বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

করোনার নীরব শিকার শিশুরা

  • আপলোড তারিখঃ ২২-০৮-২০২০ ইং
করোনার নীরব শিকার শিশুরা
প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিন করোনাভাইরাসের প্রভাবে নানাকিছু বদলে গেছে। সারা বিশ্বই এক ভয়াবহ সময়কে অতিক্রম করছে। আর এ ক্ষেত্রে বলার অপেক্ষা রাখে না, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাও থেমে নেই। এরই মধ্যে জানা যাচ্ছে, শিশুদের আচরণেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। যার কারণে অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন। উলেস্নখ্য, মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন বাড়ির ভেতরে থাকার কারণে মানসিক চাপের মধ্যে পড়েছে শিশুরা যার কারণে আচরণেও পরিবর্তন এসেছে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরেও উঠে এসেছে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত ৫ মাস ধরে ঘরবন্দি থাকার পর বেশির ভাগ শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই তারা অস্বাভাবিক আচরণ করছেন। এ জন্য অভিভাবকরা স্বাভাবিকভাবেই তাদের শিশুসন্তানদের নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তথ্য মতে, শিশুরা করোনাভাইরাসে অপেক্ষাকৃত কম আক্রান্ত হলেও বলা হচ্ছে তারা করোনাভাইরাসের নীরব শিকার। আমলে নেওয়া দরকার, শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে শিশুরা এমনিতেই মানসিক চাপে ভুগছেন। স্কুল নেই, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা নেই, খেলা নেই, ঘরের চার দেয়াল ছাড়া কোথাও বেড়াতে যাওয়ার উপায় নেই। ফলে তাদের আচরণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুরা বুঝতে পারে না করোনাভাইরাস কী, এর ক্ষতিটা কী, কেন তাদের সারাক্ষণ ঘরেই থাকতে হচ্ছে। হঠাৎ করে তাদের স্বাভাবিক রুটিন এলোমেলো হয়ে গেছে। ফলে আবেগ ও আচরণের মধ্যে একটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। অকারণে জেদ করছে, উত্তেজিত হচ্ছে, কান্নাকাটি করছে, নানা বায়না ধরছে, অনলাইন গেমসে আসক্তি বাড়ছে। খাওয়া-দাওয়ার প্রতিও কোনো মনোযোগ নেই। সঙ্গত কারণেই বলার অপেক্ষা রাখে না, এই পরিস্থিতি অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। আমলে নেওয়া জরুরি, একদিকে শিশুদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাদের মানসিক প্রশান্তি আসছে না অন্যদিকে দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকার কারণে বিরক্তি প্রকাশ করছে, রেগে যাচ্ছে শিশুরা। অল্পতেই ভাঙচুর করছে। এ ছাড়া শিশুদের শান্ত করতে গিয়ে বাবা-মা তাদের সামনে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল ডিভাইস তুলে দিচ্ছেন। ফলে টেলিভিশন ও ভিডিও গেমসে আসক্ত হয়ে পড়ছে শিশুরা। এতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও হীনম্মন্যতার শিকার হচ্ছে তারা। এমনটিও জানা যাচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে অনেকের অটিজম, মনোযোগ হ্রাস ও তীব্র বিষণ্নতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের একজন প্রফেসর বলছেন, সাধারণ ক্রিয়াকলাপ থেকে বিচ্ছিন্নতা শিশুদের মানসিক সংকটে ফেলে দেয়। স্বাভাবিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্নতা শিশুদের মানসিক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। যা তীব্র স্ট্রেস ডিজঅর্ডার, অ্যাডজাস্টমেন্ট ডিজঅর্ডার হতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। আমরা বলতে চাই, সামগ্রিক এই পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় নির্ধারণ ও যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। শিশুদের মনে নিশ্চিতভাবেই দীর্ঘমেয়াদি একটা ট্রমা (মানসিক চাপ) রেখে যাবে করোনাভাইরাস সৃষ্ট এ মহামারি- এমন আশঙ্কা উঠে আসছে। ফলে শিশুদের ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে তা এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। উলেস্নখ্য, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকায় গত ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আমরা মনে করি, এটা অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে আমলে নেওয়া দরকার, লকডাউনের কারণে শিশুদের জীবনাচার বদলে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ দিয়েছেন- এই সময় অভিভাবকদের উচিত, সন্তানদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশে বেশি করে সময় কাটানো। এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে যা চলছে সে বিষয়ে জানার অধিকার শিশুদেরও রয়েছে। বড়দেরও দায়িত্ব রয়েছে তাদের মানসিক যন্ত্রণা থেকে দূরে রাখা। শিশুদের দিকে বিশেষ মনোযোগ ও তাদের হাসিখুশিও রাখতে অভিভাবকদের প্রতি পরামর্শ রয়েছে। এ ছাড়া ছবি আঁকা, গল্পের বইপড়াসহ সৃষ্টিশীল কাজে শিশুদের ব্যস্ত রাখতে হবে অর্থাৎ শিশুর আগ্রহর প্রতি মনোযোগী হতে হবে অভিভাবকদের। সামগ্রিকভাবে বলতে চাই, করোনার নীরব শিকার হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা, ফলে এই পরিস্থিতি আমলে নিয়ে তাদের আচরণে নেতিবাচক প্রভাব যেন না পড়ে সেই সচেতনতা অপরিহার্য। যা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।


কমেন্ট বক্স
notebook

চুয়াডাঙ্গায় টানা দাবদাহে অতিষ্ঠ প্রাণিকূল, হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ