ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

কবর জিয়ারতে ইসলামী বিধান

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৫৮:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী ২০১৭
  • / ৬২১ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: জাহেলি যুগে কবরপূজা হতো। এর প্রতি ঘৃণা সৃষ্টির জন্য রাসুল (সা.) প্রথমে উম্মতকে কবরের কাছে যেতে নিষেধ করেছিলেন। এরপর যখন ওই সময়ের কুসংস্কার ভালোভাবে দূর হয় তখন তিনি কবর জিয়ারতের অনুমতি দেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি তোমাদের কবর-জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা কবর জিয়ারত করতে পারো। কারণ তা দুনিয়ার মোহ দূর করে এবং আখেরাতকে মনে করিয়ে দেয়’ (ইবনে মাজাহ)। তবে কবরে যাওয়ার অনুমতি শুধু পুরুষের জন্য নাকি নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য এটা নিয়ে রয়েছে মতভেদ। এক হাদিসে রাসুল (সা.) কবর জিয়ারতকারী নারীদের ওপর অভিসম্পাত করেছেন। আবার কেউ কেউ বলেন রাসুলের এই বক্তব্য নারীদের অনুমতি দেয়ার আগে। এখন পুরুষের মতো নারীদেরও কবর জিয়ারতের অনুমতি আছে। কবর কিভাবে জিয়ারত করতে হবে এর পদ্ধতিও বলে দিয়েছেন রাসুল (সা.)। বলেছেন কেউ যখন কবরস্থানের পাশ দিয়ে বা জিয়ারত করতে যায় সে যেন মৃত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্য করে সালাম দেয়। এরপর কবরবাসীর জন্য মাগফিরাতের দোয়া করবে এবং কিছু পড়ে ইসালে সওয়াব করবে। সুরা ফাতেহা, এখলাস, তাকাসুর, আয়াতুল কুরসি এসব পড়ার কথা হাদিসে আছে। ইস্তেগফার ও দরুদ শরিফ পড়ে হাত উঠিয়ে দোয়া করবে। দোয়ায় মৃত ব্যক্তিদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে, তাদের উঁচু মর্যাদাদানের জন্য প্রভুর কাছে আকুতি-মিনতি জানাবে। কবর জিয়ারতের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তিরা উপকৃত হয়ে থাকেন। তাদের জন্য যে দোয়া করা হয় তা তাদের রুহে পৌঁছে। জীবিতরা যেন দোয়া করে এই কামনা প্রতিটি মৃত ব্যক্তির। তবে শুধু কবরে গিয়েই দোয়া করতে হবে এমনটা জরুরি নয়। অনেক দূর-দূরান্তে থেকেও মৃতদের জন্য দোয়া করা যায়। কবর জিয়ারতের দ্বারা আরেকটি বড় উপকার হলো এতে জিয়ারতকারীর মন নরম হয়। একজন যত পাষাণ হƒদয়ের মানুষই হোক না কেন কবরের পাশে গেলে তার অন্তর বিগলিত হবেই। এজন্য বেশি বেশি কবর জিয়ারতের দ্বারা অন্তর নরম হয় এবং আল্লাহর দিকে ধাবিত হয়। রাসুল (সা.) প্রায়ই মদিনার কবরস্থান জান্নাতুল বাকিতে চলে যেতেন। এক শবে বরাতে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না পরে আয়েশা (র.) তাকে গিয়ে কবর জিয়ারতে পেয়েছেন। এই ঘটনা থেকেই প্রমাণিত হয় কবর জিয়ারত সওয়াবের কাজ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

কবর জিয়ারতে ইসলামী বিধান

আপলোড টাইম : ১১:৫৮:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী ২০১৭

ধর্ম ডেস্ক: জাহেলি যুগে কবরপূজা হতো। এর প্রতি ঘৃণা সৃষ্টির জন্য রাসুল (সা.) প্রথমে উম্মতকে কবরের কাছে যেতে নিষেধ করেছিলেন। এরপর যখন ওই সময়ের কুসংস্কার ভালোভাবে দূর হয় তখন তিনি কবর জিয়ারতের অনুমতি দেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি তোমাদের কবর-জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা কবর জিয়ারত করতে পারো। কারণ তা দুনিয়ার মোহ দূর করে এবং আখেরাতকে মনে করিয়ে দেয়’ (ইবনে মাজাহ)। তবে কবরে যাওয়ার অনুমতি শুধু পুরুষের জন্য নাকি নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য এটা নিয়ে রয়েছে মতভেদ। এক হাদিসে রাসুল (সা.) কবর জিয়ারতকারী নারীদের ওপর অভিসম্পাত করেছেন। আবার কেউ কেউ বলেন রাসুলের এই বক্তব্য নারীদের অনুমতি দেয়ার আগে। এখন পুরুষের মতো নারীদেরও কবর জিয়ারতের অনুমতি আছে। কবর কিভাবে জিয়ারত করতে হবে এর পদ্ধতিও বলে দিয়েছেন রাসুল (সা.)। বলেছেন কেউ যখন কবরস্থানের পাশ দিয়ে বা জিয়ারত করতে যায় সে যেন মৃত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্য করে সালাম দেয়। এরপর কবরবাসীর জন্য মাগফিরাতের দোয়া করবে এবং কিছু পড়ে ইসালে সওয়াব করবে। সুরা ফাতেহা, এখলাস, তাকাসুর, আয়াতুল কুরসি এসব পড়ার কথা হাদিসে আছে। ইস্তেগফার ও দরুদ শরিফ পড়ে হাত উঠিয়ে দোয়া করবে। দোয়ায় মৃত ব্যক্তিদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে, তাদের উঁচু মর্যাদাদানের জন্য প্রভুর কাছে আকুতি-মিনতি জানাবে। কবর জিয়ারতের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তিরা উপকৃত হয়ে থাকেন। তাদের জন্য যে দোয়া করা হয় তা তাদের রুহে পৌঁছে। জীবিতরা যেন দোয়া করে এই কামনা প্রতিটি মৃত ব্যক্তির। তবে শুধু কবরে গিয়েই দোয়া করতে হবে এমনটা জরুরি নয়। অনেক দূর-দূরান্তে থেকেও মৃতদের জন্য দোয়া করা যায়। কবর জিয়ারতের দ্বারা আরেকটি বড় উপকার হলো এতে জিয়ারতকারীর মন নরম হয়। একজন যত পাষাণ হƒদয়ের মানুষই হোক না কেন কবরের পাশে গেলে তার অন্তর বিগলিত হবেই। এজন্য বেশি বেশি কবর জিয়ারতের দ্বারা অন্তর নরম হয় এবং আল্লাহর দিকে ধাবিত হয়। রাসুল (সা.) প্রায়ই মদিনার কবরস্থান জান্নাতুল বাকিতে চলে যেতেন। এক শবে বরাতে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না পরে আয়েশা (র.) তাকে গিয়ে কবর জিয়ারতে পেয়েছেন। এই ঘটনা থেকেই প্রমাণিত হয় কবর জিয়ারত সওয়াবের কাজ।