গাংনী তেঁতুলবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ১২ জন মেম্বারের অনাস্থা : স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দূর্নীতির অভিযোগে কার্যালয়ে তালা

- আপডেট সময় : ০৫:১৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ মে ২০১৭ ৪০৭ বার পড়া হয়েছে
গাংনী অফিস: গাংনীতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের পর এবার ২ নং তেতুলবাড়ীয়া ইউপি কার্যালয়ে তালা ঝুলানো হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেনের আধিপত্য বিস্তার, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্ণীতির অভিযোগ এনে পরিষদের অফিসে ১২ জন মেম্বর সম্মিলিতভাবে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। দুপুরের দিকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কক্ষে তালা লাগিয়ে সকল সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। এমতাবস্থায় মেম্বররা দুর্ণীতিবাজ চেয়ারম্যানের প্রতি অনাস্থা তুলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেন। পরিষদের মেম্বর জয়েনউদ্দীন ও বজলুসহ সকলেই অভিযোগ তুলে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন আধিপত্য বিস্তার করে সরকারী উন্নয়ন পরিকল্পনায় বরাদ্দকৃত অর্থ কোন মেম্বরদের সাথে সমন্বয় না করে একক সিদ্ধান্তে করে থাকেন। এমনকি মেম্বরদের নামে ভূয়া প্রকল্প ও পিআইসি করে টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। মেম্বররা আরও বলেন, নির্বাচনের প্রায় ১বছর অতিবাহিত হলেও অদ্যাবধি উপজেলার ২নং তেঁতুলবাড়ীয়া ইউপিতে আজও প্যানেল চেয়ারম্যান ও কার্যকর স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করা হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদ আইনে নির্বাচনের ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দের সভাপতিত্বে ১৩ টি স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করার বিধান থাকলেও চেয়ারম্যানের গাফিলতিতে আজও কমিটিগুলি গঠন করা হয়নি। ফলে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের আওতায় গ্রামীণ অবকাঠামো ও সামাজিক উন্নয়নে সরকারী বরাদ্দ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ বঞ্চিত হচ্ছে। স্ট্যান্ডিং কমিটি না থাকায় ওয়ার্ড সভা করা হচ্ছেনা।নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে গ্রাম বা মহল্লার সুবিধা-অসুবিধাগুলি যাচাই-বাছাই করে সেগুলি বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে ইউপির সার্বিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।আরও জানা গেছে,স্ট্যান্ডিং কমিটি না থাকায় পরিষদে এলজিএসপির কোন উন্নয়ন পরিকল্পনা নেয়া হয় না বা মিটিং হয়না। জানা গেছে, ইউনিয়নে বার্ষিক বা পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনা করা হয়নি। মেমম্বরদের সম্মানীভাতা আজও দেয়া হয়নি।প্রতিবন্ধী, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তাভাতার তালিকা তিনি নিজেই করে থাকেন। সংরক্ষিত মহিলা মেম্বর বিউটিআরা জানান, তাকে পিআইসি করে তার নামে ২লক্ষ টাকার প্রকল্প করে টাকা আত্মসাৎ করেছে।এছাড়া মেম্বর গোলাম কিবরিয়ার নামে করমদি গোরস্থান প্রকল্পের টাকাও আত্মসাৎ করেছে। সাদা কাগজে কলমে ২/১ টি সাধারন সভা অনুষ্ঠিত হলেও কোন রকম রেজুলেশন করা হয়না। নিয়মানুযায়ী স্ট্যান্ডিং কমিটিতে চেয়ারম্যান মহোদয় শুধুমাত্র আইন শৃংখলা রক্ষা কমিটির সভাপতি হিসাবে থাকতে পারবেন। বাদবাকী ১২টি স্ট্যান্ডিং কমিটিতে মেম্বরগন সভাপতি থেকে ৫ থেকে ৭ জন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করবেন।এসব কমিটিতে বিভিন্ন ওয়ার্ডের বা কমিউনিটির গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সদস্য হিসাবে থেকে উন্নয়ন পরিকল্পনা করবেন।কিন্তু তেঁতুলবাড়ীয়া ইউপির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন এসবের কিছুই মানেন না। তিনি পরিষদের আইন অমান্য করে স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নিয়ে কারও মতামতের তোয়াক্কা না করে মেম্বরদের পরিচালিত করে যাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে আলাপ করলে তিনি কমিটি গুলো গঠন করা হয়েছে বলে জানালেও ইউপি সচিব কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। এব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আওয়ামীলীগেরনেতারা আমার বিরুদ্ধে ষরযন্ত করেমেম্বারদের দিয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান জানান, সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন ও সচিবের সাথে বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।এসময় গাংনী থানা অফিসার ইন চার্জ আনোয়ার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুন্তাজ আলী, কাথুলী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানা।