চুয়াডাঙ্গার ১ ও ১৫ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্যপদে ভোট স্থগিত : ১৯ পদে লড়ছেন ৮২ জন মধ্যরাতে শেষ হয়েছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা : ২৮ ডিসেম্বর ভোট জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৫ জন ম্যজিস্ট্রেট নিয়োগ : মোবাইল কেন্দ্রীয় ও স্ট্রাইকিং ফোর্স ৪৫টি
- আপলোড টাইম : ১০:৪৩:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬
- / ৪৩৭ বার পড়া হয়েছে
এমএ মামুন/উজ্জল মাসুদ: শেষ হয়েছে জেলা পরিষদ নির্বাচনের সব ধরণের প্রচার-প্রচারণা। গতরাত ১২টা থেকে নির্বাচনী এলাকায় সব ধরণের প্রচার-প্রচারণা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে একটি নির্দেশনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। রোববার মধ্যরাত থেকে সকল প্রকার প্রচারণা বন্ধের কথা নির্দেশনায় বলা হয়েছে। কোন প্রার্থী নির্দেশনা না মানলে তার বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতেও বলা হয় নির্দেশনায়। সব ধরণের প্রচার-প্রচারণা, যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভায় সংশ্লিষ্ট পরিষদে নির্বাচনে বিঘ্ন ঘটতে পারে এমন কার্যক্রমে গ্রহণ না করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে, চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৫টি কেন্দ্রের মধ্যে দুইটি কেন্দ্রে শুধু সাধারণ সদস্য পদের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। সীমানা জটিলতার কারণে ৩ ও ১৫ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হলেও চেয়ারম্যান পদে ভোটগ্রহণ চলবে। এদিকে ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনকে ঘিরে বেশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পুলিশ প্রশাসন। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন, যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে সকল প্রকার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি কেন্দ্রে একজন তথা ১৫টি কেন্দ্রে ১৫জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে।
প্রথমবারের মত হতে যাওয়া জেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচারণা রোববার মধ্যরাত ১২টা থেকে শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনের সহকরী সচিব আশফাকুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, জেলা পরিষদ নির্বাচনী এলাকায় ২৬ ডিসেম্বর থেকে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কোন প্রার্থী নির্দশনা না মানলে তার বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্যে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীও যথাসময়ে নিয়োজিত থাকবে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
২৭ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে ২৮ ডিসেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রের আশপাশে যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে নির্বাচন কমিশন।তার মধ্যে রয়েছে বেবিট্যাক্সি ভা অটোরিক্সা, ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, জীপ, পিকআপ, প্রাইভেটকার, বাস, ট্রাক, টেম্পু ইত্যাদি। এছাড়া ২৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১২টা থেকে আগামী ২৮ ডিসেম্বর মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখা হয়েছে। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পরিচয়পত্রধারী নির্বাচনী এজেন্ট ও পর্যবেক্ষকদের জন্য নিষেধাজ্ঞা শিথিলযোগ্য। নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত পরিচয়পত্রধারী সাংবাদিক, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারি, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং জরুরী কাজে নিয়োজিত যেমন, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, ডাক ও টেলিযোগাযোগের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। যানবাহন চলাচলে উল্লিখিত নিষেধাজ্ঞা আরোপে জেলা প্রশাসককে ক্ষমতা প্রদান করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, আগামী ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটদানের সুবিধার্থে জরুরী গুরুত্বপূর্ণ কাজ ব্যতীত অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ না করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরিষদের সভা অনুষ্ঠানসহ বিশেষ করে নির্বাচনে বিঘ্ন ঘটতে পারে এমন কার্যক্রমে গ্রহণ না করার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভাকে নির্দেশনা প্রদান করার জন্য সিদ্ধান্ত প্রদান করেছে নির্বাচন কমিশন।
অপরদিকে, ভোটগ্রহণের দিন তথা আগামী বুধবার ভোটকেন্দ্রের জন্য নির্দিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা স্থাপনা সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহে ক্লাস, পরিক্ষা ও দাপ্তরিক সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। নির্বাচনে ব্যবহৃত সকল প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীর ছুটি দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
ভোটগ্রহণ শুরুর পূর্বে ৩২ ঘন্টা, ভোটগ্রহণের দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা, ভোটগ্রহণের দিন রাত ১২টা থেকে পরবর্তি ৪৮ ঘন্টা সময়ের মধ্যে নির্বাচনী এলাকায় সভা, মিছিল শোভাযাত্রা থেকে বিরত থাকার কথা বলা হয়েছে। নির্বাচন কর্তৃক আচরণ বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, কোন ব্যাক্তি ওই সময়ের মধ্যে কোন প্রকার সভা, মিছিল বা শোভাযাত্রার আহ্বান এবং যোগদান করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভোটকেন্দ্রের ৪শ গজের মধ্যে কোন ভোটারের কাছে ভোট প্রার্থনা, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে ভোট না দেয়ার জন্য প্ররোচিত করলে তার বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২৮ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা জেলার ১৫ টি ওয়ার্ডের ১৫ টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলবে। চুয়াডাঙ্গার ১৫ টি ওয়ার্ডের ৫২৮ জন ভোটার ভোটদান করবেন। তবে ৩ ও ১৫ নং ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্যপদে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি কেন্দ্রে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। তারা সার্বক্ষণিক নির্দিষ্ট এলাকায় দায়ীত্বরত থাকবেন।
চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন জানান, জেলা পরিষদ নির্বাচনে সার্বিক পরিস্থিতি পুলিশের অনুকূলে রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে আনসার-পুলিশ সমন্বয়ে টিম থাকবে। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে একটি মোবাইল পার্টি, একটি কেন্দীয় পার্টি এবং একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। মোবাইল পার্টি একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে থাকবে। এছাড়া ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে দুই জন পুলিশ সদস্য সার্বক্ষণিক থাকবে। কেন্দ্রের আশেপাশে বহিরাগতদের প্রবেশ এড়াতে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে।