কল্যাণকামিতা ও মহানবী (সা.)
- আপলোড টাইম : ০২:২১:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬
- / ৫০১ বার পড়া হয়েছে
ধর্ম ডেস্ক: অন্যের জন্য কল্যাণ কামনা করা এটা অনেক বড় গুণ। ইসলাম কল্যাণকামিতাকে দীন হিসেবে উল্লেখ করেছে। মানবতার নবী মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন সবচেয়ে বড় কল্যাণকামী। নবী হওয়ার পরই যে তিনি কল্যাণকামী ছিলেন এমনটা নয়; বরং তিনি শিশুকাল থেকেই এই গুণের ধারক ছিলেন। নবুওয়াত লাভের আগেও তিনি অভাবগ্রস্তদের অভাব পূরণ করতেন। লোকদের সহযোগিতা করতেন, তাদের বোঝা বহন করতেন। নবুওয়াত লাভ করে হেরা গুহা থেকে যখন বাড়ি ফিরলেন তখন খাদিজা (রা.) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার কেমন অনুভূত হচ্ছে? রাসুল (সা.) বললেন, আমার মনে হচ্ছে না-জানি এই কারণে আমার মৃত্যু এসে যায়। তখন এ কথা শুনে খাদিজা (রা.) বলেছিলেন, কখনও এটা হতে পারে না। আল্লাহর কসম, তিনি আপনাকে কখনও বিনষ্ট হতে দেবেন না। এ কথার সপক্ষে দলিলও দেন খাদিজা (রা.)। তিনি বলেন, আপনি আত্মীয়তার সম্পর্কে জোড়া লাগান। অর্থাৎ আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখেন। অসহায়দের বোঝা বহন করেন। যাদের কাছে কিছু নেই তাদের রোজগারের ব্যবস্থা করে দেন। আপনি মেহমানদারি করেন। সত্যের পথে আপনি লোকদের সাহায্য করেন। এই গুণগুলো নবী করিম সা.-এর মধ্যে ওই সময়ও ছিল যখন ওহি নাজিল শুরু হয়েছে। অনেক আগে থেকেই তাঁর মধ্যে এই গুণগুলো পাওয়া যেত। তিনি নিজে যেমন কল্যাণকামী ও অনুগ্রহশীল ছিলেন তেমনি অন্যদেরও এর নির্দেশ দিতেন। হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা পৃথিবীবাসীর ওপর অনুগ্রহ কর তাহলে আসমানে যিনি আছেন তিনি তোমাদের ওপর অনুগ্রহ করবেন’ (বুখারি)। আল্লাহ অনুগ্রহশীল, বান্দার মধ্যেও এই গুণটি জাগ্রত করা-এটাই হলো মানবতার শ্রেষ্ঠত্ব। প্রিয়নবী (সা.) সারাজীবন এই মানবতার শিক্ষাই দিয়ে গেছেন। মানুষের কল্যাণের জন্যই ছিল তার সার্বক্ষণিক ভাবনা। এমনকি উম্মতের চিন্তায় তিনি নিজে নিজে তিলে তিলে ক্ষয় করে দিচ্ছিলেন। আল্লাহ তাঁকে সতর্ক করে বলেছেন, এত ভাবনার দরকার নেই। নিজের জীবন পরের জন্য বিলিয়ে দেয়ার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণ রেখে গেছেন রাসুুল (সা.)। তাঁর মহান শিক্ষাও হলো এই জীবন শুধু খাওয়া-পরা আর ভোগ-বিলাসের পেছনে ছুটে ব্যয় করার জন্য নয়। মানুষের জন্য কিছু করা, মানুষের কথা ভাবা, মানবতার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করা এটাই হলো নবীজির শিক্ষা।