আইন-শৃঙ্খলার অবনতি
- আপলোড তারিখঃ ১৩-০৫-২০১৯ ইং
ধর্ষণ রোধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করুন
দেশে যে সামাজিক অনুশাসন বলতে কিছু নেই, মূল্যবোধের অবক্ষয় যে সমাজকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে, তা কি আর প্রমাণের অপেক্ষা রাখে? প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, দেশের ৯ জেলায় ১২টি ধর্ষণের ঘটনায় ১২ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুধু ধর্ষণ নয়, নৃশংস বর্বরতার এমন দৃষ্টান্ত কি আগে দেখা গেছে? সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাগুলোর দিকে ফিরে তাকালে আমরা কী দেখতে পাই? নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। বাসে গণধর্ষণের শিকার সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহীনুর আক্তার তানিয়াকে মাথার পেছন থেকে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। আঘাতে তাঁর মাথার খুলি ফেটে যায়। প্রচুর রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়। ঝিনাইদহে মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের পর বেঁধে নর্দমায় নিক্ষেপ করা হয়েছে। হবিগঞ্জে ধর্ষণের শিকার প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রী আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হওয়ায় এক স্কুলছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ। স্বামীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে এক গৃহবধূকে রাতভর গণধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক কিশোরী বাউলশিল্পী। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ করে একটি বেসরকারি সংস্থা জানিয়েছে, এ বছরের মে মাসের ১ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত সারা দেশে ৪১টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা গেছে তিনটি মেয়েশিশু। এ দেশে একটি সমাজ প্রথা ছিল। সামাজিক অনুশাসনও ছিল। সেসব কি দেশ থেকে উঠে গেছে? সমাজ প্রথা কিংবা সামাজিক অনুশাসন থাকলে তো এ সমাজে এমন বর্বর ঘটনা একের পর এক ঘটে যাওয়া সম্ভব হতো না। একের পর এক ঘটনা ঘটিয়েও পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। বিচারের দীর্ঘসূত্রতার পাশাপাশি রয়েছে তদন্তে গাফিলতি। নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় প্রমাণ হয়েছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কিছু কিছু সদস্য কিভাবে একটি ঘটনাকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করতে পারে। আর এসব কারণেই এখন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিতে হবে। শুধু প্রতিবাদ, মানববন্ধন নয়, কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন সঠিকভাবে আইনের প্রয়োগ করে তা নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষণের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতি জেলায় দ্রুত বিচার আদালত গঠন করতে হবে। নিম্ন আদালতে নিষ্পন্ন হওয়া কোনো ধর্ষণ মামলা যেন উচ্চ আদালতে দীর্ঘদিন ঝুলে না থাকে, সেদিকেও দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।
কমেন্ট বক্স