চুয়াডাঙ্গা ০১:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৯ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কালিদাসপুর স্টুডিও’র মধ্যে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে গণধোলাই নাগদাহ ও খাসকররা ইউনিয়ন আ.লীগের কর্মী সভায় এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার কলেজিয়েট স্কুলের উপাধ্যক্ষ শামিম রেজার ৫২তম জন্মবার্ষিকী পালন বারাদী ইউনিয়নে গণসংযোগ, পথসভা ও লিফলেট বিতরণকালে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে স্বেচ্ছাসেবকদের বিরুদ্ধে রোগীর স্বজনের অভিযোগ আলমডাঙ্গায় পুত্রবধূর বটির কোপে শাশুড়ি জখম বাংলাদেশিদের ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া নিউজিল্যান্ডের কাছে বড় ব্যবধানে হারলো বাংলাদেশ মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে পুলিশ-আমলা-বিচারাঙ্গন সবার মধ্যে আতঙ্ক আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা

বিনিয়োগে স্থবিরতা কাটছে না; চীনা বিনিয়োগই ভরসা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:০৪:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১৮ বার পড়া হয়েছে
সময়ের সমীকরণ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দেশে অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগে এক ধরনের স্থবিরতা চলছে। সম্প্রতি ডলার সঙ্কট ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এর অন্যতম কারণ। আসলে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এ পরিস্থিতি চলছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের বেশির ভাগ হচ্ছে চীনা বিনিয়োগে। অবস্থা এমন দাঁড়াচ্ছে যে, ক্রমেই চীন আমাদের অর্থনীতির অবিকল্প ভরসার জায়গা হয়ে উঠছে। গত শনিবার বিনিয়োগ বিষয়ে এক সেমিনারের আয়োজন করে ঢাকার চীনা দূতাবাস ও বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিসিআই)। তাতে বলা হয়, বিনিয়োগকারীরা গ্যাসের সংযোগ পাচ্ছেন না। জমি কেনা ও লিজ নিতে সমস্যায় পড়ছেন, বিদেশী কর্মী ও উদ্যোক্তাদের ওয়ার্ক পারমিট এক্সটেনশন পেতে দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে ইত্যাদি। সেই সাথে আছে এলসি খোলার জটিলতা, অর্থাৎ ডলারের অপর্যাপ্ততা। সেমিনারে তিতাস গ্যাসের পক্ষ থেকে গ্যাস সরবরাহে সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বলা হয়, পেট্রোবাংলা সঙ্কট দূর করতে এলএনজি আমদানি ও এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের চেষ্টা করছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে গ্যাস সংযোগ দেয়া শুরু করা যাবে। বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে প্রবন্ধে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মহাপরিচালক বলেন, বিনিয়োগে সবচেয়ে বেশি দরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, ট্যাক্স অব্যাহতি সুবিধা ও অন্যান্য ইস্যু, যার সব কিছু বাংলাদেশে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ ইনভেস্টমেন্ট ডিপার্টমেন্টের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা এলসি খোলার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা দেখছি। এ বিষয়ে আমরা ব্যাংকগুলোর সাথে আলোচনা করব। আশা করছি, দ্রুত সমাধান হবে। বিডার ডিজি উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন, বিসিকের শিল্পনগরী কিংবা হাইটেক পার্ক অথরিটি থেকে জমি কেনার পরামর্শ দেন। বিসিসিসিআইয়ের সেক্রেটারি জেনারেল আল মামুন মৃধা বলেন, ২০১৯ সাল পর্যন্ত চীন ছিল বাংলাদেশে একক সর্বোচ্চ বিনিয়োগকারী। পরের কয়েক বছর চীনা বিনিয়োগ কম এলেও এখন অনেক বিনিয়োগ আসছে। তিনি বলেন, চীনা বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে বিদ্যমান রিজার্ভ সঙ্কট মোকাবেলা করা সহজ হবে। সেমিনারের আলোচনায় যেসব তথ্য উঠে এসেছে, তার সাথে অনেক ক্ষেত্রে বাস্তবতার মিল নেই। দেশে ব্যাংক খাতের যে পর্যুদস্ত অবস্থা, দেশী বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা, সর্বব্যাপী দুর্নীতির রাহুগ্রাস এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মতো বিষয়গুলো স্পর্শ করা হয়নি। অথচ ২০২১ সালে আমাদের বিনিয়োগ পরিস্থিতি সম্পর্কিত যুক্তরাষ্ট্রের এক রিপোর্টে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মোট ১২টি বাধা চিহ্নিত করা হয়; যার অন্যতম ছিল- দুর্নীতি, আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, সীমিত অর্থায়নের সুযোগ ও শ্রম আইনের শিথিল প্রয়োগ ইত্যাদি। আমাদের বিবেচনায়, ২০২১ সালের পর অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিশাল তোড়জোড় দেখা গেলেও বাস্তব অগ্রগতি সামান্য। তার প্রমাণ, বিদ্যুৎ খাতে লাখ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরও অব্যাহত লোডশেডিং ও বিপুল মানিলন্ডারিং। বিশেষজ্ঞরা অনেক আগে থেকে বলে আসছেন, এলএনজি আমদানি করে জ্বালানি সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। বিদ্যমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি ছাড়া বিনিয়োগে স্থবিরতা কাটবে না। এমন পরিস্থিতিতে সম্ভবত চীনের বিনিয়োগের ওপরে বাংলাদেশকে ভরসা করতে হবে। এর বিকল্প আপাতত দেখা যাচ্ছে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বিনিয়োগে স্থবিরতা কাটছে না; চীনা বিনিয়োগই ভরসা

আপডেট সময় : ০১:০৪:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

দেশে অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগে এক ধরনের স্থবিরতা চলছে। সম্প্রতি ডলার সঙ্কট ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এর অন্যতম কারণ। আসলে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এ পরিস্থিতি চলছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের বেশির ভাগ হচ্ছে চীনা বিনিয়োগে। অবস্থা এমন দাঁড়াচ্ছে যে, ক্রমেই চীন আমাদের অর্থনীতির অবিকল্প ভরসার জায়গা হয়ে উঠছে। গত শনিবার বিনিয়োগ বিষয়ে এক সেমিনারের আয়োজন করে ঢাকার চীনা দূতাবাস ও বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিসিআই)। তাতে বলা হয়, বিনিয়োগকারীরা গ্যাসের সংযোগ পাচ্ছেন না। জমি কেনা ও লিজ নিতে সমস্যায় পড়ছেন, বিদেশী কর্মী ও উদ্যোক্তাদের ওয়ার্ক পারমিট এক্সটেনশন পেতে দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে ইত্যাদি। সেই সাথে আছে এলসি খোলার জটিলতা, অর্থাৎ ডলারের অপর্যাপ্ততা। সেমিনারে তিতাস গ্যাসের পক্ষ থেকে গ্যাস সরবরাহে সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বলা হয়, পেট্রোবাংলা সঙ্কট দূর করতে এলএনজি আমদানি ও এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের চেষ্টা করছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে গ্যাস সংযোগ দেয়া শুরু করা যাবে। বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে প্রবন্ধে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মহাপরিচালক বলেন, বিনিয়োগে সবচেয়ে বেশি দরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, ট্যাক্স অব্যাহতি সুবিধা ও অন্যান্য ইস্যু, যার সব কিছু বাংলাদেশে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ ইনভেস্টমেন্ট ডিপার্টমেন্টের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা এলসি খোলার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা দেখছি। এ বিষয়ে আমরা ব্যাংকগুলোর সাথে আলোচনা করব। আশা করছি, দ্রুত সমাধান হবে। বিডার ডিজি উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন, বিসিকের শিল্পনগরী কিংবা হাইটেক পার্ক অথরিটি থেকে জমি কেনার পরামর্শ দেন। বিসিসিসিআইয়ের সেক্রেটারি জেনারেল আল মামুন মৃধা বলেন, ২০১৯ সাল পর্যন্ত চীন ছিল বাংলাদেশে একক সর্বোচ্চ বিনিয়োগকারী। পরের কয়েক বছর চীনা বিনিয়োগ কম এলেও এখন অনেক বিনিয়োগ আসছে। তিনি বলেন, চীনা বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে বিদ্যমান রিজার্ভ সঙ্কট মোকাবেলা করা সহজ হবে। সেমিনারের আলোচনায় যেসব তথ্য উঠে এসেছে, তার সাথে অনেক ক্ষেত্রে বাস্তবতার মিল নেই। দেশে ব্যাংক খাতের যে পর্যুদস্ত অবস্থা, দেশী বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা, সর্বব্যাপী দুর্নীতির রাহুগ্রাস এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মতো বিষয়গুলো স্পর্শ করা হয়নি। অথচ ২০২১ সালে আমাদের বিনিয়োগ পরিস্থিতি সম্পর্কিত যুক্তরাষ্ট্রের এক রিপোর্টে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মোট ১২টি বাধা চিহ্নিত করা হয়; যার অন্যতম ছিল- দুর্নীতি, আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, সীমিত অর্থায়নের সুযোগ ও শ্রম আইনের শিথিল প্রয়োগ ইত্যাদি। আমাদের বিবেচনায়, ২০২১ সালের পর অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিশাল তোড়জোড় দেখা গেলেও বাস্তব অগ্রগতি সামান্য। তার প্রমাণ, বিদ্যুৎ খাতে লাখ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরও অব্যাহত লোডশেডিং ও বিপুল মানিলন্ডারিং। বিশেষজ্ঞরা অনেক আগে থেকে বলে আসছেন, এলএনজি আমদানি করে জ্বালানি সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। বিদ্যমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি ছাড়া বিনিয়োগে স্থবিরতা কাটবে না। এমন পরিস্থিতিতে সম্ভবত চীনের বিনিয়োগের ওপরে বাংলাদেশকে ভরসা করতে হবে। এর বিকল্প আপাতত দেখা যাচ্ছে না।