মহেশপুরের ক্লিনিকগুলো কসাইখানায় পরিনত! নেই কোন নিয়মনীতি : প্রতারিত রোগী সাধারণ

- আপডেট সময় : ০৫:২৬:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০১৭ ৩৭৫ বার পড়া হয়েছে
মহেশপুর প্রতিনিধি: বাংলাদেশের নাগরিকের ৫টি মৌলিক অধিকারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চিকিৎসা সেবা পাওয়া। আর সরকার যেখানে সাধারণ মানুষের জন্য চিকিৎসা সেবা ১০০ ভাগ নিশ্চিত করেছেন সেখানে মহেশপুর উপজেলায় চিকিৎসা সেবায় চলছে নৈরাজ্য। সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ, চিকিৎসা ক্ষেত্রে চরম অনিয়ম অবহেলা অনীহা। দুর্ণীতি জেকে বসেছে চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিকদের মধ্যে। কেউ কেউ আবার সরকারী হাসপাতালে চাকুরী করেও ক্লিনিক খুলে বসে আছে। যেমন মহেশপুরে সুমন ক্লিনিকের মালিক ডা: আব্দুল মজিদ ও ব্লুমি প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক আমজাদ হোসেন এবং শহিদ। রোগীর প্রতি তাদের আন্তরিকতায় রয়েছে দারুন অভাব। মহেশপুর এলাকার ক্লিনিক মালিকেরা চিকিৎসা সেবার নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রুপ দিয়েছে। রোগীর আর্থিক ও পারিবারিক অবস্থা বুঝে নিয়ে যেন ঝোপ বুঝেই কোপ মারার মত।
হামলে পড়তে দেখা যায়, চিকিৎসকসহ ক্লিনিকে পুষে রাখা দালালদের। আসলে ক্লিনিক নাকি চিকিৎসা সেবার নামে কসাই খানা গড়ে তোলা হয়েছে? কোন নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করেই বহাল তবিয়তে চলছে চিকিৎসার আড়ালে অপচিকিৎসা। যেন দেখার কেউ নেই, নাকি দেখেও না দেখার ভান করে আছে কর্তাবাবুরা! অত্র উপজেলায় প্রায় চার লক্ষের বেশির লোকের বসবাস । আর নব্বই ভাগ মানুষ পেশায় কৃষক হওয়ায় প্রতিনিয়িত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মহেশপুর শহরে রয়েছে সীমা ক্লিনিক, ব্লুমিক প্রাইভেট হাসপাতাল, সুমন ক্লিনিক, সালেহা ক্লিনিক, সুভাস ক্লিনিক, ফাতেমা ক্লিনিক, ভৈরবা বাজারে অবস্থিত মডার্ন ক্লিনিক, জিন্নাহনগর বাজারে মা ও শিশু হাসপাতাল, নেপা মোড়ে মনু ক্লিনিক, একতা ক্লিনিক, পুড়োপাড়া বাজারে এমআর রনি প্রাইভেট হাসপাতাল, খালিশপুরে মুক্তি ক্লিনিক, আব্দুল আজিজ ক্লিনিক ব্যবসা হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। এসব ক্লিনিকে নেই কোন বৈধ কাগজ পত্র, নেই ডিপ্লোমা করা নার্স, নেই যন্ত্রপাতি, ক্লিনিক ঝাড়–দারও করে নার্সের কাজ। ক্লিনিক মালিক ডাক্তার না হয়েও মাঝে মাঝে অপারেশন করছে বলে অভিযোগ আছে। প্রতিটি ক্লিনিকে রোগীদের কাছ থেকে ডাকাতি করার মত হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা চিকিৎসকের পরামর্শ পত্রের জন্য যে যার মত নিচ্ছে টাকা। সেইসাথে পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য বোঝা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে মাথায়। রোগ নির্ণয়ের জন্য সবচেয়ে বেশি টাকা গুনতে হয় রোগীদের সেক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা করেছে ক্লিনিক মালিকেরা। পরীক্ষা নিরীক্ষা ও ঔষধপত্র কেনার জন্য দৌড়াতে হচ্ছে না দুরে কোথাও প্রতিটি ক্লিনিকেই রয়েছে ডায়াগনষ্টিক ও ফার্মেসী। সেকারণে অনেকটাই খেয়াল খুশিমত রোগীদের পকেট কাটা সম্ভব হচ্ছে। প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে রোগী সাধারণ। এ যেন ভারতের জীবনমুখি শিল্পী নচিকেতার সেই গানের কথার মত দশায় পরিনত হয়েছে “কসাই তো জবাই করে প্রকাশ্য দিবালোকে ডাক্তারের আছে ক্লিনিক ও চেম্বার”। কোন ক্লিনিকেই নিয়মিত চিকিৎসক না থাকলেও সকাল ও বিকেল চিকিৎসা সেবার নামে দোকান খুলে বসে থাকেন চিকিৎসকরা। গণহারে রোগীর চিকিৎসার নামে দেয়া হচ্ছে অপচিকিৎসা। কোন কোন চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে পরীক্ষা নিরীক্ষা ও ঔষধের নাম লিখে শেষ করতে পারেন না। যেন স্কুল কলেজের পরীক্ষার খাতার মত অবস্থায় পরিনত হয়ে থাকে। পরীক্ষা নিরীক্ষা ও ঔষদের পরিমান দেখেই রোগীদের রোগ যেন আরো বেড়ে যায়। মহেশপুর উপজেলার মানুষ কসাইখানা নামক ক্লিনিক ও চিকিৎসকসহ দালাল চক্রের হাত থেকে পরিত্রান চেয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এ ব্যপারে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন অভিযোগ খতিয়ে দেখে সে মোতাবেক গ্রহন করা হবে যথাযথ ব্যবস্থা।