আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে দলের নেতারা
ষড়যন্ত্র করে সরকারের পতন ঘটানো যাবে না

- আপডেট সময় : ১২:৫৬:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৫ বার পড়া হয়েছে
সমীকরণ প্রতিবেদন:
সরকারের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি যড়যন্ত্র চলছে। যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের বলব, এই সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে পতন ঘটানো যাবে না। বিদেশি যারা গণতন্ত্রের কথা বলে, মানবতার কথা বলে তারা এই ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে থাকবে না। আশা করি, সকল দল নির্বাচনে অংশ নেবে। নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। বিএনপি-জামায়াতের অশুভ তৎপরতা নসাৎ করে দিয়ে শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনব।’ শুক্রবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে’র প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশ এসব কথা বলেন দলের নেতারা।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ডক্টর আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘হেফাজত নিয়ে মিথ্যাচার করেছে। কিছু সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, কিছু লবিষ্ট, বিএনপি-জামায়াত ধর্মান্ধদের টাকা খেয়ে মিথ্যা রিপোর্ট দেয়। গেন আদিলুর রহমান টাকা খেয়ে মিথ্যা রিপোর্ট দিয়ে বিদেশিদের বিভ্রান্ত করে।’ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিএনপি’র ভাষায় আরেকটি রেজুলেশন তারা নিয়েছে। আপনারা বাংলাদেশে টিম পাঠান। আপনারা বলেছেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার নাই, কথা বলার অধিকার নাই, মানবাধিকার হুমকির মুখে। মানবাধিকার কি শুধু মিথ্যাচার করা? আপনারা সংখ্যালঘুদের সাথে কথা বলেন। বাংলাদেশের দুই-এক ভাগ সংখ্যালঘু যদি বলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাদেরকে নিরাপত্তা দেয় নাই, সবচেয়ে ভালো অবস্থানে নাই, আমরা এ দেশে সরকারে থাকব না।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে এমপি হিসেবে বলছি, এদেশে হিন্দু, খ্রিষ্টান, গারো, চাকমা প্রতিটি মানুষের এই সংখ্যালঘুদের ৯৯ ভাগ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। তারা আওয়ামী লীগের পক্ষে তাদের অধিকার সবচেয়ে বেশি থাকে। নাগরিক হিসেবে সবচেয়ে বেশি অধিকার ভোগ করে।’ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এই সদস্য বলেন, ২০১৩ সালে ৫ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে হেফাজত সমাবেশ করেছিল। আমি সেদিন খাদ্য ও ত্রাণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বে ছিলাম। খুব কাছে থেকে দেখেছি, তাদেরকে খুব অনুরোধ করেছিলাম সমাবেশ শেষ করতে, সন্ধ্যার দিকে সরকারের কাছে খবর আসলো তারা সমাবেশ থেকে উঠে যাবে না। রাতের মধ্যে তারা গণভবন ঘেরাও করে, সচিবালক ঘেরাও করে, তারা সরকারের পতন ঘটাবে। রাত আটটার দিকে কি দেখেছিলাম? খালেদা জিয়া বিবৃতি দিয়ে জানাল বিএনপির নেতারা হেফাজতের পাশে দাঁড়াতে। এরশাদ ফ্রিজের ঠান্ডা পানি নিয়ে হেফাজতের পাশে দাঁড়ালেন। খাবার নিয়ে দাঁড়ালেন। সারা দেশ আতঙ্কগ্রস্ত। গণভবন ঘেরাও হবে কিনা? সচিবালয় ঘেরাও হবে কিনা? হেফাজতের কে প্রধানমন্ত্রী হবেন? নাকি বিএনপি’র কাছে দিবে ক্ষমতা। এমন এক পরিস্থিতি। আপনারা নিশ্চয়ই ভুলে যান নাই, রাত তিনটার মধ্যে শাপলা চত্বর পরিষ্কার হয়েছিল। সেখানে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছিল ঢাকা মহানগরের নেতারা।
হেফাজতের সেই সমাবেশে ৬১ জন মানুষ মারা গেছে, এর চাইতে বড় মিথ্যাচার আর কি হতে পারে? সে মিথ্যাবাদী যদি বিচার হয় আইনে, সেটা কি অন্যায়? তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটানা আন্দোলন সংগ্রাম করছে। একই দাবি নিয়ে ‘১৩ সাল থেকে শুরু করেছে, শেখ হাসিনা পালাবার পথ পাবে না, একই কথা বারবার বলছে, শেখ হাসিনার পতন না হলে তারা কোনো নির্বাচনে যাবে না।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, মির্জা ফখরুলের এখন আর হাসিখুশি মুখ নেই। স্যাংশন ভিসা নীতি করে ভেবেছিল, তারা ক্ষমতায় এসে গেছেন। কিন্তু এখন মুখ শুকিয়ে গেছে। বিএনপি ভেবেছিল হেফাজতের সমাবেশ যোগ দিয়ে সরকার পতন হবে। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় ফটোগ্রাফার শহিদুল আলমের আল-জাজিরায় সাক্ষাৎকার নিয়ে সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি বলেন, শহিদুল আলম একাত্তরের পরাজিত শক্তির বংশধর। তিনি রাজাকার সবুর খানের ভাগ্নে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশ আরো বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ প্রমুখ।