এক স্কুলে দুই প্রধান শিক্ষক!

- আপডেট সময় : ০৩:২৮:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০১৭ ৩৬৭ বার পড়া হয়েছে
ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার ১৩৩ নং নিশ্চিন্তপুর ভুষণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২জন প্রধান শিক্ষক (একজন প্রধান শিক্ষক অপরজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষক-, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির সভাপতির মধ্যে ত্রমিুখি দ্বন্দের কারনে গত ২ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেনা বিদ্যালয়ের ৪জন শিক্ষক। সভাপতি শিক্ষকদের মাসিক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর না করায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে ব্যাংকের হিসাব স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যাংক কর্মকর্তা। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদে মাসিক সমন্বয় সভায় ও আলোচনা সমালেচনা হয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সালমা খাতুনের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে কারণ দর্শাতে বলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। এদিকে গত ১৫ মে নিশ্চিন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাসিক হাজিরা বিবরনীতে সভাপতির স্বাক্ষর না থাকায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার সালমা খাতুন সভাপতি মো: শরিফুল ইসলাম মিঠুকে কারন দর্শাণোর নোটিশ দিয়েছেন। শিক্ষা অফিসারের বক্তব্য বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শিক্ষকদের মাসিক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর না করায় বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষক উম্মে সালমা, মিতালী দে, মারিয়া পারভীন, রেশমা পারভীন জানান, তারা গত ২ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। এই বিদ্যালয়ে দুজন প্রধান শিক্ষক। একজন প্রধান শিক্ষক শামিমা হোসেন রিপা আর অন্যজন প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) উম্মে সালমা। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সালমা খাতুন জানান, বিদ্যালয়ে একটু সমস্যা আছে। সেখানে একজন সহকারী শিক্ষক গত ২০১০ সাল থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২০১৩ সালে ঐ বিদ্যালয়টি যখন বেসরকারি রেজিষ্টার প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে জাতীয় করন করা হয় তখন থেকে প্রধান শিক্ষকের পদ শুন্য। উম্মে সালমা নামের ঐ শিক্ষকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে রাখা হয়। দীর্ঘদিন ঐ পদে নিয়োগ না দেওয়ায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উম্মে সালমা হাইকোর্টে মামলা করেন। সেই মামলার নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। এই কারনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ শুন্য থাকায় শামিমা হোসেন রিপা নামের একজনকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর পর থেকে বিদ্যালয়ের সভাপতির সাথে শামিমা হোসেন রিপার সম্পর্কের অবনতি হয়। গত এপ্রিল মাসে বর্তমান প্রধান শিক্ষক শিক্ষকদের মাসিক হাজিরা খাতায় সভাপতির স্বাক্ষর না করিয়ে শিক্ষা অফিসে জমা দেয়। যার কারনে শিক্ষকদের বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শরিফুল ইসলাম মিঠু জানান, বিদ্যালয়ে ২জন প্রধান শিক্ষক এখন। এর মধ্যে একজন সেই ৭ বছর থেকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আছেন। তিনি এর মধ্যে আদালতেও ২টি মামলা করেছেন বিষয়টি নিষ্পত্তি হবার জন্য। কিন্তু গত মাসে শামিমা হোসেন নামের একজন বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক দাবি করে আসছেন, যাকে এই বিদ্যালয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সালমা খাতুন প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছেন। তিনি এসে নানা অপকর্ম শুরু করেছেন। এদিকে সরকারী স্কুলে এক পদে দুই প্রধান শিক্ষক থাকার বিষয়টি নিয়ে জেলা জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কেও কেও শিক্ষা বিভাগের দৈন্য দশাকে দায়ী করছেন।