ইপেপার । আজ বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

শরিয়তের স্তম্ভগুলো

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:৪৬:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জানুয়ারী ২০১৭
  • / ৪৯০ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: শরিয়তের বিধান চারটি জিনিস দিয়ে সাব্যস্ত হয়। সেগুলো হচ্ছে- কোরান, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াস। কোরান শরিফে যদিও বহু বিধানের উল্লেখ আছে, কিন্তু সরাসরি বা সুস্পষ্টভাবে সব বিধান উল্লেখ নেই। বহু ক্ষেত্রে শুধু বিধানের মূল নীতিমালা ঘোষণা করা হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুধু ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। কোথাও শুধু একটি দিক আলোচনা করে বাকিগুলোর ক্ষেত্রে বলা হয়েছে নবী করিম (সা.) যা বলবে তাই অনুসরণ করবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের রাসুল (সা.) যা কিছু এনেছেন তা আঁকড়ে ধরো, পালন করো, আর যা কিছু থেকে বর্জন করেছেন সেগুলো পরিহার করো, তা থেকে বিরত থাকো’ [সুরা হাশর-৭]। এখানে একটি একটি করে বিধান বর্ণনা না করে সবকিছু নবী করিম (সা.)-এর ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। বলেছেন, তিনি আমার রাসুল, তিনি নিজ থেকে কিছু বানিয়ে বলেন না। হাদিসে যে সমস্ত শরীয় বিধানে উল্লেখ আছে, নবী করিম (সা.)-এর জীবনী থেকে যে সমস্ত আমল প্রমাণিত প্রকারান্তরে সেগুলো বিধান আল্লাহ পাকের কোরান দ্বারাই সাব্যস্ত। শরিয়তের তৃতীয় ভিত্তি ইজমা। ইজমা দ্বারা বিধান সাব্যস্ত হওয়ার অর্থ হচ্ছে যে কোনো যুুগের গোটা উম্মতের সমস্ত গবেষক যদি কোনো বিধানের ক্ষেত্রে সর্বসম্মতভাবে একমত হয়ে সিদ্ধান্ত দেয় তাহলে সেটি আল্লাহ পাকের বিধান বলে গণ্য হবে। এটি উম্মতে মোহাম্মদির (সা.) বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদা। আর চতুর্থ ভিত্তি হচ্ছে কিয়াস। যদি কখনো এমন কোনো সমস্যা দেখা দেয়, যা সরাসরি কোরান-হাদিস বা ইজমা দ্বারা প্রমাণিত নয়, তবে এটি এই তিনটি ভিত্তির দ্বারা সাব্যস্ত কোনো বিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাহলে আগের বিষয়ের ক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত রয়েছে, এখানেও সেই সিদ্ধান্ত দেয়া হবে। সংক্ষেপে এটাকেই বলে কিয়াস। যেমন পবিত্র কোরান-সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত যে, গমকে গমের বিনিময় কম বেশি করে বিক্রি করা জায়েজ নেই। যেমন- পাঁচ কেজি গমের বিনিময়ে ছয় কেজি গম নেয়া জায়েজ নেই। এটি সুদ হিসেবে হারাম। কিন্তু চালের ক্ষেত্রে পবিত্র হাদিসে এমন কম বেশি করে বিনিময় করার ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। তাহলে এখানে এখন কী সিদ্ধান্ত হবে? এক্ষেত্রে ফকিরা চালকে গমের সঙ্গে কিয়াস করে বলেছেন, চালের ক্ষেত্রেও কম বেশি করে বিনিময় করা জায়েজ নেই।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

শরিয়তের স্তম্ভগুলো

আপলোড টাইম : ০১:৪৬:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জানুয়ারী ২০১৭

ধর্ম ডেস্ক: শরিয়তের বিধান চারটি জিনিস দিয়ে সাব্যস্ত হয়। সেগুলো হচ্ছে- কোরান, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াস। কোরান শরিফে যদিও বহু বিধানের উল্লেখ আছে, কিন্তু সরাসরি বা সুস্পষ্টভাবে সব বিধান উল্লেখ নেই। বহু ক্ষেত্রে শুধু বিধানের মূল নীতিমালা ঘোষণা করা হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুধু ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। কোথাও শুধু একটি দিক আলোচনা করে বাকিগুলোর ক্ষেত্রে বলা হয়েছে নবী করিম (সা.) যা বলবে তাই অনুসরণ করবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের রাসুল (সা.) যা কিছু এনেছেন তা আঁকড়ে ধরো, পালন করো, আর যা কিছু থেকে বর্জন করেছেন সেগুলো পরিহার করো, তা থেকে বিরত থাকো’ [সুরা হাশর-৭]। এখানে একটি একটি করে বিধান বর্ণনা না করে সবকিছু নবী করিম (সা.)-এর ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। বলেছেন, তিনি আমার রাসুল, তিনি নিজ থেকে কিছু বানিয়ে বলেন না। হাদিসে যে সমস্ত শরীয় বিধানে উল্লেখ আছে, নবী করিম (সা.)-এর জীবনী থেকে যে সমস্ত আমল প্রমাণিত প্রকারান্তরে সেগুলো বিধান আল্লাহ পাকের কোরান দ্বারাই সাব্যস্ত। শরিয়তের তৃতীয় ভিত্তি ইজমা। ইজমা দ্বারা বিধান সাব্যস্ত হওয়ার অর্থ হচ্ছে যে কোনো যুুগের গোটা উম্মতের সমস্ত গবেষক যদি কোনো বিধানের ক্ষেত্রে সর্বসম্মতভাবে একমত হয়ে সিদ্ধান্ত দেয় তাহলে সেটি আল্লাহ পাকের বিধান বলে গণ্য হবে। এটি উম্মতে মোহাম্মদির (সা.) বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদা। আর চতুর্থ ভিত্তি হচ্ছে কিয়াস। যদি কখনো এমন কোনো সমস্যা দেখা দেয়, যা সরাসরি কোরান-হাদিস বা ইজমা দ্বারা প্রমাণিত নয়, তবে এটি এই তিনটি ভিত্তির দ্বারা সাব্যস্ত কোনো বিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাহলে আগের বিষয়ের ক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত রয়েছে, এখানেও সেই সিদ্ধান্ত দেয়া হবে। সংক্ষেপে এটাকেই বলে কিয়াস। যেমন পবিত্র কোরান-সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত যে, গমকে গমের বিনিময় কম বেশি করে বিক্রি করা জায়েজ নেই। যেমন- পাঁচ কেজি গমের বিনিময়ে ছয় কেজি গম নেয়া জায়েজ নেই। এটি সুদ হিসেবে হারাম। কিন্তু চালের ক্ষেত্রে পবিত্র হাদিসে এমন কম বেশি করে বিনিময় করার ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। তাহলে এখানে এখন কী সিদ্ধান্ত হবে? এক্ষেত্রে ফকিরা চালকে গমের সঙ্গে কিয়াস করে বলেছেন, চালের ক্ষেত্রেও কম বেশি করে বিনিময় করা জায়েজ নেই।