ইসলামে ঐক্যের তাগিদ

- আপডেট সময় : ১২:১৫:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ অগাস্ট ২০১৬ ৪০৫ বার পড়া হয়েছে
ধর্ম ডেস্ক: ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। ইহকাল-পরকালের সুখ, শান্তি, নিরাপত্তা ও সর্বপ্রকার মঙ্গলের ব্যবস্থাপত্র কোরানে কারিম। মানুষের জীবনের সার্বিক এবং সর্বোৎকৃষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে কোরানে। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘হে ঈমানদাররা তোমরা সবাই আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ়হস্তে ধারণ করো… পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না’ সূরা আল ইমরান : ১০৩। কোরান অথবা দ্বীনকে ‘রজ্জু’ বলার কারণ এই যে, এটা একদিকে আল্লাহতায়ালার সঙ্গে বিশ্বাসী মানুষের সম্পর্ক সৃষ্টি করে এবং অন্য দিকে বিশ্বাস স্থাপনকারীদের পরস্পর ঐক্যবদ্ধ করে একদলে পরিণত করে। আর আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ করেই জাতি অজ্ঞতার ও কুসংস্কারের অন্ধকার পেরিয়ে আলোর সন্ধান পেতে, ইহলৌকিক ও পারলৌকিক সার্বিক উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছতে পারে। বর্ণিত আয়াতে মুসলমানদের জাতিগত শক্তির ভিত্তি হিসেবে ঐক্যকে উল্লেখ করে পরস্পরে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং বিভেদ ও বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করতে নিষেধ করা হয়েছে। আসলে ঐক্য ও মৈত্রী যে প্রশংসনীয় ও কাম্য, তাতে দুনিয়ার জাতি-ধর্ম ও দেশ-কাল-নির্বিশেষে সব মানুষই একমত। এতে দ্বিমতের কোনো অবকাশ নেই। পৃথিবীর কোথাও এমন কোনো ব্যক্তি নেই যে যুদ্ধবিগ্রহ, অশান্তি-হানাহানি ও বিবাদ-বিসংবাদকে উপকারী ও ভালো মনে করে। এ কারণে বিশ্বের সব দল ও গোত্রই জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার আহ্বান জানায়। ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেও কিন্তু মানবজাতি বিভিন্ন দল-উপদল ও গোষ্ঠীতে বিভক্ত। এ কারণেই কোরানে ঐক্য গঠনের পাশাপাশি তা অটুট রাখার একটি ন্যায়ানুগ মূলনীতি বলা হয়েছে। মুসলমানেরা একমত হয়ে গেলে হাজারো দলগত, বর্ণগত ও অঞ্চলগত বিরোধ এক নিমিষে শেষ হয়ে যাবে। অনৈক্য মানবতার উন্নতির পথে প্রতিবন্ধকস্বরূপ। মতভেদ সীমার ভেতরে থাকলে তা নিন্দনীয় ও সমাজ-জীবনের পক্ষে ক্ষতিকর নয়; বরং জ্ঞানীদের মধ্যে মতভেদ থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু দল-উপদলগুলো যদি কোরানি ব্যবস্থা থেকে সরে গিয়ে পরস্পর লড়াই করতে থাকে, তখন মতবিরোধ ও কলহ-বিবাদের কোনো প্রতিকার থাকবে না। এ ধরনের মতানৈক্য ও বিভেদকেই কোরানে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এ কোরানি মূলনীতিকে পরিত্যাগ করার কারণেই গোটা মুসলিম সমাজ শতধাবিভক্ত হয়ে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে চলছে। আলোচ্য আয়াতে এ বিভেদ মেটানোর অমোঘ ব্যবস্থা এভাবে বর্ণিত হয়েছে ‘আল্লাহর রজ্জুকে সবাই মিলে সুদৃঢ়ভাবে ধারণ করো।’