ইপেপার । আজ শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

খেজুর গুড় উৎপাদনে ব্যাস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা গ্রাম বাংলার কৃষক পরিবারে এখন অন্যরকম পরিবেশের সৃষ্টি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০২:৩৮:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬
  • / ৬৫১ বার পড়া হয়েছে

Darasana Pictur-27,12,2016

আওয়াল হোসেন: দামুড়হুদা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা এখন খেজুর গুড় উৎপাদনে ব্যাস্ত সময় পার করছে। শীতের শুরু থেকে খেজুর রস আহরণের জন্য খেজুর গাছ প্রস্তুত করা। গাছ থেকে রস আহরণ করে বাইনে নিয়ে এসে ভাড় থেকে রস পরিস্কার করে জ্বালায় ঢেলে প্রায় ১ঘন্টা ধরে জালিয়ে গুড়, পাটালী তৈরী করার কাজে ব্যাস্ত থাকতে হয়। এবছর তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে অতিরিক্ত শীত না থাকায় পাটালী গুড় করা সভম্ব হচ্ছে না। লোকনাথপুর গ্রামের মাহাম্মদ আলীর ছেলে বাবুল হোসেন, আবুল হোসেন ও লোকমান উদ্দিনের কাওছার আলী জানান, চলতি খেজুর গুড় উৎপাদন মৌসুমে ২৫০টি গাছ রস আহরণের জন্য খেজুর গাছ প্রস্তুত করেছেন। প্রতিদিন ঐ সব কৃষকরা ৫০টি করে খেজুর গাছ কেটে রস আহরণ হচ্ছে ১৬ ভাড়। আর গুড় হচ্ছে ১২/১৩ কেজি গুড় উৎপাদন করছেন। মাঘ মাসের দিকে ৫০টি গাছ থেকে ২০/২২ ভার করে রস হবে। তখন রসের পরিমান বাড়বে সেই সাথে গুড়ের পরিমানও বাড়বে। এখন রস একটু কম হচ্ছে। গাছ নামলে ধীরে ধীরে রসের পরিমান বাড়লে গুড়ের পরিমান ও বেড়ে যাবে। আগামী ৫মাস ধরে এসব খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হবে বলে কৃষকরা জানান। তখন এক ভাড় রসে তিন পোয়া করে গুড় পাওয়া যাবে। প্রতি বছর ৫ মাসে একজন কৃষক ১০/১২ মন গুড় উৎপাদন করে থাকি। কোন কোন কৃষক এর চেয়ে বেশী গুড় উৎপাদন করতে পারে। বর্তমানে আমরা ৭০টাকা করে এ বছর খেজুর গুড় বিক্রী করছি। চিনি মেশানোর কথা বললে কৃষকরা বলেন চিনির মুল্যে বেশি হওয়ায় এ বছর কোন কৃষক খেজুর গুরের সাথে চিনি মেশানো হচ্ছে না। কৃষকরা বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহের জন্য ভাড় পেতে রাখে। পরদিন ভোর বেলা গাছ থেকে ভাড় খুলে নিয়ে এসে সকালের সোনালী রোদে বাইনের পাশে বসে প্রায় ঘন্টা খানেক ধরে রস জালানীর পর গুড় উৎপন্ন হয়। রস জালানীর পর গুড় হওয়ার পূর্বে গুড়ের মৌ মৌ গন্ধে গ্রামের আশে পাশের বাড়ি ঘর ভরে উঠে। কৃষকের ছোট ছোট  ছেলে মেয়েরা বাটিতে গরম গুড় নিয়ে মজা করে খেতে দেখা যায়। এছাড়া গরম গুড় দিয়ে রুটি ও মুড়ি মাখিয়ে খাওয়ার মজাই আলাদা। নতুন গুড় উঠলে কৃষক ও কৃষানীর ঘর আনন্দে ভরে ওঠে। কৃষানীর ঘরে ঘরে নতুন নতুন পিঠা পুলি বানানোর ধুম পড়ে যায়। শুরু হয় নানা রকমের আতিথেয়তা। গ্রাম বাংলার কৃষক পরিবারে এ এক অন্য রকমের অনুভূতি ও পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

খেজুর গুড় উৎপাদনে ব্যাস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা গ্রাম বাংলার কৃষক পরিবারে এখন অন্যরকম পরিবেশের সৃষ্টি

আপলোড টাইম : ০২:৩৮:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬

Darasana Pictur-27,12,2016

আওয়াল হোসেন: দামুড়হুদা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা এখন খেজুর গুড় উৎপাদনে ব্যাস্ত সময় পার করছে। শীতের শুরু থেকে খেজুর রস আহরণের জন্য খেজুর গাছ প্রস্তুত করা। গাছ থেকে রস আহরণ করে বাইনে নিয়ে এসে ভাড় থেকে রস পরিস্কার করে জ্বালায় ঢেলে প্রায় ১ঘন্টা ধরে জালিয়ে গুড়, পাটালী তৈরী করার কাজে ব্যাস্ত থাকতে হয়। এবছর তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে অতিরিক্ত শীত না থাকায় পাটালী গুড় করা সভম্ব হচ্ছে না। লোকনাথপুর গ্রামের মাহাম্মদ আলীর ছেলে বাবুল হোসেন, আবুল হোসেন ও লোকমান উদ্দিনের কাওছার আলী জানান, চলতি খেজুর গুড় উৎপাদন মৌসুমে ২৫০টি গাছ রস আহরণের জন্য খেজুর গাছ প্রস্তুত করেছেন। প্রতিদিন ঐ সব কৃষকরা ৫০টি করে খেজুর গাছ কেটে রস আহরণ হচ্ছে ১৬ ভাড়। আর গুড় হচ্ছে ১২/১৩ কেজি গুড় উৎপাদন করছেন। মাঘ মাসের দিকে ৫০টি গাছ থেকে ২০/২২ ভার করে রস হবে। তখন রসের পরিমান বাড়বে সেই সাথে গুড়ের পরিমানও বাড়বে। এখন রস একটু কম হচ্ছে। গাছ নামলে ধীরে ধীরে রসের পরিমান বাড়লে গুড়ের পরিমান ও বেড়ে যাবে। আগামী ৫মাস ধরে এসব খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হবে বলে কৃষকরা জানান। তখন এক ভাড় রসে তিন পোয়া করে গুড় পাওয়া যাবে। প্রতি বছর ৫ মাসে একজন কৃষক ১০/১২ মন গুড় উৎপাদন করে থাকি। কোন কোন কৃষক এর চেয়ে বেশী গুড় উৎপাদন করতে পারে। বর্তমানে আমরা ৭০টাকা করে এ বছর খেজুর গুড় বিক্রী করছি। চিনি মেশানোর কথা বললে কৃষকরা বলেন চিনির মুল্যে বেশি হওয়ায় এ বছর কোন কৃষক খেজুর গুরের সাথে চিনি মেশানো হচ্ছে না। কৃষকরা বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহের জন্য ভাড় পেতে রাখে। পরদিন ভোর বেলা গাছ থেকে ভাড় খুলে নিয়ে এসে সকালের সোনালী রোদে বাইনের পাশে বসে প্রায় ঘন্টা খানেক ধরে রস জালানীর পর গুড় উৎপন্ন হয়। রস জালানীর পর গুড় হওয়ার পূর্বে গুড়ের মৌ মৌ গন্ধে গ্রামের আশে পাশের বাড়ি ঘর ভরে উঠে। কৃষকের ছোট ছোট  ছেলে মেয়েরা বাটিতে গরম গুড় নিয়ে মজা করে খেতে দেখা যায়। এছাড়া গরম গুড় দিয়ে রুটি ও মুড়ি মাখিয়ে খাওয়ার মজাই আলাদা। নতুন গুড় উঠলে কৃষক ও কৃষানীর ঘর আনন্দে ভরে ওঠে। কৃষানীর ঘরে ঘরে নতুন নতুন পিঠা পুলি বানানোর ধুম পড়ে যায়। শুরু হয় নানা রকমের আতিথেয়তা। গ্রাম বাংলার কৃষক পরিবারে এ এক অন্য রকমের অনুভূতি ও পরিবেশ সৃষ্টি হয়।