দর্শনায় হাতুড়ে ডাক্তার আর নিন্মমানের ভেজাল ওষুধে স্বাস্থ্যসেবা হুমকীর সম্মুখীন বিশেষজ্ঞ সেজে রোগী দেখার প্রতারনামূলক বানিজ্য বেড়েছে সমহারে : সাধারণ মানুষ বিপাকে

- আপডেট সময় : ০১:৫৮:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৬ ৪৮৩ বার পড়া হয়েছে
দর্শনা অফিস: চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলাসহ দর্শনার শহরের হাট বাজারের ফার্মেসীতে মেয়াদউর্ত্তীর্ণ ভেজাল ও নিন্মমানের ওষুধ বিক্রির প্রবনতা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত থেকে চোরাইপথে আসা ওষুধের পাশাপাশি হাতুরে ডাক্তারা বিশেষজ্ঞ সেজে রোগী দেখার প্রতারনামূলক বানিজ্য বেড়েছে সমহারে। নামসর্বস্ব ওষুধ কোম্পানীর নিন্মমানের ওষুধ খেয়ে একদিকে রোগে হচ্ছে না। অপরদিকে আর্থিকভাবে প্রতারিত হচ্ছে এলাকার মানুষ। এত করে নামী-দামী কোম্পানীগুলোর ঔষধের সুনাম হারানোর পাশাপাশি তারা প্রতিনিয়ত ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জনবহুল উপজেলার দর্শনায় যত্রতত্র গড়ে উঠা ওষুধ বিক্রির দোকান ও হাতুড়ে ডাক্তারদের পরিচালিত তথাকতিথ চেম্বার কাম ক্লিনিকের কাছে এলাকার লোকজন জিম্মি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে দরিদ্র ও নি¤œ আয়ের লোকজন এদের প্রধান কাষ্টমার। উপজেলায় সরকারী হাসপাতাল থাকলেও সেখানে ডাক্তার ও ওষুধ সল্পতায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা বিমুখ নিরূপায়। ফলে এসব দরিদ্র লোকজন এ সকল হাতুরে ডাক্তারের শরনাপন্ন হয়ে থাকে। কথিত গ্রামীণ ডাক্তাররা পশু থেকে শুর” করে প্রসুতি মায়েদের জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা করে এসব দরিদ্র মানুষজনকে প্রায়ই মরনাপন্ন করে তুলছে। কোন কোন সময় অপচিকিৎসায় এসব ক্লিনিক ও হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে একাধিক মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। অপরদিকে ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রীয়া সর্ম্পকে এরা একেবারেই অজ্ঞ লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসী ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার লোভে ভারতীয় মেয়াদউত্তীর্ন বিভিন্ন ধরণের ট্যাবলেট, সিরাপ, শক্তিবর্ধক সালসা, নেশা জাতীয় সিরাপ, যৌন উত্তেজক ও গর্ভনষ্টের বড়ি দেদারছে বিক্রি করে চলেছে। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ডাক্তারের দেয়া ব্যবস্থাপনায় এদের কাছে নির”পায় হয়ে পড়ে। আরো খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে হাতে গোনা আন্তজার্তিক মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওষুধ বিক্রিতে যে পরিমান পার্সেন্টেস দেয়া হয় তার চেয়ে অখ্যাত কোম্পানীর ওষুধ সমগ্রী বিক্রি করলে লাভের পরিমান থাকে বহুগুন। ফলে লাভের আশায় এসব ব্যবসায়ীরা অখ্যাত কোম্পানীর নি¤œমানের ওষুধ বিক্রিতে বেশী আগ্রহী। অনেক সময় দেখা যায়, গ্রামের অশিক্ষিত লোকজন ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন নিয়ে ফার্মেসীতে গেলে ব্যবস্থাপত্রে লিখা ভালো কোম্পানীর ওষুধ বদলিয়ে তাদের হাতে তুলে দেয় অখ্যাত কোম্পানীর ওষুধ। এতে করে রোগমুক্তির পরিবর্তে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশী থাকে। তাছাড়া তথাকথিত ওষুধ কোম্পানীগুলো স্থানীয় যুবকদের বিশেষ কমিশন অফারে ওষুধ বিক্রির করার জন্য নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এতে স্থানীয় বেকার যুবকেরা ওষুধ কোম্পানীর অফার লুফে নিয়ে এসকল নি¤œমানের ওষুধ বিক্রির জন্য হাসপাতাল ও ক্লিনিক ডাক্তারদেরকে স্থানীয় প্রভাব খাটানোর পাশাপাশি বিশেষ লোভনীয় উপহার দিয়ে ব্যবস্থাপত্রে তাদের অখ্যাত কোম্পানীর ওষুধ লিখতে বাধ্য করে। এ কুফলে স্বাস্থ্যসেবার নামে জনভোগান্তির পাশাপাশি নামীদামী কোম্পানীগুলো তাদের ব্যবসা হারাচ্ছে। এছাড়া সাধারণ মানুষের শারিরীক দুর্বলতাকে পুজি করে গ্রামগঞ্জের ফার্মেসী ও হাতুড়ে ডাক্তাররা বিভিন্ন হায় হায় ওষুধ কোম্পানীর পানি সর্বস্ব বৃহদাকার টনিকের বোতল চড়া দামে বিক্রি করে কামিয়ে নিচ্ছে কাঁচা পয়সা। গর্ভ নষ্ট করতে ভারতীয় গাইনোকোসাইড, লুজাইনোকোসাইড, মানব শরীর মোটাতাজা করণের ট্যাবলেট ডেক্সোমেশান ও যৌন দুর্বলতায় এডিগ্রা, বিডেগ্রা, পাওয়ারম্যান নামীয় ডাক্তারীমতে মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হরেক রকম ট্যাবলেট উচ্চ মূল্যে এ সকল ফার্মেসী গুলোতে দেদারছে বিক্রি করা হচ্ছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সর”প এ ব্যবসা বন্ধের জন্য মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমান আদলত ফার্মেসীগুলোতে অভিযান চালানোর পর কদিন বন্ধ থাকলেও পুনরায় এ ব্যবসা পুরোদমে চালু করা হয়। ফলে এলাকাবাসীর দাবী মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে এসব ব্যবস্থাপনা ও হাতুড়ে ডাক্তারদের বির”দ্ধে পদক্ষেপ গ্রহন করা জর”রী হয়ে পড়েছে বলে ভুক্তভোগী রোগীরা জানান।