মেহেরপুরে সন্তানের মৃত্যুর অনুমতি চেয়ে আবেদন
- আপলোড টাইম : ০১:৩২:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী ২০১৭
- / ৪০৪ বার পড়া হয়েছে
মেহেরপুর অফিস: প্রত্যেক বাবা-মা চায় তাদের সন্তান ভালো থাকুক। কোনো রোগে আক্রান্ত হলে তারা সব সময় সন্তানদের সুস্থ্যতা কামনা করেন। কিন্তু মেহেরপুর জেলা শহরের বেড়পাড়ার তোফাজ্জেল হোসেন নিজের সন্তান, স্ত্রী ও নাতনির মৃত্যু কামনা করেছেন। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঘটনাটি সত্য। এমনকি তাদের মৃত্যুর অনুমতি চেয়ে মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর আবেদনও করেছেন তোফাজ্জেল হোসেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মেহেরপুরের ডিসি পরিমল সিংহের কাছে এ লিখিত আবেদন করেন তিনি। ছেলের চিকিৎসার ব্যয়ভার মেটাতে না পারা অসহায় বাবা তোফাজ্জেল হোসেন তার আবেদনে বলেছেন, দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত দুই ছেলে, স্ত্রী ও নাতনির মৃত্যুর অনুমতি দেয়া হোক না হলে চিকিৎসার ব্যয়ভার নেয়া হোক। জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) খায়রুল হাসান এ আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ভারতের কেয়ার হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ গৌরাঙ্গ মন্ডল, তপন কুমার বিশ্বাস, ভারতের কোঠারি মেডিকেল সেন্টারের শিশু বিশেষজ্ঞ ড.স্বপন মুখার্জিও সবুরের মল-মূত্র, রক্ত, কফ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন ‘ডুফিনি মাসকুলার ডিসট্রোফি’ ডিজিজ বলে। তোফাজ্জেলের দুই ছেলে জন্মের পর থেকেই ‘ডুফিনি মাসুকলার ডিসট্রোফি’ রোগে আক্রান্ত। যার ওষুধ আজও আবিস্কার হয়নি। দূরারোগ্য রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিকিয়ে দিতে হয়েছে তাকে। আত্মীয়-স্বজনরাও হাত গুটিয়ে নিয়েছেন তার কাছ থেকে। দিন যতই যাচ্ছে ততই মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছেন বড় সন্তানটি। তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‘ছেলের চিকিৎসা করাতে সঞ্চিত সব অর্থই শেষ হয়ে গেছে। এরপরও আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের কাছ থেকে টাকা ঋণ নিয়েও চিকিৎসা করানো হয়েছে। এখন একদম নিঃস্ব।’ জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) খায়রুল হাসান বলেন, ‘বিষয়টি অত্যান্ত মানবিক। আবেদনটি পড়ে চোখে পানি ধরে রাখতে পারিনি। আমরা বিভিন্নভাবে তাকে সাহায্য সহযোগিতা করতে চাই। আমরাও চাই তার তিনটি সন্তান বেঁচে উঠুক। সুস্থ থাকুক।’