এ নিয়ে শহরে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এখনি যদি প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেই, তাহলে বড় কিছু ঘটনার আশঙ্কা করছে সচেতন মহল। পুলিশ বলছে, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আলমের ওপর হামলার জেরেই দুই গ্রæপের মধ্যে বারবার হামলার ঘটনা ঘটছে।
অভিযোগকারী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সদর হাসপাতাল চত্বরে আনিসুর রহমান আনিস নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীর ওপর প্রকাশ্যে হামলা চালায় কয়েক যুবক। এ সময় আনিসকে বেধড়ক মারধর করে তারা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। আনিস বলেন, ‘আমার বোন সদর হাসপাতালে ভর্তি আছে। কৃহস্পতিবার সকালে আমি বোনকে দেখতে গেলে হাসপাতালের মধ্যে থাকা শান্তিপাড়ার ইমদাদুল হক আকাশ ও ইভনসহ কয়েকজন আমার ওপরে হামলা চালাই। আমাকে প্রচÐ মারধর করে তারা। হাসপাতালের লোকজন ও পুলিশ এলে তারা পালিয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘আমি জেলা ছাত্রলীগের প্রস্তাবিত কমিটির একটি পদের প্রার্থী। কয়েকদিন আগে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আলমের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার ওপর হামলা করেছে তারা। আলমের ওপর হামলার ঘটনার মামলার আসামি আমি না। তাহলে কেন আমার ওপর হামলা? যেহেতু আমি পৌর মেয়র জিপুর সমর্থক, সে জন্য আমার ওপর প্রতিপক্ষ হামলা চালিয়েছে। পরে পুলিশ উদ্ধার করে আমাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার এক ছোট ভাই গত বুধবার হাসপাতাল গেট থেকে গুলশানপাড়ার জুয়েলকে টেনে হেছড়ে তারা তুলে নিয়ে যায়। পরে মারধর করে ছেড়ে দেওয়া হয়। আমরা এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নিজ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে আলমের সঙ্গে দলের প্রতিপক্ষ গ্রæপের নেতা-কর্মীদের বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে গত শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে আলমের ওপর হামলা চালানো হয়। প্রচুর রক্তক্ষরণে তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে দ্রæত ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করেন সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক। এ ঘটনায় আহত আলমের পরিবার একটি মামলা করে। এ হামলার ঘটনার জের ধরে ছাত্রলীগের দুই গ্রæপের মধ্যে শহরে বারবার উত্তেজনার সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে, আনিসের ওপর হামলার ঘটনার পরে পাল্টা হামলায় শিমুল (১৮) নামের এক যুবক আহত হয়েছেন। তাঁকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিমুল পৌর এলাকার শান্তিপাড়ার আব্দুলের ছেলে। শিমুল জানান, ‘বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শান্তিপ্পাড়ার স্কুল মোড়ে লাল্টুর চায়ের দোকানে বসেছিলাম। এ সময় একটি মোটরসাইকেলযোগে তিনজন এসে আমাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে চলে যায়। এর মধ্যে আনিস নামের একজনকে চিনতে পারলেও বাকি দুজনকে চিনতে পারিনি। তবে কী কারণে আমার ওপর হামলা চালানো হয়েছে, তা জানি না।’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খান বলেন, ‘গত (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে আলম নামে এক যুবকে কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষ। এরই জের ধরে গতকাল হাসপাতালের মধ্যে আনিস নামের এক যুবককে সামান্য মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে এসেছে।’ ওসি আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব সময় তৎপর রয়েছে। আমরা এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ শান্তিপাড়ার শিমুলের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।
কমেন্ট বক্স