পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে ভিনগ্রহী মহাকাশযান!
- আপলোড তারিখঃ ১৮-১১-২০১৮ ইং
প্রযুক্তি ডেস্ক: পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে ভিনগ্রহীদের পাঠানো কোনও মহাকাশযান? তা আদতে কোনও ধূমকেতু নয়? নয় কোনও গ্রহাণু বা অ্যাস্টারয়েড? এ বার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকদল জানাল, না, পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ওই মহাজাগতিক বস্তু ‘আউমুয়ামুয়া’ আদতে কোনও ধূমকেতু নয়। খুব সম্ভবত ওটা ভিনগ্রহীদের পাঠানো কোনও মহাকাশযান। আর সেটাকে চালাচ্ছে আলো। আমাদের সূর্য বা তার মতো কোনও নক্ষত্র (দের) আলোই তাকে ঠেলেঠুলে ব্রহ্মা-ের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে নিয়ে চলেছে। অন্য কোনও নক্ষত্রম-ল থেকে তাকে ঢুকিয়ে দিয়েছে আমাদের সৌরম-লে। আবার হয়তো কোনও কালে তাকে ঠেলেঠুলে আমাদের সৌরম-ল থেকে ‘আউমুয়ামুয়া’কে টেনে বের করে নিয়ে যাবে সেই আলোই। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স’-এ প্রকাশিতব্য তাদের গবেষণাপত্রে এমনটাই দাবি করেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বিশিষ্ট অধ্যাপক জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্যামুয়েল বেলি ও অভি লোয়েব। গত বছরের অক্টোবরে হাওয়াই দ্বীপের হালিকালা অবজারভেটরির টেলিস্কোপে জ্যোতির্বিজ্ঞানী রবার্ট ভারিকের চোখে তা প্রথম ধরা পড়ার পর থেকেই এই মহাজাগতিক বস্তুটিকে নিয়ে তোলপাড় বিজ্ঞানী মহল। তখনই প্র্শ্ন ওঠে, ব্রহ্মা-ের আলো-আঁধার ফুঁড়ে কি কখনও কোনও কালে আমাদের সৌরম-লে ঢুকে পড়েছিল অন্য কোনও নক্ষত্র (ইন্টারস্টেলার) বা গ্যালাক্সি (ইন্টার-গ্যালাক্টিক) থেকে আসা এক অচেনা আগন্তুক? সেই আগন্তুক আদতে কি ধুমকেতুর মতো কোনও মহাজাগতিক বস্তু? বা, কোনও গ্রহাণু বা অ্যাস্টারয়েড? নাকি, ভিনগ্রহীদের ব্রহ্মা- ঢুঁড়ে বেড়ানো কোনও মহাকাশযান? এই মহাজাগতিক বস্তুটির আবিষ্কারের পরেই তার নাম রাখা হয় ‘আউমুয়ামুয়া’। হাওয়াই দ্বীপের ভাষায় যার অর্থ, বহু দূর অতীত থেকে আসা কোনও বার্তাবাহক। ২৩০ মিটার লম্বা, ৪০ মিটার চওড়া কালচে-লাল রংয়ের ‘সিগার’-এর মতো দেখতে ‘আউমুয়ামুয়া’র বয়স, জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের অনুমানে, প্রায় কয়েকশো কোটি বছর। এটা পুরু বড়জোর এক মিলিমিটার। এর শরীর পুরোপুরি মোড়া কার্বনের কোনও যৌগে। এর গতিবিধি এখনও সঠিক ভাবে বুঝে উঠতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। গত বছরের অক্টোবরে সূর্যের অত্যন্ত জোরালো অভিকর্ষ বলের টানে ‘আউমুয়ামুয়া’ আমাদের নক্ষত্রের কাছে আসার সময়েই তা প্রথম চোখে পড়েছিল বিজ্ঞানীদের। তার তিন মাস পর থেকেই আবার তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না পৃথিবীর কোনও প্রান্তের কোনও অবজারভেটরির কোনও শক্তিশালী টেলিস্কোপ থেকেই। সূর্যের কাছে আসার পরপরই অসম্ভব দ্রুত গতিতে ‘আউমুয়ামুয়া’ আমাদের থেকে অনেক অনেক দূরে আমাদেরই ছায়াপথ ‘মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সি’র কোথাও না কোথাও ‘মুখ লুকিয়েছে’। বা, ‘আত্মগোপন’ করেছে আমাদের সৌরম-লেরই কোনও অচেনা, অজানা প্রান্তে। একটি বিবৃতিতে অধ্যাপক লোয়েব বলেছেন, ‘‘আউমুয়ামুয়া ভিনগ্রহীদের ব্যবহার করা কোনও যন্ত্রাংশের ভেঙে পড়া, অচল হয়ে যাওয়া অংশ নাকি তা এখনও সক্রিয়, সচল, তা স্পষ্ট নয়। হতে পারে কোনও নক্ষত্রের তীব্র বিকিরণের চাপ বা দৈত্যাকার কোনও লেসার রশ্মির ঠেলাই ‘আউমুয়ামুয়া’কে আমাদের সৌরম-লে ঢুকিয়ে দিয়েচিল কোনও কালে। আলোর ‘ঠেলা’ দিয়ে যে কোনও মহাকাশযান চালানো সম্ভব, তা আর কল্পবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু নয়। আজ থেকে আট বছর আগেই জাপানের ‘আইকারস’ মহাকাশযানকে আলোর ঠেলা দেওয়া হয়েছিল, তার গতি হঠাৎ করে অনেকটা বাড়িয়ে তুলতে।
কমেন্ট বক্স