চুয়াডাঙ্গা ১২:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৯ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কালিদাসপুর স্টুডিও’র মধ্যে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে গণধোলাই নাগদাহ ও খাসকররা ইউনিয়ন আ.লীগের কর্মী সভায় এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার কলেজিয়েট স্কুলের উপাধ্যক্ষ শামিম রেজার ৫২তম জন্মবার্ষিকী পালন বারাদী ইউনিয়নে গণসংযোগ, পথসভা ও লিফলেট বিতরণকালে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে স্বেচ্ছাসেবকদের বিরুদ্ধে রোগীর স্বজনের অভিযোগ আলমডাঙ্গায় পুত্রবধূর বটির কোপে শাশুড়ি জখম বাংলাদেশিদের ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া নিউজিল্যান্ডের কাছে বড় ব্যবধানে হারলো বাংলাদেশ মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে পুলিশ-আমলা-বিচারাঙ্গন সবার মধ্যে আতঙ্ক আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা

আড়াই যুগ আগে পথ ভুলে এসেছিল দামুড়হুদার হোগলডাঙ্গায়

৩১ বছর পর হারেজ ফিরল আপন ঠিকানায়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:২৭:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪ বার পড়া হয়েছে

???????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????

সময়ের সমীকরণ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:
‘কী করে ঠেকাবো তোমাকে, নাইকো তোমার সাথে নাড়ি ছেড়ার বন্ধন’। ৩১ বছর যত্নে রাখার পর তুলে দিতে হলো তোমার আপন ঠিকানায়। দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদাহ ইউনিয়নের হোগলডাঙ্গা গ্রামের সোনাহার মন্ডলের কুড়িয়ে পাওয়া হারেজকে ৩১ বছর পর তার বোনের হাতে তুলে দিলেন সোনাহার মন্ডল। গতকাল শনিবার বেলা তিনটার দিকে হারেজের বোন নুরজাহান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহেলা ও নিকটতম আত্মীয়-স্বজন তাকে সাথে করে নিয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়।

জানা যায়, ১৯৯২ সালে মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার সাইংজুরি গ্রামের মৃত চেনু মন্ডলের ছেলে হারেজ উদ্দীন পথভুলে হোগলডাঙ্গা গুচ্ছপাড়ায় বাউল গান তোলায় বিধস্ত কাপড় পরিধান অবস্থায় ঘুরাঘুরি করছিলেন। এমন সময় হোগলডাঙ্গা গ্রামের মৃত আছির উদ্দীনের ছেলে সোনাহার মন্ডল তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। সেই থেকেই সোনাহার মন্ডলের বাড়িয়ে বসবাস করে আসছিলেন। হারেজের কথা স্পষ্ট না হওয়ায় এতদিন তার পরিবারের খোঁজ মেলেনি। কিছুদিন আগে হারেজকে বাবার নাম, গ্রামের না বলতে শোনা যায়। সে কথা ধরে সোনাহার মন্ডলের ছেলে মতিয়ার রহমান বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়াল খানের সাথে মুঠোফোনে আলাপ করলে পরিচয় মেলে। পরে হারেজের আপন বোন নুরজাহান খাতুন, ঘিওর উপজেলার মাহেলা খাতুন, বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মকবুল হোসেনসহ এলাকার গণমান্য ব্যক্তিরা এসে হারেজকে নিয়ে যায়।

এসময় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহেলা খাতুন বলেন, ‘সাইংজুরিপুর গ্রামের হারেজ ১৯৯২ সালে হারিয়ে যায়। আমরা ও তার পরিবারের লোকজন মনে করেন হারেজ মারা গেছে। এতদিন পার হলেও কোনো খোঁজখবর পাওয় যায়নি। যখন শুনলাম হারেজকে পাওয়া গেছে, তখন আনন্দে চলে আসলাম। এখানে সোনাহার ভাই খুব ভালো মানুষ। হারেজকে নিজের ছেলের মতো রেখেছিলেন।’

বালিখোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন বলেন, ‘সোনাহার মন্ডলের ছেলে মতিয়ার রহমান আমাকে ফোন করে হারেজের কথা জিজ্ঞাসা করলেই আমি চিনতে পারি। পরে তাদের পরিবােের সাথে যোগাযোগ করে হারেজকে নিতে আসি।’ হারেজের বোন নুরজাহান বলেন, ‘আমার ভাইকে খুঁজে পাবো কখনও ভাবিনি। আল্লাহর অশেষ কৃপার আমার ভাইকে খুঁজে পেয়েছি। আমার আব্বা বেঁচে নেই। ভাইটাকে খুঁজে পেয়ে আমরা খুব খুশি হয়েছি। আর আমার সোনাহার ভাইকে ধন্যবাদ, আমার ভাইকে এতদিন দেখে রাখার জন্য।’

এলাকাবাসী জানায়, ‘দীর্ঘদিন হারেজ এই গ্রামে থাকেন। আমারা তাকে নিয়ে অনেক মজা করেছি। আমাদের অনেক গান শুনিয়েছে। গ্রামের সব বাড়ি যাওয়া তার অনুমতি আছে। সবাই হারেজকে অনেক ভালোবাসতো।’ সোনাহার মন্ডল বলেন, ‘কী বলব, হারেজ চলে যাওয়ায় আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে। সে একটু বোঝে কম। কথা ঠিকমত বলতে পারে না। সেই ১৯৯২ সাল থেকে তার পায়খানা পরিস্কার করেছি। আমি যা খেয়েছি, তাকে তাই খাইয়েছি। কী করে বুঝাবো এ ব্যথা।’

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

আড়াই যুগ আগে পথ ভুলে এসেছিল দামুড়হুদার হোগলডাঙ্গায়

৩১ বছর পর হারেজ ফিরল আপন ঠিকানায়

আপডেট সময় : ০৮:২৭:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:
‘কী করে ঠেকাবো তোমাকে, নাইকো তোমার সাথে নাড়ি ছেড়ার বন্ধন’। ৩১ বছর যত্নে রাখার পর তুলে দিতে হলো তোমার আপন ঠিকানায়। দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদাহ ইউনিয়নের হোগলডাঙ্গা গ্রামের সোনাহার মন্ডলের কুড়িয়ে পাওয়া হারেজকে ৩১ বছর পর তার বোনের হাতে তুলে দিলেন সোনাহার মন্ডল। গতকাল শনিবার বেলা তিনটার দিকে হারেজের বোন নুরজাহান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহেলা ও নিকটতম আত্মীয়-স্বজন তাকে সাথে করে নিয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়।

জানা যায়, ১৯৯২ সালে মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার সাইংজুরি গ্রামের মৃত চেনু মন্ডলের ছেলে হারেজ উদ্দীন পথভুলে হোগলডাঙ্গা গুচ্ছপাড়ায় বাউল গান তোলায় বিধস্ত কাপড় পরিধান অবস্থায় ঘুরাঘুরি করছিলেন। এমন সময় হোগলডাঙ্গা গ্রামের মৃত আছির উদ্দীনের ছেলে সোনাহার মন্ডল তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। সেই থেকেই সোনাহার মন্ডলের বাড়িয়ে বসবাস করে আসছিলেন। হারেজের কথা স্পষ্ট না হওয়ায় এতদিন তার পরিবারের খোঁজ মেলেনি। কিছুদিন আগে হারেজকে বাবার নাম, গ্রামের না বলতে শোনা যায়। সে কথা ধরে সোনাহার মন্ডলের ছেলে মতিয়ার রহমান বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়াল খানের সাথে মুঠোফোনে আলাপ করলে পরিচয় মেলে। পরে হারেজের আপন বোন নুরজাহান খাতুন, ঘিওর উপজেলার মাহেলা খাতুন, বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মকবুল হোসেনসহ এলাকার গণমান্য ব্যক্তিরা এসে হারেজকে নিয়ে যায়।

এসময় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহেলা খাতুন বলেন, ‘সাইংজুরিপুর গ্রামের হারেজ ১৯৯২ সালে হারিয়ে যায়। আমরা ও তার পরিবারের লোকজন মনে করেন হারেজ মারা গেছে। এতদিন পার হলেও কোনো খোঁজখবর পাওয় যায়নি। যখন শুনলাম হারেজকে পাওয়া গেছে, তখন আনন্দে চলে আসলাম। এখানে সোনাহার ভাই খুব ভালো মানুষ। হারেজকে নিজের ছেলের মতো রেখেছিলেন।’

বালিখোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন বলেন, ‘সোনাহার মন্ডলের ছেলে মতিয়ার রহমান আমাকে ফোন করে হারেজের কথা জিজ্ঞাসা করলেই আমি চিনতে পারি। পরে তাদের পরিবােের সাথে যোগাযোগ করে হারেজকে নিতে আসি।’ হারেজের বোন নুরজাহান বলেন, ‘আমার ভাইকে খুঁজে পাবো কখনও ভাবিনি। আল্লাহর অশেষ কৃপার আমার ভাইকে খুঁজে পেয়েছি। আমার আব্বা বেঁচে নেই। ভাইটাকে খুঁজে পেয়ে আমরা খুব খুশি হয়েছি। আর আমার সোনাহার ভাইকে ধন্যবাদ, আমার ভাইকে এতদিন দেখে রাখার জন্য।’

এলাকাবাসী জানায়, ‘দীর্ঘদিন হারেজ এই গ্রামে থাকেন। আমারা তাকে নিয়ে অনেক মজা করেছি। আমাদের অনেক গান শুনিয়েছে। গ্রামের সব বাড়ি যাওয়া তার অনুমতি আছে। সবাই হারেজকে অনেক ভালোবাসতো।’ সোনাহার মন্ডল বলেন, ‘কী বলব, হারেজ চলে যাওয়ায় আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে। সে একটু বোঝে কম। কথা ঠিকমত বলতে পারে না। সেই ১৯৯২ সাল থেকে তার পায়খানা পরিস্কার করেছি। আমি যা খেয়েছি, তাকে তাই খাইয়েছি। কী করে বুঝাবো এ ব্যথা।’