দামুড়হুদায় সরকারি ওষুধ বিক্রি হচ্ছে খোলাবাজারে!

- আপডেট সময় : ০১:৫৩:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৪৭ বার পড়া হয়েছে
প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:
দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী সাধারণের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারিভাবে বিতরণকৃত ওষুধ বিভিন্ন ওষুধের দোকানে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এমন চিত্র নতুন কিছু নয়, অতীতেও দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কতিপয় এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী এসব সরকারি সম্পত্তি অর্থের বিনিময়ে বাইরে বিক্রি করে আসছেন।
তথ্য সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুর্ঘটনাবশত উপজেলার উজিরপুর মাঠপাড়ার আব্দুর রশিদের (৫৫) পা কেটে যায়। তিনি ওই গ্রামের স্কুলপাড়ার গ্রাম্য চিকিৎসক আমির হোসেনের কাছে চিকিৎসার জন্য গেলে তিনি তার পায়ে পায়ে চারটি সেলাই দেন। সেলাই শেষে রোগীকে ইসোরাল ক্যাপসুল, অ্যান্টিবায়োটিক সেফিক্সিম-২০০ ও ব্যাথানাশক কিটোরোলাক ওষুধগুলো প্রদান করেন এবং মূল্য বাবদ ওই রোগীর নিকট থেকে সাড়ে ৪ শ টাকা নেন। গ্রাম্য চিকিৎসক আমির হোসেনের নিকট থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরেও পায়ের ব্যথা না কমায় আব্দুর রশিদ দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যান। এসময় তিনি হাসপাতাল সংলগ্ন তাঁর আত্মীয়ের কাছে অসুস্থতার বিষয়ে খুলে বললে গ্রামের ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ খেয়েও কাজ হচ্ছে না জানান। ওই সময় রোগীর আত্মীয় ওষুধগুলো দেখতে চান। আব্দুর রশিদ ওষুধগুলো দেখালে তিনি জানতে পারেন এগুলো সব সরকারি ওষুধ।
হাসপাতালের কয়েকজন রোগী অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য রোগীদের মধ্যে সরকারি সম্পত্তির ওষুধ বিতরণ করে যাচ্ছে। অথচ এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী বিনামূল্যে বিতরণকৃত সরকারি ওষুধ খোলাবাজারে বিক্রি করছে। দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা আরও কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজনেরা দাবি করেন, অত্র হাসপাতালে শুধু চুরি করে ওষুধ পাচারের অভিযোগই নয়, সন্ধ্যা হলে কোনো রোগী চিকিৎসা নিতে আসলে সঠিক চিকিৎসাও মেলে না।
এ বিষয়ে পল্লী চিকিৎসক আমির হোসেন বলেন, ‘আমার মায়ের পা ভেঙ্গে গিয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার মায়ের এই ওষুধগুলি দিয়েছিলেন। পরে ওষুধগুলো আর না লাগায় নিজ গ্রামের একজন আমার কাছে চিকিৎসা নিতে এলে ওষুধগুলো তাকে দিয়েছি। তবে ওষুধগুলোর জন্য টাকা নিইনি।’
এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা হেলেনা আক্তার নিপা বলেন, ‘যিনি ওষুধ বিক্রি করেছেন, তার কাছ থেকে জানতে হবে ওষুধগুলো কোথা থেকে পেয়েছে। কারণ ওষুধ বিভিন্ন জায়গা থেকে চুরি হয়, জেলার বাইরে থেকেও চুরি হচ্ছে।’ একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে সরকারের সম্পত্তি খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে, এ বিষয়টি কেমন ভাবে দেখছেন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. হেলেনা আক্তার নিপা বলেন, ‘সরকারি সম্পত্তি বাইরে পাওয়া গেছে, আপনারা ধরেছেন এর জন্য ধন্যবাদ। তবে ওই চিকিৎসক কোথা থেকে ওষুধগুলো কিনছে, তা জানতে পারলে আমাদের জন্য ভালো হতো। আমাদের হাসপাতালের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।’