সবার জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করুন

- আপডেট সময় : ০৪:২৩:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০১৭ ৩৬৮ বার পড়া হয়েছে
নদীমাতৃক বাংলাদেশে বিশুদ্ধ পানির সংকট নিঃসন্দেহে চিন্তার বিষয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) তথ্য অনুযায়ী, এ দেশের সাড়ে ৯ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে পারছেন না। হু জানিয়েছে, বাংলাদেশের নদনদীর পানির উৎস ভারত থেকে বয়ে আসা অভিন্ন নদীর পানি। কিন্তু দেশটিতে শুষ্ক মৌসুমে পানিপ্রবাহ এবং পানির প্রাপ্যতা ভয়াবহভাবে কমেছে। মানুষের পানি প্রাপ্যতা এবং অপ্রাপ্যতাও ঋতুভেদে ওঠানামা করে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের মানুষ পানি নিয়ে চরম ঝুঁঁকির মধ্যে বাস করছেন বলে সংস্থাটির অভিমত। উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ ২২ মার্চকে বিশ্ব পানি দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারিত ছিল ‘ডধংঃবধিঃবৎ’ অর্থাৎ ‘বর্জ্য পানি’। দ্রæত নগরায়ণ, জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং অপরিকল্পিতভাবে অর্থনৈতিক কর্মকা- পরিচালিত হওয়ায় বিশ্বব্যাপী বর্জ্য পানির পরিমাণ বেড়েই চলেছে। তাই বর্জ্য পানির সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পানি সংকট মোকাবিলা করা যেতে পারেÑ এ ধারণা ক্রমেই প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
বেঁচে থাকার জন্য পানি অপরিহার্য। বলা হয়, পানির অপর নাম জীবন। আর এ জীবন রক্ষাকারী পানি অবশ্যই হতে হবে নিরাপদ। আর পানিই যদি হয় অনিরাপদ, তাহলে জীবন পড়ে যায় হুমকির মুখে। সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে জীবাণুমুক্ত নিরাপদ পানির বিকল্প নেই। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজিতে সবার জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য খুবই বড় চ্যালেঞ্জ। জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও সভ্যতার ক্রমবিকাশের সঙ্গে বিশ্বে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে পানির চাহিদা। কিন্তু নানামুখী অপচয় ও বিভিন্নমুখী হস্তক্ষেপের কারণে অনেক স্থানে সুপেয় পানির উৎস সংকুচিত, দূষিত এবং ধ্বংস হচ্ছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশের প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কিলোমিটার নদীপথ নাব্য হারিয়েছে। তাই বাড়ছে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার, ফলে ভূগর্ভের পানির স্তর ক্রমেই নিচে নেমে যাচ্ছে। অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সংকটগুলোর অন্যতম সুপেয় পানির সংকট। উপকূলীয় এলাকায় এ সংকট সবচেয়ে বেশি।
স্বভাবতই আমাদের উন্নয়ন প্রশ্নে নিরাপদ পানির নিশ্চয়তার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। এক্ষেত্রে পানির অপচয় রোধ ও পুনর্ব্যবহার নিশ্চিত করা হোক। আর মাটির নিচ থেকে নয়, আমাদের ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়াতে হবে। স্মর্তব্য যে, আন্তঃনদী সমস্যা, নদী ভরাট, দখল এবং দূষণের মাধ্যমে পানিসম্পদকে ধ্বংস করা হচ্ছে। প্রতিকারে অর্থবহ ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।