ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫

ধৈর্য মানুষের শ্রেষ্ঠ সদগুণ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০২:০৫:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬
  • / ৫২৮ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: মহান রাব্বুল আলামিন মানবজাতিকে সৃষ্টি করার পাশাপাশি কিছু মানবীয় গুণ রেখে দিয়েছেন, মানুষ সেই গুণাবলি অর্জনের মাধ্যমে পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠত্বের সিংহাসনে সমাসীন হতে পারে। সেই গুণগুলোর মধ্যে ধৈর্য হচ্ছে শ্রেষ্ঠ সদগুণ যা মানুষকে মহান আদর্শের দিকে পরিচালিত করে। এ গুণটি একান্তই মানবীয়। পশু-পাখিদের মধ্যে তা নেই বলেই তারা হীন প্রবৃত্তিসম্পন্ন এবং উত্তেজনাময় হিংস্র প্রাণী। আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহম্মদ (সা.) ছিলেন ধৈর্যের মূর্তপ্রতীক। তাঁর এ মহৎ গুণের কাছে বারবার পরাজিত হয়েছে চিরশত্রু কাফের-মুশরিকরা। শুধু তিনি নন, সব নবী-রাসুলের চরিত্রের অন্যতম দিক ছিল ধৈর্য। আল্লাহর নিবেদিতপ্রাণ কিশোর ইসমাইল (আ.) নিজের কুরবানির সময় বলেছিলেন, ‘আব্বা, আপনাকে যে কাজে আদেশ করা হয়েছে তা আপনি কার্যকর করুন, ইনশাআল্লাহ আপনি আমাকে ধৈর্যশীলই পাবেন।’ হজরত আইয়ুব (আ.) দীর্ঘকাল ধরে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে সবর করে যান। তিনি ধৈর্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সবকিছু ফিরে পেয়েছিলেন। এ গুণটি না থাকার কারণে আমাদের সমাজে ব্যক্তি, পরিবার, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিরাজমান। তাই বর্তমানে এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে। ধৈর্য মানুষের আত্মসম্মান রক্ষা করে, শক্তির অপচয় ও অপব্যবহার রোধ করে। ইসলামের মৌলিক ইবাদতগুলো পালনের ক্ষেত্রে ধৈর্যের প্রতিফলন রয়েছে। ধৈর্য অবলম্বনের মানসিকতা না থাকার কারণে নফল মুস্তাহাব তো দূরের কথা ইসলামের আবশ্যিক বিধানগুলো মেনে চলাও সুকঠিন মনে হয়। দাওয়াত ও তাবলিগের ক্ষেত্রেও চরম ধৈর্যের পরাকাষ্ঠা দেখাতে হয়। পবিত্র কোরান ও হাদিসের একাধিক জায়গায় ধৈর্য ধারণের কথা বলা হয়েছে। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর এবং পরহেজগারি অবলম্বন কর, তবে তা হবে একান্ত সৎসাহসের ব্যাপার।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাগের সময় নিজেকে সংযত রাখতে পারে সেই প্রকৃত বীর।’ ধৈর্য সবাইকে বিনয়ী করে তোলে। তাই এ গুণটি অর্জন করা অত্যাবশ্যক। তা অর্জন করার উপায় হচ্ছে নিজের প্রচেষ্টা। পাশাপাশি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করতে চায়, আল্লাহ তাকে ধৈর্য ধারণের শক্তি দান করেন, ধৈর্যের চেয়ে উত্তম ও প্রশস্ততম দান কেউ লাভ করতে পারে না।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

ধৈর্য মানুষের শ্রেষ্ঠ সদগুণ

আপলোড টাইম : ০২:০৫:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬

ধর্ম ডেস্ক: মহান রাব্বুল আলামিন মানবজাতিকে সৃষ্টি করার পাশাপাশি কিছু মানবীয় গুণ রেখে দিয়েছেন, মানুষ সেই গুণাবলি অর্জনের মাধ্যমে পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠত্বের সিংহাসনে সমাসীন হতে পারে। সেই গুণগুলোর মধ্যে ধৈর্য হচ্ছে শ্রেষ্ঠ সদগুণ যা মানুষকে মহান আদর্শের দিকে পরিচালিত করে। এ গুণটি একান্তই মানবীয়। পশু-পাখিদের মধ্যে তা নেই বলেই তারা হীন প্রবৃত্তিসম্পন্ন এবং উত্তেজনাময় হিংস্র প্রাণী। আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহম্মদ (সা.) ছিলেন ধৈর্যের মূর্তপ্রতীক। তাঁর এ মহৎ গুণের কাছে বারবার পরাজিত হয়েছে চিরশত্রু কাফের-মুশরিকরা। শুধু তিনি নন, সব নবী-রাসুলের চরিত্রের অন্যতম দিক ছিল ধৈর্য। আল্লাহর নিবেদিতপ্রাণ কিশোর ইসমাইল (আ.) নিজের কুরবানির সময় বলেছিলেন, ‘আব্বা, আপনাকে যে কাজে আদেশ করা হয়েছে তা আপনি কার্যকর করুন, ইনশাআল্লাহ আপনি আমাকে ধৈর্যশীলই পাবেন।’ হজরত আইয়ুব (আ.) দীর্ঘকাল ধরে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে সবর করে যান। তিনি ধৈর্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সবকিছু ফিরে পেয়েছিলেন। এ গুণটি না থাকার কারণে আমাদের সমাজে ব্যক্তি, পরিবার, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিরাজমান। তাই বর্তমানে এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে। ধৈর্য মানুষের আত্মসম্মান রক্ষা করে, শক্তির অপচয় ও অপব্যবহার রোধ করে। ইসলামের মৌলিক ইবাদতগুলো পালনের ক্ষেত্রে ধৈর্যের প্রতিফলন রয়েছে। ধৈর্য অবলম্বনের মানসিকতা না থাকার কারণে নফল মুস্তাহাব তো দূরের কথা ইসলামের আবশ্যিক বিধানগুলো মেনে চলাও সুকঠিন মনে হয়। দাওয়াত ও তাবলিগের ক্ষেত্রেও চরম ধৈর্যের পরাকাষ্ঠা দেখাতে হয়। পবিত্র কোরান ও হাদিসের একাধিক জায়গায় ধৈর্য ধারণের কথা বলা হয়েছে। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর এবং পরহেজগারি অবলম্বন কর, তবে তা হবে একান্ত সৎসাহসের ব্যাপার।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাগের সময় নিজেকে সংযত রাখতে পারে সেই প্রকৃত বীর।’ ধৈর্য সবাইকে বিনয়ী করে তোলে। তাই এ গুণটি অর্জন করা অত্যাবশ্যক। তা অর্জন করার উপায় হচ্ছে নিজের প্রচেষ্টা। পাশাপাশি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করতে চায়, আল্লাহ তাকে ধৈর্য ধারণের শক্তি দান করেন, ধৈর্যের চেয়ে উত্তম ও প্রশস্ততম দান কেউ লাভ করতে পারে না।’