ধর্ম ডেস্ক: আল্লাহ তায়ালা জিন ও মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য। এ জন্য আল্লাহ তায়ালা চিরন্তন জীবন ব্যবস্থা হিসেবে পবিত্র কোরান অবতীর্ণ করেছেন। এর মাধ্যমে আমরা যেমন দুনিয়ার জীবন, পবিত্র-সুখ ও শান্তিময় জীবন করে গড়ে তুলতে পারি, তেমনি পরকালীন জীবনে মুক্তি ও আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং নৈকট্য লাভ করতে সমর্থ হই। অতএব আমাদের জীবনের সব কার্যকারণ কোরানের নির্দেশিত পথে চলে সুন্দরতম আল্লাহর পবিত্র বান্দা হয়ে নিজেদের চিহ্নিত করতে পারি। অতএব জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পবিত্র কোরানের অনুসরণ এবং হজরত মুহম্মদ (সা.)-এর আদর্শ, সুন্নত তরিকা যথাযথ আমল করতে পারি। মহানবী (সা.)-এর মহত্তম আদর্শ ছিল হুবহু কোরান। হজরত আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, বিশ্বনবী (সা.)-এর স্বভাব-চরিত্র কেমন ছিল? তিনি উত্তরে বললেন, আল কোরানেরই হুবহু দৃষ্টান্ত। যে মহৎ চরিত্র আমাদের জীবন করবে উন্নত। যে পবিত্র স্বভাব, সিরাত-সুরাত হবে আমাদের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, সেই চরিত্র বিকাশে আমাদের মধ্যে আজ অনুপস্থিত। তাই পবিত্র কোরান ও হাদিসের আলোকে জীবন গঠনের জন্য মানবিক গুণাবলি অর্জন করা আমাদের একান্ত কর্তব্য। এ দুনিয়ার জীবনে সফলকাম সেই ব্যক্তি, যার মধ্যে দৃঢ় সংকল্পতা, উচ্চাকাক্সক্ষা, ধৈর্য, সহনশীলতা, বীরত্ব, সাহস, ত্যাগের মহিমা, আত্মসংযম, ওয়াদা পালন, আনুগত্য, নিষ্ঠা, সৌজন্যবোধ, ভদ্রতা, সহানুভূতি, সহমর্মিতা, প্রতিবেশীর প্রতি কর্তব্যবোধ, এতিম, মিসকিন, দুঃস্থ, বিপন্ন, ছিন্নমূল, গরিব-দুঃখী, অসহায় মানুষের প্রতি মমত্ববোধ ও মানবিক দায়িত্ব পালনের মতো গুণাবলি বিদ্যমান। এগুলোই কোরানের শিক্ষা। যাকে ইসলাম সুন্দরতম আদর্শ বলে ঘোষণা করেছে। মনে রাখবেন, বিশ্বাসী মানুষের জন্য ইহকাল-পরকালের মুক্তির সনদ হলো পবিত্র কোরান। কোরান মজিদের শিক্ষা এবং হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে গ্রহণ করলেই আমাদের পার্থিব ও পারলৌকিক জীবন শান্তি ও কল্যাণকর হবে। কাজেই কোরানের তেলাওয়াত, হেফজ ও সে মতো আমল করায় রয়েছে অশেষ সওয়াব, নেয়ামত ও নাজাত। আমরা যেন কোরানের শিক্ষা ও হুকুম-আহকাম জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত পালন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জন করতে পারি তার চেষ্টা করা দরকার। তেমনি সন্তান-সন্তুতি, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীদের কোরানে কারিমের হাফেজ হওয়ার উৎসাহ দিয়ে, কোরান শেখানোর ব্যবস্থা করে-অর্জন করতে পারে অগণিত সওয়াব। আল্লাহতায়ালা আমাদের কোরানের আলোকে জীবন গড়ার তওফিক দান করুন। আমীন।