দ্বায়বদ্ধ সভ্যসমাজ কতটা দ্বায়মুক্ত? এ সময় যাদের হাতে থাকবে বই, সেই হাতে শোভা পাচ্ছে তাঁস!
- আপলোড টাইম : ১২:০২:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০১৭
- / ৩৭৪ বার পড়া হয়েছে
বদরগঞ্জ প্রতিনিধি: বিশ্বায়নের যুগে যখন বিশ্ব-তথা বিশ্বের প্রতিটি দেশই প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে ক্রমসভ্যতায় এগিয়ে চলার মানস পটে মানবকে মানব সম্পদে রূপান্তরীত করার জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তখন মনে করি আমরাও তার বাইরে নয়। সেক্ষেত্রে আমাদের দেশও পিছিয়ে নেই, পিছিয়ে থাকবোনা অন্যদেশ অপেক্ষা খুব একটা ব্যবধানে। যে কারণে, দেশের অলিতে-গলিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন তথা উন্নয়নের ধারা বেগবান করতে প্রয়োজনীয় সকল কর্মকান্ড সময়ের সাথেই গ্রহণ করা হচ্ছে। এরপর রয়েছে এলাকা ভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষাসহ উচ্চ-মাধ্যমিক ও কলেজ। দ্বায়বদ্ধ সভ্যসমাজও প্রয়োজনীয় সময়ের দাবী অনুযায়ী সমাজকে সর্ব প্রকার কুলোশতা মুক্ত করতেও বদ্ধ পরিকর। কিন্তু তারপরও থেকে যাচ্ছে সমাজের দায়বদ্ধতা। কেন, এমন প্রশ্নের মুখো-মুখি আজ সমাজের সচেতন ও অভিজ্ঞ জনেরা। বর্তমান সমাজের সকল শ্রেণী পেশার সন্তানেরা শিক্ষা মুখি হলেও অ-শিক্ষার অন্ধকারে এখনও ডুবে আছে অসংখ্য মানব মন্ডলী। সমাজ তাদেরকে কেন অন্ধকার থেকে আলোর ভূবনে নিয়ে আসছেনা, নাকি তারা আসছেনা এমন মানবিক প্রশ্নও অনেকের ? সমাজের বুকে অনেক অবহেলিত মানুষ রয়েছে যারা সমাজ তন্ত্রের নিকট এখনও রিতিমত বন্দি। যাদের স্বপ্ন সাধ থাকার পরও থেকে যায় অন্ধকারে। এমন বাস্তবতাও বোঝা যাবে, যাদের হাতে যে সময়ে বই থাকার কথা সেই হাতে উঠে আসছে রক্ত ঘামানো পরিশ্রমের হাতুর বাটালি, কখনও মুজুরি খাটা কৃষি কাজের নিড়েন-কাস্তে। আবার কখনওবা কমলমতি হাতে ঘৃনিত তাঁসের খেলা। এছাড়াও রয়েছে সমাজের বাঁধনহারা টোকায় জীবনের বিভিন্ন প্রকার অসঙ্গতী। এমনী সফম্বল এলাকার স্কুল বয়সী দু’টি শিশুকে নিয়েই প্রত্যয়ী আজকের এতটুকু লেখা। যাদের ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি কাস্তে পড়ে আছে পাশে। কলার পাতা কেটে কোন এক মুক্ত মাঠের বুকে মুক্ত মনেই তাঁস খেলায় মত্ত হয়েছে দু’টি শিশু। যে সময় তাদের থাকার কথা ছিলো স্কুলে, হাতে থাকবে বই, কিন্তু সে হাতে শোভা পাচ্ছে একগুচ্ছ তাঁস। এমন জীবনের যেন কোন স্বপ্ন নেই, স্বপ্ন নেই মানুষ হবার, তাগিদ নেই অনুশাসন কিংবা অভিভাবকের খোঁজ টুকু নেবার। এ সমাজ যেন দায়িত্বের দ্বায়ভার অনেক আগেই ছেড়ে দিয়ে পালিয়েছে। এমনী অসংখ্য অ-সঙ্গতীতে সমাজের হেটে চলা। তারপরও দ্বায়বদ্ধ সমাজ যেন এক নির্বিকার দর্শক। কে ততটা অন্ধকারে ডুবলো তা দেখার প্রয়োজনবোধ মনে করেনা। যে কারণে সমাজের বাকে বাকে এখনও এমন অনেক নি¤œ শ্রেণীর মানুষেরা রয়েছে যাদেরকে আলোয় আনা আবশ্যক। কর্তব্যের মাঝে যদি এমন তদারকি সমাজ দ্বায়বদ্ধ মনে করতো তাহলে আজ ওই তাঁস খেলা দু’টি শিশু তাঁস না খেলে স্কুলে যেত, হাতে থাকতো বই। তাহলে হয়তোবা দ্বায়বদ্ধ সভ্যসমাজ ভাবতে পারতো সমাজকে নিয়ে দ্বায় মুক্তির ভাবনা।