দুর্ঘটনারোধে নতুন আইন : চুয়াডাঙ্গা পুলিশের পদক্ষেপ

- আপডেট সময় : ০৫:৫১:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ এপ্রিল ২০১৭ ২৭৬ বার পড়া হয়েছে
আইনটি অনুমোদন দেয়ার সাথে দেশে ১০ বছরের পুরনো গাড়ি সড়ক থেকে উঠিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। একইসাথে খসড়া আইনটির বাস্তব প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে যেন কেউ আইনের ফাঁক গলে পার না পায়। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৭-এর খসড়াটি নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রী পরিষদ। সারা দেশে যত্র তত্র যেভাবে সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে আর যেভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে তাতে সড়কে বাস ও অন্যান্য যানবাহন চলাচলে কঠোর আইন প্রণয়নের দাবী ছিল দেশের মানুষের। দেশে নতুন আইন প্রনয়ণের সাথে সাথে চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনারোধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে বেশকয়েকটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে জেলা পুলিশ। যেখানে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় একই গ্রামের ১৩ জন হয়েছে, সেখানে স্থানীয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হলে প্রশাসনের কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই। আগের আইনে অনেক বিষয় স্থান না পেলেও এবার চালকের এবং সহযোগীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। গাড়ির ফিটনেস নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ফুটপাতে মোটরসাইকেল চালানো বেআইনী করে দেয়া হয়েছে। সড়কের ওপর যেখানে সেখানে গাড়ি রাখাও বেআইনী করা হয়েছে। চালকের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি করার চাপ থাকলেও তা অষ্টম শ্রেণি করা হয়েছে। গাড়ি চালানোর সময় চালক মোবাইল ফোনে আলাপ করলে এক মাস জেল অথবা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন। চালকের বয়সসীমা ১৮ বছর করা হয়েছে তবে পেশাদার চালকের বয়স ২১ রাখা হয়েছে। গাড়ি চালিয়ে মানুষ হত্যা করলে দ-বিধির ৩০২ ধারা প্রযোজ্য হবে। চালকের অসাবধানতায় মৃত্যু হলে দ-বিধির ৩০৪ ধারা ও বেপরোয়া চালানোর জন্য ৩০৪-এর বি উপধারা প্রয়োগ করা হবে। সড়ক-মহাসড়কে বেপরোয়া ও দায়িত্ব জ্ঞানহীন গাড়ি চালানোর কারণে গত কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটে। একই পরিবারের পাঁচ-ছ’জন সদস্যের নির্মম মৃত্যুতে দেশের মানুষের টনক নড়ে। এ কারণে নতুন যে খসড়া প্রস্তাবটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে তাকে সবাই স্বাগত জানাবে নিঃসন্দেহে। তবে আইন প্রণয়নেই আমাদের সব দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। আমাদের দেশে অনেক ভালো ভালো আইন আছে কিন্তু এগুলো প্রয়োগ ও নজরদারীর অভাবে তা কার্যকর হতে দেখা যায় না। এ কারণে অনেক আইন বইতেই লিপিবদ্ধ থাকে তার বাস্তব ফল মানুষ পায় না। দেশে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিদিন কতো যে মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে তার সঠিক হিসেব আমাদের কাছে আসে না, মুষ্টিমেয় খবরই কেবল সংবাদপত্রে আসে। আইনটি অনুমোদন দেয়ার সাথে দেশে ১০ বছরের পুরনো গাড়ি সড়ক থেকে উঠিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। একইসাথে খসড়া আইনটির বাস্তব প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে যেন কেউ আইনের ফাঁক গলে পার না পায়। বিশেষ করে মহাসড়কগুলোতে দ্রুতবেগে গাড়ি চালানোর সময় চালক যেমন কোন কিছু তোয়াক্কা করে না ঠিক সেরকম এসব স্থানে ঠিকমতো নজরদারীর অভাবে অনেক অনিয়ম ঘটে এবং দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়। এ কারণে আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হলে যানবাহন চলাচলে সব স্থানে ঠিকমতো নজরদারী রাখতে হবে। ঠিকমতো আইনের প্রয়োগই সড়কে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা এনে দিতে পারে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে এ বিষয়টিতেই কঠোর দায়িত্বের পরিচয় দিতে হবে।