পরিবার মানুষের প্রথম শিক্ষালয়

- আপডেট সময় : ০৫:৫০:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ মে ২০১৭ ৩৯৬ বার পড়া হয়েছে
পরিবার মানবসমাজের মৌল ভিত্তি। পারিবারিক জীবন বিবর্জিত মানব সভ্যতা কল্পনা করা যায় না। প্রত্যেক মানুষের জন্য পারিবারিক জীবন তার অস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য। সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা, স্থিতিশীলতা, অগ্রগতি ইত্যাদি পারিবারিক সুস্থতা ও দৃঢ়তার উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। যদি পারিবারিক জীবন অসুস্থ ও নড়বড়ে হয়, তাতে ভাঙন ও বিপর্যয় দেখা দেয়। আর তা হলে সমাজ জীবনে নানা অশান্তি ও উপদ্রব সৃষ্টি হতে বাধ্য। পরিবারই হচ্ছে কল্যাণকর সমাজের ভিত্তি। সুতরাং আদর্শ সমাজ গঠনের অপরিহার্য শর্ত আদর্শ পরিবার গঠন। মানবজীবনের সূচনালগ্ন থেকেই পৃথিবীতে কোনো না কোনোভাবে পারিবারিক ব্যবস্থা চালু ছিল। সব ধর্মসহ ইসলামে পারিবারিক জীবনকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছে। তাই কোরআন ও সুন্নাহর বিধিবিধানের একটা বৃহৎ অংশজুড়ে রয়েছে পরিবার। একটি শিশুর পরিবার থেকেই নৈতিকতা সংবলিত আদর্শিক জীবন গঠিত হয়ে থাকে। পরে বড় হয়ে ধীরে ধীরে সে সমাজে কিংবা রাষ্ট্রে নিজের অবস্থান করে নেয়। পাশাপাশি তার নিজ যোগ্যতায় পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। তাই ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের জন্য পরিবার ও পারিবারিক কাঠামো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারকে বলা হয় সমাজ ও রাষ্ট্রের আয়না। রাষ্ট্রের সামাজিক উন্নয়নে পরিবারের ভূমিকা ও দায়িত্ব বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারই একজন মানুষের সর্বপ্রথম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ। পরিবারের সবার সঙ্গে সদ্ভাব গড়ে তোলা, সাংসারিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা, মিথ্যা না বলা, গুরুজনদের শ্রদ্ধা করা, নির্দিষ্ট সময়ে ঘরে ফেরা, নিজের কাজ নিজে সম্পন্ন করা, মানবিক মূল্যবোধগুলোর চর্চার মাধ্যমে অন্তরকে বিকশিত করার কাজটি পরিবার থেকেই শুরু করতে হয়। আধুনিক সমাজে যৌথ পরিবার ক্রমে হারিয়ে গিয়ে বাড়ছে একক পরিবার। পরিবার মানুষের প্রথম শিক্ষালয়। কাজের প্রয়োজনে হোক আর ইচ্ছে করেই, মানুষ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। এতে হারিয়ে যাচ্ছে পারিবারিক শিক্ষা এবং আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য। প্রতিটি শিশুর শিক্ষা-দীক্ষার প্রথম বিদ্যাপীঠ পরিবার। শিশু সামাজিক আচার-আচরণ, পরিবারের সবার প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, হাসি-আনন্দ, দুঃখ ভাগাভাগি করার মধ্য দিয়ে দৃঢ় মানবিক বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার গুণ শিখে থাকে। এ কারণে পরিবারকে সমাজের মৌলিক ভিত্তি হিসেবে গণ্য করা হয়।