সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

সিলেটে ঐক্যফ্রন্টের জনসভায় বক্তারা......................

  • আপলোড তারিখঃ ২৫-১০-২০১৮ ইং
সিলেটে ঐক্যফ্রন্টের জনসভায় বক্তারা......................
ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবো ডেস্ক রিপোর্ট: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জন্য সকলকে প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ঐক্যবদ্ধ হউন। বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত। বাংলাদেশের জনগণের জয় হবেই। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে আনা হবে। এই আন্দোলন হবে ঐক্যবদ্ধ। সংবিধান অনুযায়ী দেশের প্রকৃত মালিক জনগণ।দেশের মানুষ দেশের মালিকানা থেকে বঞ্চিত। এ কারণে জনগণের ঐক্য অপরিহার্য। সবাইকে এসে বলতে হবে সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সহজ নয়। শক্তভাবে তা ফিরিয়ে আনতে হবে। ইনশাআল্লাহ দেশের মালিকানা মানুষ ফিরে পাবেন। আমরা ক্ষমতায় আসবো। জনগণকে স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্ত করবো। গতকাল বুধবার বিকেলে সিলেটের রেজিস্ট্রারি মাঠে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। সমাবেশ থেকে আবারো কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান ড. কামাল হোসেন। সমাবেশে প্রধান বক্তা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। মির্জা ফখরুল সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকারকে পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, তফসিল ঘোষণার পূর্বে পদত্যাগ করুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। সংসদ বাতিল করুন। এবং নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করুন। তিনি বলেন, আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। আজকের সমাবেশে এই বিপুল মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে এই দেশের মানুষ গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে চায়। আন্দোলনের জন্য ত্যাগ করতে প্রস্তুত। শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনবো, ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, আজ নতুন লড়াই শুরু হলো। এই লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে গণতন্ত্র। তারেক রহমানসহ সব সাজাপ্রাপ্তকে মুক্ত করতে হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জেলার সাধারণ সম্পাদক আলী আহমেদ ও মহানগর নেতা আজমল বখত সাদেকের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মইন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্যের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় ঐক্যের অন্যতম নেতা সুলতান মো. মনসুর, ২০ দলীয় জোটের শরিক লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, বিএনপির মোহাম্মদ শাহজাহান প্রমূখ। গতকাল বুধবার ভোরে ফজর নামাজের পর হজরত শাহ জালাল ও হজরত শাহ পরানের (র.) মাজার জিয়ারত করেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি, তফসিলের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশন পূনর্গঠন, নির্বাচনের সময়ে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনসহ ৭ দফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিলেটে জনসভায় মানুষের ঢল নামে। পুলিশি বাধা, হামলা গ্রেফতার উপেক্ষা করে জনসভায় যোগ দেয় বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ছাড়াও সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন পেশা শ্রেনীর মানুষ জনসভায় যোগ দেয়। সিলেট মহানগর ও জেলা, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, সিলেট দক্ষিণ উপজেলা, গোলাপগঞ্জ, বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জ, ওসমানী নগর, সদর উপজেলা, জৈন্তাপুর, গোয়াইন ঘাট, জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, বিয়ানী বাজার, ছাতক, দোয়ারা, জগন্নাথপুর, জামালগঞ্জ, সারলা, দিরাই, কমলগঞ্জ, ঝুড়ি, বড় লেখা থেকে জনগণ দুপরের আগেই মাঠপ্রাঙ্গণে আসতে থাকে। অনেকে আবার আগের দিন বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেও সিলেট শহরে অবস্থান নেয়। দুপুর ২টার আগেই নেতাকর্মীরা মাঠে প্রবেশ করতে থাকে। এক সময় রেজিস্ট্রার মাঠ ছাপিয়ে পুরো এলাকা জনারন্যে পরিণত হয়। সমাবেশ উপলক্ষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সড়ক থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। জনসভার মঞ্চের ব্যানারে লেখা ছিলো-অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহনযোগ্য নির্বাচন, ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তিসহ ৭ দফা দাবি’। মঞ্চের পশ্চিম দিকে রেজিস্ট্রারি ভবনের টানানো হয় খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রায় বাতিলের দাবি সম্বলিত বেশ কিছু বিশাল আকৃতির ডিজিটাল ব্যানার। মরহুম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, সদ্য গ্রেপ্তার হওয়া ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, নিখোঁজ সাবেক সাংসদ এম ইলিয়াস আলীর ছবি সম্বলিত বেশ কিছু ব্যানারও দেখা যায়। সমাবেশ শেষের পর বিএনপি নেতা আবদুল মুক্তাদির সহ ৩০ জনের মতো নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ড. কামাল হোসেন বলেন, জনগণের ঐক্য অবধারিত। আমরা ক্ষমতার জন্য নয় জনগণের অধিকার আদায়ে ঐক্য করেছি। আমরা ৭ দফা দাবী দিয়েছি। সেগুলোর জন্য জনগণকে সুসংগঠিত করুন। তাদের কাছে আমাদের দাবীগুলো পৌঁছে দিন। এটিকে আপনারা হালকা ভাবে নিবেন না। আপনারাও বুঝতে পেরেছেন সরকার আপনাদের বঞ্চিত করেছে। আমাদের ৭ দফায় আছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সহ সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। তার মুক্তিতে জনগণের সমার্থন রয়েছে। জনগণ এক হলে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে বাধ্য হবে। তিনি বলেন, আমরা ঐক্য করেছি দেশের মালিকের কাছে জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে। আমরা এদেশের মালিক হতে হলে আমাদের দাবি আদায় করতে হবে। জনগণ দেশের মালিক না হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়না, স্বৈরাচার চেপে বসে। ড. কামাল বলেন, সরকার শুধু বলে উন্নয়ন উন্নয়ন উন্নয়ন! কাদের উন্নয়ন? যারা আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে তাদের উন্নয়ন? তাই আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হন। জনগণের বিজয় অনিবার্য। এটি কেউ ঠেকাতে পারবে না।


কমেন্ট বক্স