বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

  • আপলোড তারিখঃ ০৬-০৯-২০১৯ ইং
লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
চুয়াডাঙ্গায় প্রতারক চক্রের ফাঁদ, স্বল্প সুদে ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন-সংলগ্ন মাছপট্টির চাচা-ভাতিজা চাম্পা-শাহরিয়ারসহ তাঁদের একটি চক্রের বিরুদ্ধে। কৌশলে অন্য জেলা থেকে লোকজন এনে আজিজুর রহমান চাম্পা তাঁর নিজ বাড়িতে তৈরি করেছেন ‘সেবা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র’ নামের এক অফিস। আর বাইরের বিভিন্ন লোকজনকে অফিসের নানা পদে বসিয়ে চুয়াডাঙ্গার বেশকিছু এলাকার সহজ-সরল নারী -পুরুষকে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সঞ্চয় হিসেবে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। সেবা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের ঋণ প্রত্যাশীরা গতকাল বৃহস্পতিবার মাছপট্টির ওই অফিসে ঋণ নিতে গেলে খুঁজে পাওয়া যায়নি ওই অফিসের অস্তিত্বসহ কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে। তার আগেই চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় কোটি টাকাও বেশি বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা আজিজুর রহমান চাম্পার মুখোমুখি হলে তিনি এ ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানে না বলে জানান। পরে ঋণ প্রত্যাশী এক মহিলা ওই অফিসের ফিল্ড অফিসার মামুনকে আসামি করে সদর থানায় অভিযোগ করেন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খান। জানা যায়, ১৫-২০ দিন পূর্বে চুয়াডাঙ্গা কলেজ রোডের রেলস্টেশন-সংলগ্ন মাছপট্টি নামক স্থানে আজিজুর রহমান চাম্পার বাড়িতে সেবা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের ব্র্যাঞ্চ অফিস তৈরি হয়। ওই অফিসে সাইনবোর্ডও টাঙানো হয়। ওই সাইনবোর্ডে সেবা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের হেড অফিসের ঠিকানা হিসেবে ১২১, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ শাহবাগ, ঢাকা-১২১২ উল্লেখ করা হয়। আর অন্য জেলা থেকে লোকজন এসে রাতারাতি ওই অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী বনে যান। পরে ওই চক্রের সদস্যরা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া, পীরপুর, আকন্দবাড়িয়া, মোমিনপুর, দিগড়ী, কুলচারা, সাতগাড়ী, দামুড়হুদা উপজেলার কলাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকার মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষদের সদস্য হিসেবে ভর্তি করেন ওই প্রতিষ্ঠানে। পুরুষ ও মহিলাদের পৃথক গ্রুপ তৈরি করা হয়। প্রতিটি গ্রুপে ১০-১৫, ১৫-২০ জন সদস্য জোগাড় করা হয়। সদস্যদের ১৫ শতাংশ হারে মাসিক কিস্তির ভিত্তিতে ২৩ মাসে পরিশোধ সাপেক্ষে সরল ইন্টারেস্টের লোভনীয় ঋণের অফার দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, আজিজুর রহমান চাম্পা ও তাঁর ভাইয়ের ছেলে শাহরিয়ার এ প্রতারণার মূল হোতা। তাঁদের আটক করে আইনের আওতায় নিলেই প্রতারক চক্রের সবাইকে পাওয়া যাবে। এ সময় তাঁরা বলেন, গত বুধবার চাম্পা সাইন বোর্ড নামিয়ে রাতের আঁধারে অফিসের আসবাব ও কাগজপত্র সরিয়ে ফেলেছেন। অথচ এখন বলছেন কিছুই জানেন না তিনি। ভুক্তভোগীরা আরও অভিযোগ করেন, প্রায় এক মাস আগে চাম্পার বাড়িতে অফিস তৈরি করেছে ওই চক্রটি। চাম্পার ছত্রছায়ায় চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা। এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন চাম্পা ও তাঁর ভাইয়ের ছেলে শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তাঁরা চাচা-ভাতিজা যোগসাজশে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। চাম্পার বাড়িতে গত ২০-২৫ দিন আগে অফিস বানিয়ে ওই চক্রটি তাদের কার্যক্রম চালিয়েছে, অথচ এখন চাম্পা বলছেন তাঁর বাড়িতে কেউ ছিল না। চাম্পার এ ধরনের আচরণে তাঁরাও ক্ষুদ্ধ হয়েছেন। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, প্রতারণার শিকার চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পীরপুর গ্রামের রোকেয়া বেগম নামের এক নারী একটি অভিযোগ করেছেন। অভিযোগপত্রে প্রায় অর্ধশত নারী-পুরুষের নাম উল্লেখ রয়েছে, যাঁরা প্রত্যেকেই ক্ষতিগ্রস্ত। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।


কমেন্ট বক্স