ইপেপার । আজ শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

বিএনপির রাজনৈতিক কৌশল পরিবর্তন নির্বাচনের আগে কঠোর কোনো কর্মসূচি নয় সংলাপে বসতে সরকারকে চাপে রাখা হবে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৪৪:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জানুয়ারী ২০১৭
  • / ৫৬০ বার পড়া হয়েছে

cvcff

সমীকরণ ডেস্ক: আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতনের পরিকল্পনা থেকে সরে এসে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য শান্তিপূর্ণভাবে সরকারকে চাপে রাখা এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণকে ঘিরেই কর্মপন্থা ঠিক করছে দলটি। নির্বাচনের আগে সহিংস কোনো কর্মসূচিতে যাওয়ার কথাও ভাবছে না তারা। বিএনপির নীতিনির্ধারণীসহ মধ্য পর্যায়ের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের পরে স্বল্প সময়ের মধ্যে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতনের পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু সে বছর আন্দোলন ফলপ্রসূ না হওয়ায় এক বছর সময় দিয়ে আবারও সরকার পতনের পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে বিএনপি। এরপরও সফল না হওয়ায় নতুন করে দল সুসংগঠিত করে সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তি ঘিরে আন্দোলনের ছক তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন সব কিছু ওলট-পালট করে দেয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আন্দোলন করে সরকারের পতন সম্ভব নয় এমন বিবেচনায় রাজনৈতিক কৌশল পরিবর্তন করেছে বিএনপি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার পতনের আন্দোলন না করে কিভাবে নির্বাচনকে সুষ্ঠু করা যায় সে বিষয়টিকে এখন থেকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।
বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানান, বিগত আন্দোলনে সরকারকে বেকাদায় ফেলা সম্ভব হয়নি বরং ব্যাপকভাবে তাদের দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। যা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সত্যিকার অর্থে খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্দোলন করে সরকার পতন করা একরকম অসম্ভব বলে তারা মনে করছেন। এজন্য আগামী নির্বাচনের আগে সরকার পতনের জন্য আর কোনো আন্দোলনে যাবে না বিএনপি। জাতীয় কোনো বৃহত্তর ইস্যু ছাড়া নির্বাচনের আগে হরতাল-অবরোধের মতো সহিংস কোনো কর্মসূচিও দেবে না তারা। শুধু জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে দেশ-বিদেশের জনমত নিজেদের পক্ষে আনতে তারা কাজ করবেন। আর এর ফাঁকে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে।
বিএনপি সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচন ৫০ শতাংশ সুষ্ঠু হলেই বিএনপির জয়ের সম্ভাবনা প্রবল বলে তাদের ধারণা। এ জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকারকে বাধ্য করানো বিএনপির এখন প্রধান লক্ষ্য। এ জন্যই একটি স্বাধীন এবং শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে রাষ্ট্রপতিকে কয়েকটি প্রস্তাব এবং নাম দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি যদি সেসব প্রস্তাবকে একেবারেই উপেক্ষা করে ইসি গঠন করেন তাহলে এর কারণ জানতে চাওয়ার পাশাপাশি দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিযোগ করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিও দিতে পারে দলটি। আর রাষ্ট্রপতি বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবকে গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করলে রাষ্ট্রপতিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধন্যবাদ জানানো হবে।
বিএনপি সূত্র মতে, ইসি গঠনের পর বিএনপির অধিকাংশ কর্মপরিকল্পনা থাকবে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সরকারের একটি রূপরেখা দেবে বিএনপি। এতে মূল বিষয়টি থাকবে যে নামেই হোক নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। এ নিয়ে সংলাপে বসতে সরকারকে নানাভাবে চাপও দেয়া হবে। প্রয়োজনে বিদেশি বন্ধুদের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগের চেষ্টাও থাকবে।
সূত্র জানায়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবি থাকবে বিএনপির। শেষ পর্যন্ত যদি এ দাবি আদায় সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে সব দলের অংশগ্রহণে যৌথ সরকারের গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব এলেও তাতে আপত্তি করবে না দলটি। নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া যৌথ সরকারে বিএনপির অংশগ্রহণ সম্ভব নয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এ ধরনের যুক্তি দিলে কিভাবে সরকারে বিএনপির অন্তর্ভুক্তি সম্ভব সেসব বিষয়ের তথ্য-উপাত্ত জাতির সামনে উপস্থাপন করবে বিএনপি। মোট কথা, শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পন্থায় সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আগামী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত চেষ্টা করবে বিএনপি। শান্তিপূর্ণ পদক্ষেপে যদি কাজ না হয় আর একেবারে জোর করে আবারও ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করে তাহলে নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে বড় ধরনের কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি।
বিএনপি সূত্র মতে, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা করার পাশাপাশি সংগঠনকে শক্তিশালী করার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব থাকবে বিএনপির। তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত প্রত্যেকটি কমিটির নেতৃত্বে যাতে সুযোগ্যরা আসে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট নেতাদের কঠোর নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে প্রত্যেকটি জেলা কমিটি গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।
সূত্র মতে, কমিটি গঠনের পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে বিএনপি। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী বাছাই ভুল ছিল বলেও দলে আলোচনা আছে। পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর ব্যক্তি ইমেজও বিএনপির পরাজয়ে ভূমিকা রেখেছে বলে তারা মনে করেন। সবমিলে পরবর্তী সময়ে শুধু মার্কার জোরে নির্বাচনে লড়তে চায় না বিএনপি। যোগ্য প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়েই জয় ছিনিয়ে আনতে চায়। সঙ্গতকারণে কাকে কোন আসনে মনোনয়ন দিলে দল লাভবান হবে সে বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েই প্রার্থী ঠিক করা হবে। বিশেষ কারণে বহিরাগত এবং ব্যবসায়ীরা এসে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে যাবেন এমন হওয়ার সম্ভাবনাও এবার কম থাকবে।
দলের সিনিয়র এক নেতা জানান, ১৯৯০ থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ের আন্দোলন হিসেব করে এবারও বর্তমান সরকারের পতনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। একরকম প্রস্তুতি ছাড়াই বড় আন্দোলনের কর্মসূচিও দেয়া হয়েছিল। সঙ্গতকারণে ফল এসেছে নেতিবাচক। তাই এবার নতুন কিছু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
বিএনপির পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. অব. মাহবুবুর রহমান জানান, নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএনপির আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। আশা করছেন, রাষ্ট্রপতি একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সরকারের সঙ্গে সংলাপ করতে চায় বিএনপি। আলোচনার মাধ্যমে সব ধরনের সংকট সমাধান সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না হলে আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায় করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

বিএনপির রাজনৈতিক কৌশল পরিবর্তন নির্বাচনের আগে কঠোর কোনো কর্মসূচি নয় সংলাপে বসতে সরকারকে চাপে রাখা হবে

আপলোড টাইম : ১১:৪৪:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জানুয়ারী ২০১৭

cvcff

সমীকরণ ডেস্ক: আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতনের পরিকল্পনা থেকে সরে এসে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য শান্তিপূর্ণভাবে সরকারকে চাপে রাখা এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণকে ঘিরেই কর্মপন্থা ঠিক করছে দলটি। নির্বাচনের আগে সহিংস কোনো কর্মসূচিতে যাওয়ার কথাও ভাবছে না তারা। বিএনপির নীতিনির্ধারণীসহ মধ্য পর্যায়ের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের পরে স্বল্প সময়ের মধ্যে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতনের পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু সে বছর আন্দোলন ফলপ্রসূ না হওয়ায় এক বছর সময় দিয়ে আবারও সরকার পতনের পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে বিএনপি। এরপরও সফল না হওয়ায় নতুন করে দল সুসংগঠিত করে সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তি ঘিরে আন্দোলনের ছক তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন সব কিছু ওলট-পালট করে দেয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আন্দোলন করে সরকারের পতন সম্ভব নয় এমন বিবেচনায় রাজনৈতিক কৌশল পরিবর্তন করেছে বিএনপি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার পতনের আন্দোলন না করে কিভাবে নির্বাচনকে সুষ্ঠু করা যায় সে বিষয়টিকে এখন থেকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।
বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানান, বিগত আন্দোলনে সরকারকে বেকাদায় ফেলা সম্ভব হয়নি বরং ব্যাপকভাবে তাদের দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। যা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সত্যিকার অর্থে খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্দোলন করে সরকার পতন করা একরকম অসম্ভব বলে তারা মনে করছেন। এজন্য আগামী নির্বাচনের আগে সরকার পতনের জন্য আর কোনো আন্দোলনে যাবে না বিএনপি। জাতীয় কোনো বৃহত্তর ইস্যু ছাড়া নির্বাচনের আগে হরতাল-অবরোধের মতো সহিংস কোনো কর্মসূচিও দেবে না তারা। শুধু জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে দেশ-বিদেশের জনমত নিজেদের পক্ষে আনতে তারা কাজ করবেন। আর এর ফাঁকে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে।
বিএনপি সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচন ৫০ শতাংশ সুষ্ঠু হলেই বিএনপির জয়ের সম্ভাবনা প্রবল বলে তাদের ধারণা। এ জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকারকে বাধ্য করানো বিএনপির এখন প্রধান লক্ষ্য। এ জন্যই একটি স্বাধীন এবং শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে রাষ্ট্রপতিকে কয়েকটি প্রস্তাব এবং নাম দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি যদি সেসব প্রস্তাবকে একেবারেই উপেক্ষা করে ইসি গঠন করেন তাহলে এর কারণ জানতে চাওয়ার পাশাপাশি দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিযোগ করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিও দিতে পারে দলটি। আর রাষ্ট্রপতি বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবকে গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করলে রাষ্ট্রপতিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধন্যবাদ জানানো হবে।
বিএনপি সূত্র মতে, ইসি গঠনের পর বিএনপির অধিকাংশ কর্মপরিকল্পনা থাকবে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সরকারের একটি রূপরেখা দেবে বিএনপি। এতে মূল বিষয়টি থাকবে যে নামেই হোক নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। এ নিয়ে সংলাপে বসতে সরকারকে নানাভাবে চাপও দেয়া হবে। প্রয়োজনে বিদেশি বন্ধুদের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগের চেষ্টাও থাকবে।
সূত্র জানায়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবি থাকবে বিএনপির। শেষ পর্যন্ত যদি এ দাবি আদায় সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে সব দলের অংশগ্রহণে যৌথ সরকারের গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব এলেও তাতে আপত্তি করবে না দলটি। নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া যৌথ সরকারে বিএনপির অংশগ্রহণ সম্ভব নয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এ ধরনের যুক্তি দিলে কিভাবে সরকারে বিএনপির অন্তর্ভুক্তি সম্ভব সেসব বিষয়ের তথ্য-উপাত্ত জাতির সামনে উপস্থাপন করবে বিএনপি। মোট কথা, শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পন্থায় সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আগামী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত চেষ্টা করবে বিএনপি। শান্তিপূর্ণ পদক্ষেপে যদি কাজ না হয় আর একেবারে জোর করে আবারও ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করে তাহলে নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে বড় ধরনের কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি।
বিএনপি সূত্র মতে, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা করার পাশাপাশি সংগঠনকে শক্তিশালী করার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব থাকবে বিএনপির। তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত প্রত্যেকটি কমিটির নেতৃত্বে যাতে সুযোগ্যরা আসে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট নেতাদের কঠোর নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে প্রত্যেকটি জেলা কমিটি গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।
সূত্র মতে, কমিটি গঠনের পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে বিএনপি। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী বাছাই ভুল ছিল বলেও দলে আলোচনা আছে। পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর ব্যক্তি ইমেজও বিএনপির পরাজয়ে ভূমিকা রেখেছে বলে তারা মনে করেন। সবমিলে পরবর্তী সময়ে শুধু মার্কার জোরে নির্বাচনে লড়তে চায় না বিএনপি। যোগ্য প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়েই জয় ছিনিয়ে আনতে চায়। সঙ্গতকারণে কাকে কোন আসনে মনোনয়ন দিলে দল লাভবান হবে সে বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েই প্রার্থী ঠিক করা হবে। বিশেষ কারণে বহিরাগত এবং ব্যবসায়ীরা এসে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে যাবেন এমন হওয়ার সম্ভাবনাও এবার কম থাকবে।
দলের সিনিয়র এক নেতা জানান, ১৯৯০ থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ের আন্দোলন হিসেব করে এবারও বর্তমান সরকারের পতনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। একরকম প্রস্তুতি ছাড়াই বড় আন্দোলনের কর্মসূচিও দেয়া হয়েছিল। সঙ্গতকারণে ফল এসেছে নেতিবাচক। তাই এবার নতুন কিছু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
বিএনপির পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. অব. মাহবুবুর রহমান জানান, নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএনপির আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। আশা করছেন, রাষ্ট্রপতি একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সরকারের সঙ্গে সংলাপ করতে চায় বিএনপি। আলোচনার মাধ্যমে সব ধরনের সংকট সমাধান সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না হলে আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায় করা হবে।