বন্ধ হোক ব্যাংক জালিয়াতি : নজরদারি বাড়াতে হবে

- আপডেট সময় : ১২:৪৬:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ অগাস্ট ২০১৬ ৪৮৬ বার পড়া হয়েছে
ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম-জালিয়াতি কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না। এটি যেন এ খাতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভুয়া ও জাল দলিল দিয়ে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করছে সুসংবদ্ধ অপরাধীরা। সরকারের কঠোর নির্দেশনার পরও ঋণ জালিয়াতির ইতি ঘটছে না। জালিয়াতির সঙ্গে ব্যাংকের পর্ষদ সদস্য, কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক ১৫টি ব্যাংকে পর্যবেক্ষক বসিয়েও তা থামাতে পারছে না। ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে গত কয়েক বছরে ব্যাংক থেকে লোপাট হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি। ব্যাংক থেকে যে ঋণ দেওয়া হয় তা প্রকৃত অর্থে ব্যাংকে অর্থ আমানতকারী সাধারণ মানুষের টাকা। এ অর্থ যাতে লোপাট না হয় তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি সব ব্যাংক বিশেষ পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি এসব ব্যাংকের ঝুঁকিপূর্ণ শাখাগুলোকে নিবিড় তদারকির আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু ব্যাংকের কর্তাব্যক্তিরাই যেখানে ঋণ লোপাটের নেপথ্যে জড়িত সেখানে এসব তদারকি কতটা সুফল দেবে তা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক প্রভাবের অপব্যবহার করে ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ভুয়া কাগজপত্র জমা দিয়ে ঋণ অনুমোদন করিয়ে নিচ্ছে সুসংবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্যরা। অনেক সময় ব্যাংক পর্ষদের অনুমতি নিয়ে ঋণ অনুমোদনের নিয়মও মানা হচ্ছে না। ঋণ দেওয়ার পর পর্ষদ সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হয়, ফলে কারোর কিছু করারও থাকে না। পরবর্তী সময়ে ঋণ পরিশোধে ঋণগ্রহীতা টালবাহানা করলে মর্টগেজে রাখা তার সম্পত্তি নিলামে দেওয়ার ব্যবস্থা নিলে বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। এরপর সে টাকা আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় না সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পক্ষে। ফলে সেগুলোকে খেলাপি হিসেবে দেখানো হয়। জালিয়াতির ঘটনাকে খেলাপি ঋণ হিসেবে দেখিয়ে কার্যত সে জঘন্য অপরাধকে ধামাচাপা দেওয়া হয়। প্রায় সব বেসরকারি ব্যাংকে এ ধরনের জালিয়াতির ঘটনা অহরহ ঘটছে। দেশের আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় বিদ্যমান ‘এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই’ অধ্যায়ের অবসান ঘটাতে হবে। ব্যাংকগুলোর ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি বাড়াতে হবে। রাজনৈতিকভাবে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গঠনের প্রচলিত পদ্ধতির অবসান ঘটাতে হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক কোনো দল নয় জনগণের সম্পত্তি এই সহজ সত্যটি কর্তাব্যক্তিদের উপলব্ধিতে আসাও জরুরি।