ইপেপার । আজসোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহের দুই উপজেলায় নিরুত্তাপ ভোট, উপস্থিতি হতাশাজনক

মিজানুর রহমান মাসুম ও শিবলী নোমানী নির্বাচিত

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৮:২৯:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪
  • / ১৬ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ সদর ও কালীগঞ্জ উপজেলায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। তবে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল হতাশাজনক। ভোট কেন্দ্রে সেই লম্বা লাইন চোখে পড়েনি কোথাও। সকালের দুই ঘণ্টায় ভোট প্রদানের হার ছিল খুবই নগন্য। কেন্দ্রে কেন্দ্রে অলস সময় পার করতে দেখা গেছে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনরত কর্মীদের। গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গেলে সেখানে একজন ভোটারও দেখা যায়নি। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আহসানুল কবীর জানান, দুই ঘণ্টায় সেখানে মাত্র ৩৫টি ভোট পোল হয়েছে। ওই কেন্দ্রের মোট ভোটার ২ হাজার ২৪৩। ভোট প্রদানের হার অনুযায়ী যা ছিলো মাত্র ১.৪৭%।

হলিধানী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে ভোটারদের কোনো লাইন নেই। কেন্দ্র ফাঁকা। ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৩২৩। সকাল ১০টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়েছে মাত্র ৭৯টি। ভোট প্রদানের হার ২.৩৭%।  প্রিজাইডিং অফিসার আবু তারিক এ তথ্য জানান। সদর উপজেলার মধুপুর হাইস্কুল কেন্দ্রে মোট ভোটার ৪৯৩৭। সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোট পোল হয় ১১১টি। ভোট প্রদানের হার ২.২৪%। প্রিজাইডিং অফিসার মোফিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বেলা দুইটার দিকে সদর উপজেলার বাজারগোপালপুর ভোট কেন্দ্রটিও ভোটার শুন্য দেখা যায়। সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ৭ ঘণ্টায় ভোট কাস্টিংয়ের হার ১৭%। প্রিজাইডিং অফিসার আমিনুল ইসলাম জানান, বাজারগোপালপুর ভোটকেন্দ্রে পুরুষ ভোটার ১ হাজার ৯৭৯। দুপুর ২টা পর্যন্ত ৩৫৪ জন ভোটার ভোট প্রদান করেন। বাজারগোপালপুর কলেজ শাখা কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল ১ হাজর ৯৯৩। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত সেখানে ভোট পড়ে ১৭৮টি। ভোট প্রদানের হার ৮.৯৩%। ভোটার উপস্থিতি নিয়ে দুই উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত রির্টনিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসার মোখলেছুর রহমান জানান, রাতে ঝড়বৃষ্টির কারণে ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা আসতে দেরি করতে পারে। তবে সবকিছুই পজেটিভ আছে। নাজমুস সাকিব নামে বংকিরা ভোট কেন্দ্রের এক ভোটার বলেন, ‘তাদের কাছে এ পর্যন্ত কোন প্রার্থী ভোট চাইনি। প্রার্থীরা এসে গ্রামের মাতুব্বরদের সঙ্গে কথা বলে চলে গেছেন। সে কারণে ভোটাররা ভোট দিতে আসেননি।’

এদিকে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মিজানুর রহমান মাসুম জয়ী হয়েছেন। তিনি ৩৫ হাজার ৫৩৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটমতম প্রতিদ্বন্দ্বী জে এম রশিদুল আলম পেয়েছেন ৩০ হাজার ৭৫৫ ভোট। ৪ হাজার ৭৮৩ ভোট বেশি পেয়ে মিজানুর রহমান মাসুম জয়ী হন। এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে এনামুল হক এনাম ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্ষা খাতুন (হিজড়া) বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রাথী মিজানুর রহমান মাসুম ইতিপূর্বে সংসদ সদস্য ও পৌরসভা নির্বাচনে একাধিকবার প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। অবশেষে তিনি হাড্ডা হাড্ডি লড়াইয়ের মাধ্যমে জয়ের মুখ দেখলেন।

অপর দিকে, কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীকের প্রার্থী শিবলী নোমানী বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৪২ হাজার ৬৭৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মতিয়ার রহমান মতি পেয়েছেন ৫ হাজার ৫৭২ ভোট। এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে উড়োজাহাজ প্রতীকের শফিকুজ্জান রাসেল বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ২৯ হাজার ১৪৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী চশমা প্রতীকের আনিচুর রহমান মিঠু মালিথা পেয়েছেন ১৫ হাজার ৯৩২ ভোট। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে হাঁস প্রতিকের শাহনাজ পারভীন বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৬৩৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ফুটবল প্রতীকের তিথী রানী পেয়েছেন ২৩ হাজার ৯৭৭ ভোট। ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ১ম ধাপের ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। তবে বেশিরভাগ কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের লম্বা লাইন লক্ষ্য করা যায়নি। ভোটার উপস্থিতিও ছিল তুলনামূলক কম। এদিকে উপজেলার কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার রশিদুল আলম বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ঝিনাইদহের দুই উপজেলায় নিরুত্তাপ ভোট, উপস্থিতি হতাশাজনক

মিজানুর রহমান মাসুম ও শিবলী নোমানী নির্বাচিত

আপলোড টাইম : ০৮:২৯:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪

ঝিনাইদহ সদর ও কালীগঞ্জ উপজেলায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। তবে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল হতাশাজনক। ভোট কেন্দ্রে সেই লম্বা লাইন চোখে পড়েনি কোথাও। সকালের দুই ঘণ্টায় ভোট প্রদানের হার ছিল খুবই নগন্য। কেন্দ্রে কেন্দ্রে অলস সময় পার করতে দেখা গেছে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনরত কর্মীদের। গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গেলে সেখানে একজন ভোটারও দেখা যায়নি। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আহসানুল কবীর জানান, দুই ঘণ্টায় সেখানে মাত্র ৩৫টি ভোট পোল হয়েছে। ওই কেন্দ্রের মোট ভোটার ২ হাজার ২৪৩। ভোট প্রদানের হার অনুযায়ী যা ছিলো মাত্র ১.৪৭%।

হলিধানী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে ভোটারদের কোনো লাইন নেই। কেন্দ্র ফাঁকা। ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৩২৩। সকাল ১০টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়েছে মাত্র ৭৯টি। ভোট প্রদানের হার ২.৩৭%।  প্রিজাইডিং অফিসার আবু তারিক এ তথ্য জানান। সদর উপজেলার মধুপুর হাইস্কুল কেন্দ্রে মোট ভোটার ৪৯৩৭। সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোট পোল হয় ১১১টি। ভোট প্রদানের হার ২.২৪%। প্রিজাইডিং অফিসার মোফিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বেলা দুইটার দিকে সদর উপজেলার বাজারগোপালপুর ভোট কেন্দ্রটিও ভোটার শুন্য দেখা যায়। সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ৭ ঘণ্টায় ভোট কাস্টিংয়ের হার ১৭%। প্রিজাইডিং অফিসার আমিনুল ইসলাম জানান, বাজারগোপালপুর ভোটকেন্দ্রে পুরুষ ভোটার ১ হাজার ৯৭৯। দুপুর ২টা পর্যন্ত ৩৫৪ জন ভোটার ভোট প্রদান করেন। বাজারগোপালপুর কলেজ শাখা কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল ১ হাজর ৯৯৩। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত সেখানে ভোট পড়ে ১৭৮টি। ভোট প্রদানের হার ৮.৯৩%। ভোটার উপস্থিতি নিয়ে দুই উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত রির্টনিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসার মোখলেছুর রহমান জানান, রাতে ঝড়বৃষ্টির কারণে ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা আসতে দেরি করতে পারে। তবে সবকিছুই পজেটিভ আছে। নাজমুস সাকিব নামে বংকিরা ভোট কেন্দ্রের এক ভোটার বলেন, ‘তাদের কাছে এ পর্যন্ত কোন প্রার্থী ভোট চাইনি। প্রার্থীরা এসে গ্রামের মাতুব্বরদের সঙ্গে কথা বলে চলে গেছেন। সে কারণে ভোটাররা ভোট দিতে আসেননি।’

এদিকে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মিজানুর রহমান মাসুম জয়ী হয়েছেন। তিনি ৩৫ হাজার ৫৩৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটমতম প্রতিদ্বন্দ্বী জে এম রশিদুল আলম পেয়েছেন ৩০ হাজার ৭৫৫ ভোট। ৪ হাজার ৭৮৩ ভোট বেশি পেয়ে মিজানুর রহমান মাসুম জয়ী হন। এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে এনামুল হক এনাম ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্ষা খাতুন (হিজড়া) বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রাথী মিজানুর রহমান মাসুম ইতিপূর্বে সংসদ সদস্য ও পৌরসভা নির্বাচনে একাধিকবার প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। অবশেষে তিনি হাড্ডা হাড্ডি লড়াইয়ের মাধ্যমে জয়ের মুখ দেখলেন।

অপর দিকে, কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীকের প্রার্থী শিবলী নোমানী বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৪২ হাজার ৬৭৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মতিয়ার রহমান মতি পেয়েছেন ৫ হাজার ৫৭২ ভোট। এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে উড়োজাহাজ প্রতীকের শফিকুজ্জান রাসেল বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ২৯ হাজার ১৪৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী চশমা প্রতীকের আনিচুর রহমান মিঠু মালিথা পেয়েছেন ১৫ হাজার ৯৩২ ভোট। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে হাঁস প্রতিকের শাহনাজ পারভীন বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৬৩৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ফুটবল প্রতীকের তিথী রানী পেয়েছেন ২৩ হাজার ৯৭৭ ভোট। ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ১ম ধাপের ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। তবে বেশিরভাগ কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের লম্বা লাইন লক্ষ্য করা যায়নি। ভোটার উপস্থিতিও ছিল তুলনামূলক কম। এদিকে উপজেলার কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার রশিদুল আলম বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেছেন।