নিজস্ব প্রতিবেদক: ৮মাস পূর্বে মালয়েশিয়ায় রাবার বাগানে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যূবরনকারী চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পৌরএলাকার রামনগর গ্রামের যুবক শরীফের বকেয়া পাওনা ও ক্ষতিপুরনের টাকা না পেয়ে তার পরিবারের সদস্যরা খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটির অকাল মৃত্যূতে যেন থেমে গেছে গোটা পরিবারের চাকা। হতভাগ্য শরীফের নিয়োগ দাতা কোম্পানী এতদিনেও তার পাওনা ও ক্ষতিপুরনের টাকা না দেয়ার পায়তারা করে চলেছে। এব্যাপারে সরেজমিন রামনগর গ্রামে দেলোয়ার হোসেন দলু মন্ডলের ছেলে শরিফুল ইসলাম শরিফের বাড়ি গেলে দেখা যায় তার স্ত্রী ১ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে থাকা নির্মানাধীন ঘরের বারান্দায় বিসন্ন মুখে বসে আছে। তার মৃত স্বামীর কথা বলতেই তিনি এ প্রতিবেদকের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় শরীফের বড়ভাই আব্দুল আলিহীম জানান, দরিদ্র পরিবারের ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে তার ছোট ভাই ২০০৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর স্বপ্নের দেশ মালয়েশিয়ায় যায়। সেখানে যেয়ে সে মাকমুর জেলার পাহাঙ্গ থানার লাডাঙ্গ ফেলডা উতারা-১১ পিটিআই সুরাট নং ৬১ বান্দার ঝিংকা ২৬৪০০ রাবার বাগানে ফেল গভর্নমেন্ট এসডান বাড/বিগবস আজাহার বিন সানি’র অধীনে শ্রমিক হিসাবে কর্মরত ছিল। ২০১৬ সালের ৫ জুন রবিবার সেদেশের সময় বিকাল ৩ টা ৪০ মিনিটের সময় কর্মস্থলে ডিউটিরত অবস্থায় আকর্ষিকভাবে হার্টএ্যাটাকে মারা যায় শরীফ। সেদেশের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পোষ্ট মর্টেম রিপোর্টে তার মৃত্যূর কারন সম্পর্কে কার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন বলে উল্লেখ করে। এর ৩ দিন পর ৮জুন বুধবার তার ভায়ের লাশ বাংলাদেশে পাঠানো হয়। রাবার বাগান কর্তৃপক্ষ দাফনের জন্যেও কোন টাকা লাশের সাথে পাঠায়নি, মৃত শরীফের সহকর্মী বাংলাদেশীরা চাদা তুলে তার লাশ বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। সেই সময় মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ঠ রাবার বাগান কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়েছিল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিক করে অল্পসময়ের মধ্যেই শরীফের পাওনা সমস্ত টাকা তার স্বজনদেরকে বুঝিয়ে দেয়া হবে। অথচ শরিফুল ইসলাম শরিফের মৃত্যূর ৮ মাস পার হয়ে গেলেও তার পাওনা বেতন ও ইন্সুরেন্সের টাকা মিলিয়ে ৭ লাখ টাকা মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ঠ রাবার বাগান কর্তৃপক্ষ আজও পরিশোধ করেনি, এমনকি ফোন করলে সে ফোনকলটিও তারা এখন আর রিসিভ করেনা। প্রবাসে বাবার অনাকাঙ্খিত মৃত্যূর কারনে ছেলে সবুজকে লেখাপড়া বন্ধ করে খুব অল্প বয়সে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। মেয়ে কুসুমের লেখা পড়াও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় মৃত শরীফের পাওনা টাকা না পেলে তার পরিবার পথে বসে যাবে। সরকারের সংশ্লিষ্ঠ দপ্তর ঢাকায় অবস্থিত মালয়েশিয়ান দুতাবাসের কর্মকর্তা ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী দুতাবাসের কর্মকর্তাদের এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মালয়েশিয়ায় কর্মরত অবস্থায় মৃতূবরনকারী শরিফুল ইসলাম শরিফের পরিবারের পক্ষ থেকে মানবিক আবেদন জানানো হয়েছে।