সাশ্রয় নীতির নামে দর্শনা কেরুজ শ্রমিকদের মাসিক ওভারটাইম ও ইনসেন্টটিভ থেকে বঞ্চিতের অভিযোগ : দর্শনা কেরুজ চিনিকলের শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা ও ছাটায়ের আশঙ্কা!

- আপডেট সময় : ০৮:০৯:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ অগাস্ট ২০১৬ ৪৫৫ বার পড়া হয়েছে
দর্শনা থেকে আওয়াল হোসেন: সাশ্রয় নীতির নামে দর্শনা কেরু চিনিকলের শ্রমিক ছাটাই ও শ্রমিকরা ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে কেরুজ শ্রমিক ও কর্মচারীদের মধ্যে অভিযোগ উঠেছে। সাশ্রয় নীতির নামে শ্রমিকদের ধীরে ধীরে তাদের ওভার (ওটি) এবং ইনসেন্টটিভসহ অন্যান্য বেতন ভাতা কুমিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে বেশ কয়েক জন শ্রমিক নেতা এ প্রতিনিধিকে জানান। বাংলদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প করপোরেশন র্বোড কর্তৃক গত ১লা জানুয়ারী-২০১৬ তারিখে ২২২৪ তম সভায় গৃহিত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে কাজের স্বার্থে সাময়িকভাবে বিএসএফআইসির সদর দপ্তরসহ সকল চিনিকল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জনবল সুষ্ঠ সমন্বয়ের প্রস্তাবনা প্রস্তুত করার লক্ষে অত্র দপ্তরের ১ ফেব্র“য়ারী-২০১৬ তারিখে সুত্র নং এডিএম/এসএফ/২০/৭৭(১৮)/১৯৭ নম্বর অফিস আদেশের মাধ্যমে ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।এ কমিটি স্ব-স্ব চিনিকলের ব্যাস্থাপনা পরিচালক, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং সিবিএ নেতৃবৃন্দ সহকারে প্রতিটি চিনিকলের অনমোদন সেটআপ, কর্মরত জনবল মুল্যায়নসহ বাস্তবতার ভিত্তিতে আলোচনা পুনঃ সংশোধিত সেটআপের সুপারিশ করে। পরবর্তীতে গত ২জুন-২০১৬ ২২৪৪তম বোর্ডের সভায় উপস্থাপিত হয়। উক্ত বোর্ডের সিদ্ধান অনুসারে মিলের বিরাজমান আর্থিক সংকট বিবেচনায় এনে অস্তিত্ব রক্ষার নামে ব্যয় হ্রাস বা সংকোচনের নিমিত্তে কেরু এ্যান্ড কোম্পানী চিনি কলের অনুমোদিত সেটআপ সাময়িকভাবে সংশোধনপূর্বক জাতীয় বেতন কমিশন ও মুজুরী কমিশনভুক্ত সর্বমোট ১১৯১ টি পদের পুনঃসংশোধিত সেটআপ আপদকালীন ব্যবস্থা শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন করা হয়। ফলে গত ১৬ জুন-২০১৬ তারিখে সুত্র নং ইআর/এসএফ/মিল ইনসেনটিভ/ওটি/১২৯ অনুযায়ী বাংলাদেশ চিনিকল ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন এর অফিস আদেশ অনুযায়ী ১১৯১ টি পদের পুনঃসংশোধিত সেটআপ অনুযায়ী সংশোধিত সেটআপ হিসাবে ১১৮০ জন শ্রমিক থাকছে। ফলে ১১জন শ্রমিকের ভাগ্যে কি ঘটতে যাচ্ছে কেউ জানে না। দুঃখজনক হলেও সত্য যে পূর্বের অনুমোদিত সেটআপে কর্মকর্তাদের সংখ্যা ৭৯ ঠিক থাকছে। তবে শ্রমিক পূর্বের সংখ্যা থেকে ১১জন শ্রমিকে সমন্বয় করা হবে বলে জানা গেছে। ফলে ১১জন শ্রমিক কোন কোন বিভাগের তা এখন নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এখবর ছড়িয়ে পড়ার পর শ্রমিকদের মধ্যে চাপ উত্তেজোনা বিরাজ করছে। যেখানে বর্তমান সরকার বন্ধ পাটকল গুলো পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নিচ্ছে। সেখানে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন এর চেয়ারম্যান সাশ্রয় নীতির নামে শ্রমিক ছাটায়ের পায়তার করছে বলে কেরুজ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি হাফিজুল ইসলামসহ অন্যান্য নেত্রীবৃন্দ জানান। এছাড়া যেখানে সরকার দেশের পাটকল, ইস্পাত ও প্রকৌশলী, কেমিক্যাল, রেলওয়ে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা লোকশান হচ্ছে, সেখানে কোন সাশ্রয় নীতি করা হচ্ছে এবং শ্রমিক ছাটাই করা বা নীতি গ্রহন করছে না। তবে চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন কেন এ সাশ্রয় নীতি গ্রহন করছে। এছাড়া চিনিকলের মাঠ পর্যায় সিডিএ কুমিয়ে ১০০জনের স্থলে ৮৩ জন এবং ৩৫জন সিআইসি স্থলে সেটআপে আনা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কৃষকের কাছে যারা গিয়ে আখ চাষে উদ্বুদ্ধ করতো তাদের কুমিয়ে এনে আখ চাষও সংকুচিত করা হচ্ছে। ফলে বেশী বেশী আখ চাষ না হলে আগামীতে কেরু চিনিকল কিভাবে চলবে এ প্রশ্ন করেছে অনেকেই।
এদিকে কেরুজ শ্রমিকও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি তৈয়ব আলী জানান, অর্থের মুল্যে এবং চিনির মুল্যে মধ্যে সমঝোতা না থাকায় চিনিকলে লোকশান হচ্ছে। শ্রমিক নীতিমালায় সাশ্রয় নীতি বলে কিছু নেই। একজন শ্রমিকে ছুটির দিন কাজ করালে তার যদি ৮ ঘন্টা জায়গায় ৪ ঘন্টা ওভারটাইম দেয়া হয়, তাহলে শ্রমিকরা তাদের অধিার থেকে বঞ্চিত হবে। তা ছাড়া শ্রমিরা তাদের পরিশ্রমের ন্যায্য পাওনা না পেলে কাজের প্রতি আগ্রহ হারাবে বলে তিনি মনে করেন। ফলে উৎপাদন ব্যহত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান বলেন সাশ্রয় নীতির ফলে শ্রমিকরা তাদের সঠিক পাওনা ওটি ও ইনসেনটিভ থেকে বঞ্চিত হবে।
কেরুজ দায়িত্বশীল একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা জানান, একজন শ্রমিক প্রতি মাসে ওভারটাইম করে প্রায় ৩মাসের বেতন একমাসে তোলে। এছাড়া এ নীতি বাস্তবায়িত হলে লোকশান থেকে মিলকে অনেকাংশে লাভের দিকে যাবে। দুনীতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন ধীরে ধীরে এ বিষয়টি কুমিয়ে আনা হবে। এ নীতির ফলে একদিকে যেমন সাশ্রয় হবে অন্যদিকে মিলের লোকসান কুমে আসবে। সিআইসি ও সিডিএ পদের শ্রমিকদের সংকুচিত করা হচ্ছে কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন কিছু আখ ক্রয় কেন্দ্র আছে যেখানে আখের পরিমান কম থাকে। ফলে দুইটি কেন্দ্র একত্রিত্ব করে একজনের দায়িত্ব দেওয়ায় এসব পদ গুলোতে শ্রমিক সংখ্যা কুমে গেছে তিনি জানান।